JU Student Death: বহিরাগত ধরতে গিয়ে মোবাইল চোরের বদনাম! বিস্ফোরক যাদবপুরের হস্টেল সুপার
'আমরা নামেই সুপার। আমাদের কোনও ক্ষমতা নেই। ছাত্রের দাপটে ভয়ে থাকতে হয়। আমরা নিজেরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি।
শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্য়ায়: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর অপমৃত্যুর ঘটনায় বিস্ফোরক মেইন হস্টেলের সুপার তপন কুমার জানা! সুপারের নিশানায় কর্তৃপক্ষ? সুপার তপন কুমার জানার স্পষ্ট বক্তব্য, 'একাধিকবার র্যাগিংয়ের অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কোনওবার ব্যবস্থা নেয় না। কিছু বললেই ছেলেরা ঘেরাও করে রাখে। আসলে সবাই সব কিছু জেনেও কোনও ব্যবস্থা নেয় না।'
সুপারের বিস্ফোরক অভিযোগ, 'ছাত্রের দাপটে ভয়ে থাকতে হয়। বহিরাগত ছাত্র ধরতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হই। হস্টেলে সারা রাত ঘেরাও করে রাখা হয়। মুচলেকা দিতে হয় ছাত্রদের মোবাইল চুরি করতে উঠেছিলাম।' সুপার বলেন, 'যতবারই র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে, তদন্ত হয়েছে, টুকটাক ধরা পড়েছে যে ওদেরকে ফুল প্যান্ট পরতে বলা হয়, চুল ছোট করে কাটতে বলা হয়। কর্তৃপক্ষ ব্যাপারটা সবই জানে।' এমনকি তারা নিজেরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন বলে জানিয়েছেন সুপার। তাঁর কথায়, 'আমরা কনট্রাকচুয়াল। আমরা নামেই সুপার। আমাদের কোনও ক্ষমতা নেই। ৬০০ ছেলের মাঝে ২টো পরিবারকে রেখে দিয়েছে। আমরা নিজেরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি। যখন তখন, কিছু হলেই আমাদেরকে ঘিরে ধরে ছেলেরা। এই ঘটনার পরেও রাত ২টো পর্যন্ত ঘেরাও করে আটকে রাখে!'
সুপার জানিয়েছেন, 'আমি ঘটনার পরে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি, ছেলেটা পড়ে রয়েছে। কোমরে গামছা চাপানো রয়েছে। মাথায়-পায়ে রক্ত। সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্স ও ট্যাক্সি ডাকা হয়। ট্যাক্সি আগে আসায়, ট্যাক্সিতে ওকে তুলে দিই। আমি পিছন পিছন সাইকেল নিয়ে কেপিসি হাসপাতালে যাই।' তবে সেদিন রাতে ডিন ফোন করার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে তখন তিনি কিছু দেখতে পাননি বা কোনও আওয়াজ তখন পাননি বলে জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, স্বপ্নদীপের মৃত্যুর পর থেকে একাধিকবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে সুপারের ভূমিকা। তারই জবাব দিতে গিয়ে এদিন জি ২৪ ঘণ্টায় বিস্ফোরক হস্টেল সুপার।
স্বপ্নদীপের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩০২ (খুন) ও ৩৪ (কমন ইনটেনশন), এই দুই ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এখন এই ২ ধারার পাশাপাশি, এবার রুজু হতে পারে পকসো আইনে মামলাও!কারণ স্বপ্নদীপের বয়স এখনও আঠেরো হয়নি। তার বয়স ১৭ বছর ১ মাস, সে নাবালক। ওদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনায় বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে ইউজিসি-ও। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছে ইউজিসি-র প্রতিনিধি দল। এই ঘটনায় তৎপর হয়েছে শিশু সুরক্ষা কমিশনও। বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল ঘুরে দেখেছেন শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান সুদেষ্ণা রায়। সঙ্গে ছিলেন উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী চট্টোপাধ্যায়। রানাঘাটে স্বপ্নদীপের মামাবাড়িতে গিয়েও বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন অনন্যা চক্রবর্তী চট্টোপাধ্যায়। শিশু সুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টার স্পষ্ট বক্তব্য, 'এটা অমার্জনীয়, কোনও মার্জনা হয় না।'
আরও পড়ুন, Ragging | Kolkata High Court: বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং ইস্যুতে মামলা গড়াল হাইকোর্টে!