ধর্মঘট নিয়ে তাল ঠুকছে দুপক্ষই

ধর্মঘট নিয়ে সরকার ও শ্রমিক সংগঠনগুলির বিরোধ চরমে পৌঁছল। শনিবারও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্মঘটে যোগ না-দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। ধর্মঘটের দিন পরিবহণ ব্যবস্থাকে সচল রাখতে মরিয়া দফতরের মন্ত্রী মদন মিত্র এদিন শহরের অটোচালকদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। শ্রমিক সংগঠনগুলির পাল্টা বক্তব্য, ধর্মঘটের দিন কাজে যোগ না-দিলে কোনওরকম ব্যবস্থা নেওয়ার আইনি অধিকার নেই রাজ্যের। রাজ্য সরকারকে হিংস্র বলেও কটাক্ষ করেছেন।

Updated By: Feb 25, 2012, 07:45 PM IST

ধর্মঘট নিয়ে সরকার ও শ্রমিক সংগঠনগুলির বিরোধ চরমে পৌঁছল। শনিবারও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্মঘটে যোগ না-দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। ধর্মঘটের দিন পরিবহণ ব্যবস্থাকে সচল রাখতে মরিয়া দফতরের মন্ত্রী মদন মিত্র এদিন শহরের অটোচালকদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। শ্রমিক সংগঠনগুলির পাল্টা বক্তব্য, ধর্মঘটের দিন কাজে যোগ না-দিলে কোনওরকম ব্যবস্থা নেওয়ার আইনি অধিকার নেই রাজ্যের। রাজ্য সরকারকে হিংস্র বলেও কটাক্ষ করেছেন।

আঠাশে ফেব্রুয়ারি দেশের ১১টি শ্রমিক সংগঠনের ডাকে সাধারণ ধর্মঘট ব্যার্থ করতে শুক্রবার থেকেই কোমর বেঁধে নেমেছে রাজ্য সরকার। সেদিন রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতর মহাকরণে দাঁড়িয়ে পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র রাষ্ট্রায়াত্ব পরিবহণ সংস্থার কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, বনধের দিন কাজে যোগ না-দিলে তার প্রভাব পড়তে পারে তাঁদের সার্ভিস রেকর্ডে। ছুটি তো মঞ্জুর করা হবেই না, বরং ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুপস্থিত থাকলে সিনিয়রিটি হারাতে পারেন কর্মচারীরা। শনিবারও সেই ধারা অব্যাহত রাখলেন তিনি। এদিন মহাকরণে দাঁড়িয়েই পরিবহণ মন্ত্রী কলকাতার অটোচালকদের হুমকি দিয়ে বলেন, "শহরের সত্তর শতাংশ অটোই বেআইনি। অটো চালকরা ধর্মঘটে অংশ্রহণ করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে রাজ্য সরকার।"

ওদিকে মদনবাবুর এই হুঁশিয়ারিকে ফাঁকা হুমকি বলে কটাক্ষ করেছেন সিআইটিইউ-র রাজ্য সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তী। এদিন শ্যামলবাবু বলেন, "সার্ভিস রুলে সরকারি কর্মচারীদের ধর্মঘট করার অধিকার করেছে। ফলে আইনত তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে না সরকার। ধর্মঘট বানচাল করতে হিংস্র হয়ে উঠেছে রাজ্য সরকার। তাই কর্মচারীদের ভয় দেখাতেই এই সব কথা বলছেন মদনবাবু।" সিপিআই নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত বলেন, "আদালত কোনও ধর্মঘটকে বেআইনি ঘোষণা না-করলে কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না সরকার।"

ধর্মঘটের আহ্বানকারী ১১টি শ্রমিক সংগঠনের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সার্ভিস রুল ১৯৮০ পার্ট ১ অ্যাপেন্ডিক্স ৬ এর ক্লজ ৪ অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়ন করা এবং ধর্মঘটের অধিকার রয়েছে। এমনকি সুপ্রিম কোর্টও শ্রমিকদের ধর্মঘটের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
তবে ধর্মঘটের বিরোধিতায় শনিবারও কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে শ্রম দফতরের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে শ্রমিকদের ধর্মঘট না-করার অনুরোধ করেছেন তিনি।
২৮ ফেব্রুয়ারি গোটা দেশ জুড়ে ধর্মঘট ডেকেছে বাম-ডান ১১টি শ্রমিক সংগঠন। কেন্দ্রের নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে তাদের ধর্মঘট। কিন্তু, উল্লেখযোগ্যভাবে ধর্মঘটের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তবে শ্রমিক সংগঠনগুলির মতে, এতে ধর্মঘটে যোগ দিতে আরও উত্‍সাহিত হবে শ্রমিক-কর্মচারীরা।

.