ফ্রিজারে দেহ, 'মাকে বাঁচিয়েই হত যুগান্তকারী আবিষ্কার', বেহালায় ছেলের 'হাড়হিম' কীর্তি!

পুলিসি জেরায় শুভব্রতর দাবি, "মা-কে খুব ভালোবাসতাম। তাঁকে বাঁচিয়ে রাখতে যুগান্তকারী একটা আবিষ্কার করতে চেয়েছিলাম।"

Updated By: Apr 6, 2018, 04:20 PM IST
ফ্রিজারে দেহ, 'মাকে বাঁচিয়েই হত যুগান্তকারী আবিষ্কার', বেহালায় ছেলের 'হাড়হিম' কীর্তি!
ক্রায়ো প্রিজারভেশন পদ্ধতি

নিজস্ব প্রতিবেদন: বেহালায় ফ্রিজার থেকে দেহ উদ্ধারের ঘটনায় নয়া মোড়। ধৃত ছেলে শুভব্রত মজুমদারকে জেরায় তাজ্জব গোয়েন্দারা। পুলিস জানিয়েছে, ক্রায়ো প্রিজারভেশন পদ্ধতিতেই তিন বছর ধরে মায়ের দেহ সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন শুভব্রত।

কী এই ক্রায়ো প্রিজারভেশন?
রাসায়নিক প্রয়োগে মৃতদেহ সংরক্ষণের প্রক্রিয়াকে বলা হয় ক্রায়ো প্রিজারভেশন। উল্লেখ্য, সত্তরের দশকে এই পদ্ধতিতে দেহ সংরক্ষণ নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয় রাশিয়াতে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিসের অনুমান, মৃতদেহ সংরক্ষণ নিয়ে ঢালাও পড়াশোনা করেছিলেন শুভব্রত। তারপরই পাকা হাতে কাজ সারেন তিনি।

বেহালার জেমস লং সরণির বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর বইপত্র। যার বেশিরভাগই রুশ ভাষায় লেখা অ্যানাটমি ও সংরক্ষণ সংক্রান্ত। পুলিসের দাবি, দেহ সংরক্ষণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জনের জন্য রুশ ভাষা পর্যন্ত শিখেছিলেন শুভব্রত। মেধাবী ও বু্ধিদীপ্ত শুভব্রত অত্যন্ত সুচারুভাবেই নিজের পরিকল্পনা সফল করতে সমর্থ হয়েছিলেন।

আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোটের আগে হঠাত্ বুদ্ধদেবের বাড়িতে মমতা

অন্যদিকে, মা বীণা মজুমদারের মৃত্যুর পরেও কীভাবে তাঁর লাইফ সার্টিফিকেট জমা দেওয়া হত? কীভাবে ওই বৃদ্ধার মৃত্যুর পরেও তাঁর পেনশন অ্যাকাউন্ট চালু রইল? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কেরও কারোর যোগসাজশ রয়েছে কিনা, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। জেরা করা হবে ব্যাঙ্ক কর্মীদেরও।

পাশাপাশি, অভিযুক্ত শুভব্রতকে মনোবিদের সামনে বসিয়ে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। পুলিস জানিয়েছে, তাঁর কথায় অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। পুলিসি জেরায় শুভব্রতর দাবি, "মা-কে খুব ভালোবাসতাম। তাঁকে বাঁচিয়ে রাখতে যুগান্তকারী একটা আবিষ্কার করতে চেয়েছিলাম।"

আরও পড়ুন, রাতের কলকাতায় গণধর্ষণের শিকার কিশোরী, গ্রেফতার ৩

এফসিআই-এর কর্মী ছিলেন মা বীণা মজুমদার। তাঁর মৃত্যুর পর তিন বছর ধরে বাড়ির ভিতর ফ্রিজারে দেহ সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন ছেলে শুভব্রত। যাতে পচন না ধরে, যাতে কোনও কটূ গন্ধ না বেরয়, সেজন্য দেহের বুক থেকে পেট পর্যন্ত চিরে রাসায়নিক প্রয়োগ করতেন শুভব্রত। জানলার পর্দার ফাঁক দিয়ে সে দৃশ্য দেখতে পেয়েই পুলিসে খবর দেন প্রতিবেশী। আর তাতেই পর্দাফাঁস হয় ছেলের 'হাড়হিম' করা কীর্তির।

.