‘ভগবানের দেওয়া হাত বাদ পড়েছিল, ফিরিয়ে দিলেন যাঁরা তাঁরাও তো ভগবান!’
এসএসকেএম হাসপাতালের এই নজিরবিহীন সাফল্যে যেন দ্বিতীয় জীবন শুরু হল বছর পঁয়ত্রিশের শঙ্কর সাহার।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বেলঘরিয়ার বাসিন্দা শঙ্কর সাহা সরস্বতী প্রেসে কাজ করেন। মঙ্গলবার ভোরে পেপার কাটিং মেশিনে ছাপা সামগ্রীর পেপার কাটিং কাজ করছিলেন শংকর। মুহূর্তের অসাবধানতায় কাটিং মেশিনের দুটি হাতে ঢুকে যায়। পেপার কাটারের ধারালো ব্লেডে মুহুর্তের মধ্যে দুটি হাত হাতের কব্জি থেকে বাকি অংশ কেটে পড়ে যায়। প্রথমে কামারহাটি ইএসআই হাসপাতাল, পরে সেখান থেকেই তাঁকে পাঠানো হয় এসএসকেএম-এ। অস্ত্রোপচারের ৭ দিনের পর থেকেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন শংকর। আঙুলও নাড়াতে পারছেন দিব্যি। তবে আরও বেশ কয়েকদিন শংকরকে পর্যবেক্ষণে রাখতে চাইছেন চিকিৎসকেরা।
এসএসকেএম হাসপাতালের এই নজিরবিহীন সাফল্যে যেন দ্বিতীয় জীবন শুরু হল বছর পঁয়ত্রিশের শঙ্কর সাহার। আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পাববেন জেনে আবেগ আপ্লুত শঙ্কর বলেন, “এক ভগবান আমার হাত দিয়েছিল। দুর্ঘটনায় সেই দুই হাত আমার বাদ পড়ে যায়। চিকিৎসকেরা আমার সেই হাত দুটো আবার ফিরিয়ে দিলেন। তাঁরা আমার কাছে ভগবানের মতো। আমি আন্তরিক ভাবে তাঁদের ধন্যবাদ জানাই।”
আরও পড়ুন: দু-টুকরো দু-হাত, কয়েকঘণ্টায় জোড়া লাগিয়ে নজির SSKM-এর
মঙ্গলবারের সেই দুর্ঘটনার পর শঙ্কর যখন এসএসকেএম-এ পৌঁছান, তখন একটুও দেরি না করে অস্ত্রোপচারের জন্য ১৪ জন চিকিত্সকের একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়। কারণ, ৬ ঘণ্টার মধ্যে কাটা অঙ্গ জোড়া না গেলে গোটা চেষ্টাই ব্যর্থ হয়ে যাবে। শুরু হয় অস্ত্রোপচার। ছিন্ন ভিন্ন ট্যান্ডন, ক্ষতিগ্রস্থ আর্টারি, শিরা-উপশিরা নিপুণভাবে জুড়তে জুড়তে প্রায় ৫ ঘণ্টা পর শেষ হয় অস্ত্রোপচার। এর পর কেটে গিয়েছে আরও দিন সাতেক। এখন দুই হাতের আঙ্গুলও নাড়াতে পারছেন শঙ্কর। ফেরার স্বপ্ন দেখছেন স্বাভাবিক জীবনে।