'তোমাদের চৈতন্য হোক', ভক্তদের জন্য আজ 'কল্পতরু' হয়েছিলেন রামকৃষ্ণ! রইল সেই কাহিনী
ভোর থেকেই ভক্তসমাগম কাশীপুর উদ্যানবাটিতে। দক্ষিণেশ্বর থেকে কামারপুকুর-জয়রামবাটি, সর্বত্র শ্রীরামকৃষ্ণের শরণে ভক্তরা। সকাল থেকে বিশেষ পুজো। ঠাকুরের গান ও মন্ত্রোচ্চারণে মুখরিত উদ্যানবাটি চত্বর। দক্ষিণেশ্বর থেকে কামারপুকুর-। দক্ষিণেশ্বরে সকালে দেবী ভবতারিনীর বিশেষ আরতি। কড়া নিরাপত্তা বেলুড়মঠেও।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কাশীপুর উদ্যানবাটীতে (Udyanbati) আজ কল্পতরু উৎসব। এর সূচনা হয়েছিল ১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি। ভোর থেকেই ভক্তদের ঢল নেমেছে কাশীপুর উদ্যানবাটিতে। গত দু-বছর করোনার কারণে সেখানে পুণ্যার্থীদের সমাগম বন্ধ রাখা হয়েছিল। এ বছর আবার পুরনো নিয়ম মেনেই ঠাকুর দর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে সেখানে। তবে জারি রয়েছে করোনা সতর্কতা। কিন্তু এই কল্পতরু কথাটির অর্থ কি? কোথা থেকে এসেছে ? শ্রীরামকৃষ্ণ তখন দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত। তাঁকে কাশীপুর উদ্যানবাটীতে চিকিৎসার সুবিধার জন্য আনা হয়েছিল। সেই সময় ১ জানুয়ারি একটু সুস্থ বোধ করায় তিনি শিষ্যদের নিয়ে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন।
শিষ্যদের মধ্যে ছিলেন নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষ। ঠাকুর আচমকাই গিরীশচন্দ্রকে জিজ্ঞেসা করলেন, ‘তোমার কী মনে হয়, আমি কে?’ উত্তরে তাঁর ভক্ত বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব ‘মানবকল্যাণের জন্য মর্ত্যে অবর্তীণ ঈশ্বরের অবতার।’ গিরীশ ঘোষের এ মন্তব্যের প্রত্যুত্তর করলেন ঠাকুর। জবাবে শ্রীরামকৃষ্ণ বলেন, ‘আমি আর কী বলব? তোমাদের চৈতন্য হোক।’ তারপর সমাধিস্থ হয়ে উপস্থিত সকল গৃহী ভক্তদের একে একে স্পর্শ করলেন।
সেই থেকে প্রতি বছর ১ জানুয়ারি কল্পতরু উৎসব হয় কাশীপুর উদ্যানবাটি ও দক্ষিণেশ্বরে। এবার শনিবার রাত থেকেই কাশীপুর উদ্যানবাটি থেকে দক্ষিণেশ্বরে ভক্তদের সমাগম। রবিবার সকালে মন্দিরের বাইরে ফুলের ডালা হাতে ভক্তদের লম্বা লাইন চোখে পড়েছে। কল্পতরু উৎসবের দিন পরমহংসদেবের কাছে মন থেকে চাইলে সে ইচ্ছাপূরণ হয়, সেই বিশ্বাস থেকেই সাতসকালে মন্দিরের বাইরে ভক্তের ঢল।
অন্যদিকে, হরিবংশ -পুরাণে এই কল্পতরুর উল্লেখ রয়েছে। সমুদ্র মন্থনকালে অমৃত, লক্ষ্মীদেবী, ঐরাবত, কৌস্তুভ মনি ইত্যাদির সঙ্গে উঠে আসে একটি বৃক্ষ। যা পারিজাত বৃক্ষ নামে পরিচিত।এই পারিজাত বৃক্ষকে-ই কল্পতরু বলা হয়েছে। অর্থাৎ সেই বৃক্ষ, যার কাছে ভালো-খারাপ, যা চাওয়া যায়। তাই ভোর থেকেই ভক্তসমাগম কাশীপুর উদ্যানবাটিতে। দক্ষিণেশ্বর থেকে কামারপুকুর-জয়রামবাটি, সর্বত্র শ্রীরামকৃষ্ণের শরণে ভক্তরা। সকাল থেকে বিশেষ পুজো। ঠাকুরের গান ও মন্ত্রোচ্চারণে মুখরিত উদ্যানবাটি চত্বর। দক্ষিণেশ্বরে সকালে দেবী ভবতারিনীর বিশেষ আরতি। কড়া নিরাপত্তা বেলুড়মঠেও।
আরও পড়ুন, LPG Price in Kolkata: নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই আরও দামী গ্যাস সিলিন্ডার