৯০ বসন্ত পেরিয়ে প্রথমবার দোল খেলবেন টুকনি দেবী
'এসো হে প্রাণের উৎসবে'। সমস্ত বাঁধ ভেঙে রঙের জোয়ারে ভাসবে বৃন্দাবন। কয়েকশ বছরের রীতি ভেঙে উৎসবে নিজেদের সামিল করবে টুকনি দেবীরা।
বৃন্দাবন : 'এসো হে প্রাণের উৎসবে'। সমস্ত বাঁধ ভেঙে রঙের জোয়ারে ভাসবে বৃন্দাবন। কয়েকশ বছরের রীতি ভেঙে উৎসবে নিজেদের সামিল করবে টুকনি দেবীরা।
বয়স ৯০ বছর। ২৪ বছর বয়সে বিধবা হয়েছেন। গায়ে সাদা বসন, কপালে নেই সিঁদুর। ঘর ছাড়ার আশ্রয় হয়েছে বিধবাশ্রম।
বৃন্দাবনবাসী টুকনি দেবী প্রথম বারের জন্য দোলের উৎসবে নিজেকে রাঙিয়ে তুলবেন।
৬৬ বছরের বিধবা জীবনে নিঃসঙ্গতার সাথে জীবন যাপন করেছেন তিনি। আক্ষেপের সুরে বলছিলেন, "আমাদের সমাজ বিধবাদের সঙ্গে পশুর মত আচরণ করে। স্বামীর মৃত্যুর পর আমাদের সমাজ আমাদেরকে আর পরিবারের সঙ্গে বাসযোগ্য বলে মনে করেন না। স্বামীর মৃত্যুর পর আমি কখনও কোনও উৎসবে নিজেকে সামিল করিনি।"
দোল উৎসব রঙের উৎসব। ভারতের সব মানুষ হোলি উদযাপন করে। তথাকথিত গোঁড়া হিন্দুরা তাদের ধর্মাচরনে হোলি থেকে বিধবাদেরকে বঞ্চিত করে এসেছে। শেষ পর্যন্ত ধর্মান্ধতা কাটিয়ে প্রাণের উৎসবে নিজেদের সামিল করবে তাঁরা।
বৃন্দাবনের পাগল বাবা বিধবাশ্রমে আয়োজিত হবে দোল উৎসব। যেখানে প্রায় ১০০০ বিধবা মহিলা উৎসবে নিজেদের সামিল করবেন, দোল খেলবেন, রঙের আবেগে নিজেদের ভাসাবেন। রঙের সাথে থাকবে আবির, থাকবে ফুলের পাপারি।
বিধবাশ্রমের সব থেকে ছোট সদস্যা অন্নপূর্ণা শর্মার কণ্ঠেও বিষাদের মধ্যে আনন্দ ধারার সুর। ৩৭ বছরের অন্নপূর্ণা বলেন, "বিধবাশ্রমে জীবন কাটানো সবথেকে কষ্টকর। ৩ বছর আগে স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই আমি এখানে। আমার এখনও দীর্ঘ জীবন বাকি। কিন্তু আমি অসহায়। এই দোলের উৎসব আমাক অনেক আনন্দ দেবে। "
"দোল উৎসব আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অনুভূতির মধ্যে একটি। আমি যতদিন এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকব, আমি দোল উৎসবকে মনে রাখব", খুশির আমেজে মন্তব্য করছেন মানু ঘোষ।