রাজীব দাস হত্যা মামলার রায়ে ফের প্রশ্নের মুখে মৃত্যুদণ্ড
আবার একটা হত্যা মামলার রায়। আবারও আসামির মৃত্যুদণ্ড দাবি। রাজীব হত্যা মামলায় দোষীদের ফাঁসি চেয়ে সরব নিহতের পরিবার। এর জেরে ফের স্পটলাইটে উঠে আসছে বহু পুরনো বিতর্ক। মৃত্যুদণ্ড থাকা উচিত? নাকি উচিত নয়?
দিদিকে আনতে গিয়ে ঘরে ফেরেনি ভাই। দোষীদের মৃত্যুদণ্ডে ছেলে হারানোর সেই ক্ষতকষ্ট ভুলতে চান মা।
সাম্প্রতিক ঘটনাবলী থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার। শুধু রাজীবের মা নন। বিভিন্ন অপরাধের ঘটনা, বিশেষ করে ধর্ষণ ও গণধর্ষণ করে খুনের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড চাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
একপক্ষের মত, অপরাধ বন্ধ করতে অপরাধীকে নিকেশ করে দিতে হবে।
আর এক পক্ষের বক্তব্য, অপরাধীকে নয়। শেষ করা হোক অপরাধকে।
এই দুইয়ের দ্বন্দ্ব বহু পুরনো। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য বলছে, বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশ দেশ ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট বা মৃত্যুদণ্ডের রাস্তা থেকে সরে এসেছে।
১৯৭৬ সাল থেকে যে কোনও ধরনের অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড আইন তুলে দিয়েছে ৯৮টি দেশ
সাধারণ অপরাধের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড তুলে দিয়েছে ৭টি দেশ
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা বন্ধ রেখেছে ৩৫টি দেশ
ভারতীয় বিচার ব্যবস্থায় বিরলের মধ্যে বিরল অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। একটা সময় রাষ্ট্র সংঘে মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে সওয়ালও করেছিল ভারত।
হেতাল পারেখ হত্যাকাণ্ডে ধনঞ্জয়ের ফাঁসি
মুম্বই হামলায় কসাভের ফাঁসি
সংসদ হামলায় আফজল গুরুর ফাঁসি
গত কয়েক দশকে এরকম কয়েকটি প্রাণদণ্ডের সাক্ষী থেকেছে দেশ। কিন্তু অপরাধ নির্মূল হয়নি। দিল্লিতে নৃশংস নির্ভয়া কাণ্ডের পর দোষীদের ফাঁসির দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে। সময়ের নিয়ম মেনে সেই ঢেউ শান্ত হয়েছে। কিন্তু নৃশংসতা কমেনি। রোহতকের সাম্প্রতিক গণধর্ষণের ঘটনাই তার প্রমাণ। যেখানে নির্যাতিতার যৌনাঙ্গ থেকে উদ্ধার হয়েছে বড় পাথর আর রডের টুকরো। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে, অপরাধীকে প্রাণদণ্ড দিয়েও যদি অপরাধ অক্ষত থেকে যায়, তাহলে সঠিক বিচার কী?