Mamata Banerjee: 'জনসংযোগ কর্মসূচি'-র মধ্যে দিয়ে তৃণমূল পরিবার গড়ে তুলুন, ৫ মে শুরুর নির্দেশ মমতার
দলের নেতা-কর্মীদের মমতা মনে করিয়ে দেন, ভোটে জিতলাম আর ভুলে গেলাম তা কিন্তু নয়। আজকের যুগে সবসময় সক্রিয় থাকতে হয়
নিজস্ব প্রতিবেদন: মে মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজ্যজুড়ে জনসংযোগ কর্মসূচিতে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে দলের বর্ধিত রাজ্য কমিটির বৈঠকে ওই ঘোষণা করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি এদিনের অনুষ্ঠানে দলের বিধায়কদের বাজেট অধিবেশনে প্রতিদিন হাজির থাকতে নির্দেশ দেন তিনি।
গত বছর ২ মে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়েছিল। সেই দিন থেকেই ওই জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু করার কথা ঘোষণা করেও শেষপর্যন্ত তা ৫ মে করে দেন মমতা। কারণ ২ মে ইদ। আর ৫ মে তৃতীয়বার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। ওই জনসংযোগ কর্মসূচি চলবে ২১ জুলাই পর্যন্ত। মমতা বলেন, ২ মে পবিত্র দিন। ৫ তারিখ আমি শপথ নিয়েছিলাম। ওই দিনই জনসংযোগ যাত্রা শুরু করা হবে।
রাজ্যজুড়ে জনসংযোগ কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, আগামী ২৬ এপ্রিল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হচ্ছে। ওই পরীক্ষা শেষের পর ২ মে আমাদের তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার এক বছর পূর্ণ হবে। ওই দিন থেকে আমি চাই লাগাতার আমার ব্লক প্রেসিডেন্টরা, ছাত্র-যুবরা, এমএলএ-এমপিরা তারা গ্রাম গ্রামে ঘুরবে, ব্লকে ব্লকে যাবে। দরকার হলে খাটিয়ায় শোবে, এলাকায় গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলবে এবং জনসংযোগ করবে। আগামী ২মে থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত জনসংযোগ হবে। তার পর থেকে পুজো পর্যন্ত ফের একটা প্রোগ্রাম করব। এরপর থার্ড ফেজ। শরীর যত নাড়াব তত ভালো থাকবে। যারা শারীরিকভাবে সক্ষম তারা গ্রামে গ্রামে ঘুরে ওই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। আপনাদের কাজ জনসংযোগর মধ্যে দিয়ে তৃণমূল পরিবার তৈরি করা। কারও সমস্যা থাকলে তাদের দুয়ারে সরকার-এ নিয়ে যাওয়া, পাড়ায় সমাধান করে দিতে হবে। বাজেট অধিবেশনে দলের বিদায়কদের হাজিরা নিয়ে মমতা বলেন, বিধানসভায় রোজ এখন আসতে হবে। কারণ এটা বাজেট সেশন। অনেক ভোট হবে। সেখানে হেরে গেলে সরকার হেরে যাবে। এটা মনে রাখতে হবে।
দলের নেতা-কর্মীদের মমতা মনে করিয়ে দেন, ভোটে জিতলাম আর ভুলে গেলাম তা কিন্তু নয়। আজকের যুগে সবসময় সক্রিয় থাকতে হয়। নষ্ট করার মতো সময় হাতে নেই। ২০২৪ সালে যদি বিজেপিকে হঠাতে হয় তাহলে বাংলার ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তুলুন। পঞ্চায়েত ও মিউনিশিপ্য়ালিটিগুলিকে বলছি, আমরা কিন্তু এবার লক্ষ্য রাখব মানুষের কাজ অনলাইনে হচ্ছে কিনা। লোককে পরিষেবা দিতে হবে। কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ এলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মিউনিশিপ্য়ালিটির চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান লবি করে হয় না। কংগ্রেস-বিজেপির কালচারে আমাদের বিশ্বাস নেই।
এদিন রাজ্যে দলের বেশকিছু পদাধিকারীর নাম ঘোষণা করেন মমতা। সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট করা হয়েছে সুব্রত বক্সীকে। এছাড়া ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ রাখা হয়েছে সৌগত রায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্য়ায়, ব্রাত্য বসু, শতাব্দী রায়, দেব, মানস ভুঁইয়া, আব্দুল করিম, ডেরেক ওব্রায়েন, পূর্ণেন্দু বসু, জয়প্রকাশ মজুমদার, জাভেদ খান, মইনুল হাসান, শুভাশিষ বটব্যাল, চূড়মনি মাহাত, তাপস রায়, তপন দাসগুপ্ত, রবি ঘোষ, জাকির হোসেন, রবীন্দ্রনাথ চ্য়াটার্জি, উজ্জ্বল চ্যাটার্জি। সেক্রেটারি জেনারেল পার্থ চ্যাটার্জি। জেনারেল সেক্রেটারি ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস কুণাল ঘোষ, গৌতম দাস, কাকলি ঘোষদস্তিদার, শশী পাঁজা, জোত্স্না মান্ডি, প্রতিমা মণ্ডল, কৃষণ কল্যাণী, সওকত মোল্লা, অর্পিতা ঘোষ, সঞ্জয় বক্সী, রবীন টুডু, পার্থ ভৌমিক, বৈষ্ণানর চ্যাটার্জি, বিবেক গুপ্তা, শান্তিরাম মাহাত, মনরঞ্জন ব্যাপারী। রাজ্যের ৩-৪টি জেলায় দলের পদাধিকারীদের বদল করা হল। উত্তর কলকাতা দেখবেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তমলুকে দলের আধিকারীক বদল করা হয়েছে। চেয়ারম্য়ান হচ্ছেন সৌমেন মহাপাত্র। বনগাঁয় প্রেসিডেন্ট করা হল গোপাল শেঠকে। নদিয়ার দায়িত্বে কল্লোল খান।
আরও পড়ুন-'দলের প্রার্থীকে হারিয়ে নির্দল নিয়ে ঘোরা! সুযোগ এলে দল ক্য়াঁচ করে আপনার নাম কেটে দেবে': মমতা