কংগ্রেস ডুবন্ত 'টাইটানিক', বিজেপিকে ঠেকাতে বাংলা কি বিহার হবে?
শেষ উপনির্বাচনে কংগ্রেসের ভোট কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২ শতাংশ। এই দুর্দিনের বাজারে ফের দল ছাড়তে শুরু করেছেন নেতা কর্মীরা। কেউ যাচ্ছেন তৃণমূলে । কারওর ডেস্টিনেশন বিজেপি। তাহলে কী সত্যি এবার কংগ্রেসের টাইটানিক ডুবছে?
ওয়েব ডেস্ক: শেষ উপনির্বাচনে কংগ্রেসের ভোট কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২ শতাংশ। এই দুর্দিনের বাজারে ফের দল ছাড়তে শুরু করেছেন নেতা কর্মীরা। কেউ যাচ্ছেন তৃণমূলে । কারওর ডেস্টিনেশন বিজেপি। তাহলে কী সত্যি এবার কংগ্রেসের টাইটানিক ডুবছে?
ডুবন্ত কংগ্রেস। মাঝ সমুদ্রে টাইটানিক ডুবছে। প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া ঝাঁপ। লাইফ জ্যাকেট আঁকড়ে ধরে কোনও ভাবে বাঁচার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। একসময়ের ৪১ শতাংশের ভোট ব্যাঙ্ক নেমে এসেছে মাত্র ২ শতাংশে। দল ছাড়ছেন শঙ্কর সিং। শুধু একা শঙ্কর সিং নয়। তালিকাটা অনেক বড়। দল ছেড়েছেন হুমায়ুন , জয়প্রকাশ মজুমদার, প্রদীপ ঘোষ, মালা রায়। কংগ্রেসের সুদিনে দল ছাড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য রাজনীতিতে তৈরি হল নতুন সমীকরণ। শঙ্কর সিং অধীর চৌধুরীরা থেকে গেলেন কংগ্রেসেই। সোমেন মিত্রের পাশে। তারপর নানা ঘাত-প্রতিঘাত।
দিল্লির নির্দেশে বার বার এরাজ্যে মমতার সঙ্গে হাত ধরাধরি। আর তার ফল ভোগ করতে হয়েছে শঙ্কর সিংয়ের মতো বহু নেতাকে। নিজের আসনে দাঁড়াতে পারেনি তাঁরা। কিন্তু শঙ্কর সিং, দীপা দাশমুন্সীরা হয়ে উঠেছেন মমতা বিরোধী মুখ।
হঠাত্ই ছন্দপতন। প্রদেশ সভাপতির আসনে অধীর চৌধুরী বসতেই শুরু তীব্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তারপর থেকেই কংগ্রেসে ঘর ছাড়ার হিড়িক।
কেন কংগ্রেসে ভাঙন?
আঙুল উঠছে অধীর চৌধুরীর দিকে। কিন্তু, শুধুই কি তাই? সে কারণেই দল ছাড়লেন মালা রায়? নাকি কাউন্সিলরের অঙ্কটা রয়েছে পিছনে? কারণ যাই হোক না কেন, কংগ্রেস ডুবছে। কেউ তৃণমূলে কেউ বিজেপির দিকে। তবুও, ডুবন্ত কংগ্রেসের মাস্তুলে দাঁড়িয়ে কেউ কেউ।
পেশায় আইনজীবী হলেও অরুণাভ মিশ্র আদতে ডুবন্ত টাইটানিকের ক্যাপ্টেন । তাঁর সাফ কথা,'কংগ্রেস ছাড়ছি না'। শুধু অরুণাভ মিশ্র অথবা সন্তোষ পাঠকরাই নন, দুর্দিনেও কারা কংগ্রসে সেই তালিকাটা হাতড়ে বেড়াচ্ছেন অধীর চৌধুরীরা।
শুধুই কী দলে ভাঙন? নাকি এই ভাঙার খেলায় লুকিয়ে আছে আগামী দিনের কংগ্রেস রাজনীতির নতুন সমীকরণ ? কংগ্রেস আর তৃণমূলের মধ্যে দলবদলের পিছনে এই সম্ভাবনাটাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকে। তাঁদের মতে, এই ভাঙা গড়ার খেলা থেকেই তৈরি হতে পারে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির নতুন কেন্দ্র।
এমনিতে এরাজ্যে কংগ্রেস ক্ষয়িষ্ণু। তার ওপর এবার শুরু হয়েছে দল ছাড়ার ধুম। দলত্যাগীদের বেশিরভাগই যাচ্ছেন তৃণমূলে। দুই দশক আগে কংগ্রেস ছেড়ে যে দল তৈরি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাঝে বার কয়েক দুই দল হাত ধরলেও ফের সম্পর্ক তিক্ত হতে দেরি হয়েনি। তবুও কখনই এই দুই দলের মধ্যে দল বদলের ধারা থামেনি।তবে এবারে কংগ্রেসে দলত্যাগটা শুরু হয়েছে দলের চরম বিপর্যয়ের সময়ে। গোটা দেশেই কংগ্রেসের অস্তিত্ব বিজেপির চ্যালেঞ্জের মুখে।
মোদী ঝড় যে ভারতের রাজনীতির সমীকরণটা পাল্টে দিয়েছে, বিহারে রাজনীতির দিকে তাকিয়েই তা টের পাওয়া গিয়েছে। সামনে শত্রু বিজেপি। তাই গেরুয়া রথ ঠেকাতে দীর্ঘ দিনের শত্রুতা ভুলে হাত মিলিয়েছেন লালু-নীতীশ। পুরনো সমাজবাদী পরিবারের দুই ভাইয়ের হাত মেলানোর সেই প্রক্রিয়াটা চলেছে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে। মাঝে দেখা গিয়েছে বার বার দুই নেতার অনুগামীদের মধ্যে দল বদলের ঢল।
এরাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের তৃণমূলে যাওয়ার মধ্যেও তাই সেই ভাঙা-গড়ার খেলারই মিল পাচ্ছেন অনেকে। তাদের মতে নীচের স্তরে দলবদলের শুরু দিয়েই হাত ধরার পরিবেশ তৈরি হয়েছিল বিহারে। এরাজ্যেও কংগ্রেসে-তৃণমূলে যাতায়াত তাই আগামী দিনে বিজেপি বিরোধী নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত হতে পারে।