জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সোমবার বিধাসভায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী মোশন আনতে চলেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এই প্রশ্তাব আনতে চলেছেন শাসকদলের বিধায়ক সত্যজিৎ বর্মণ। এই প্রস্তাবের বিষয়ে দুই ঘণ্টা আলোচনা হবে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি জানা গিয়েছে যে এই আলোচনায় বক্তব্য রাখতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সাম্প্রতিককালে দেখা গিয়েছে যে বিজেপি এবং বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের বিজেপি-র বেশ কিছু নেতা বঙ্গভঙ্গের কথা বলেছেন। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গকে ভাগ করার কথা বলেছেন। পাশপাশি এই নিয়ে দ্বিমত রয়েছে বিজেপি-র অন্দরেও। পাশাপাশি গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সহ উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু নেতা দাবি করেছেন সেখানে কিছু অংশকে নিয়ে নতুন রাজ্য গঠন করতে হবে। একইসঙ্গে জঙ্গলমহল এবং কোচবিহার ভাগেরও দাবি উঠেছে। বিভিন্ন সময়ে এই নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতেও দেখা গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে শাসকদল বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাব আনতে চলেছে। এখানে শাসকদলের অবস্থান স্পষ্ট। তাঁরা বলছেন বাংলাকে ভাগ হতে দেওয়া হবে না। উত্তরবঙ্গের মাটিতে দাঁড়িয়ে এই কথা স্পষ্ট বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। অন্যদিকে বিধানসভার অন্দরে বিজেপি-র অবস্থান কী হবে সেই দিকে নজর রয়েছে। কারণ তাঁদের নিজেদের মধ্যেই দ্বিমত রয়েছে এই বিষয়ে।
পাশাপাশি বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাব কে কটাক্ষ করেছে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, ‘বঙ্গভঙ্গ আটকেছে কারা? কংগ্রেস, সিপিএম তো মেনে নিয়েছিল। এদের বাপ ঠাকুর্দা তো তারাই। তৃণমূল ছিল কোথায়? কংগ্রেসের গর্ভে ছিল। এখন গল্প করে মানুষকে বোকা বানাচ্ছে। ওরা প্রস্তাব নিলেই বা কি যায় আসে? বিধানসভায় কোনও কাজ নেই। সভা চালাবার জন্য এই সব করছে’।
আরও পড়ুন: 'শহীদ স্মারক'-র বুকে অগাছা, কচি পাতায় মুখ ঢেকেছে 'ভাষা'...
তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘দিলীপ বাবুর রজনৈতিক মতাদর্শের যে গুরু সাভারকর, তিনি তো ১৯২০-২১ সালে প্রথম বলেছিলেন যে ভারত ভাগ হওয়া দরকার। তারপরে তো জিন্না এসেছিলেন। সাভারকর তো প্রথম বলেছিলেন। দিলীপ বাবু হয়তো পড়াশুনা করেননি তাই এগুলো জানেন না। অন্যদিকে এখনকার সময় আবার বঙ্গভঙ্গের কথা তাঁর দলের লোকরাই বলছে। আদের চুপ করাতে পারছেন না কেন? নিয়মিতভাবে উত্তরবঙ্গকে আলাদা করে দিতে হবে ইত্যাদি তো ওনার এমএলএ, ওনার দলনেতারাই বারবার বলছেন। তাঁদের তো আটকাতে পারছেন না’।
আরও পড়ুন: SSC Scam, Tapas Mandal: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার তাপস মণ্ডল
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ বঙ্গভঙ্গ আবার চায় না। বিজেপি-র যে ষড়যন্ত্র চলছে বাংলা ভাগ করার সেটা আমরা জানি। এবং তাঁর জন্য আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে। বাংলার মানুষকে প্রস্তুত থাকতে হবে। এরা যদি আন্দোলনকে কেন্দ্রীয় সাহায্য নিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় তাহলে বাংলার মানুষ আমাদের জিজ্ঞেস করবে আপনারা কী করলেন? তাঁর কারণ এর আগে আমরা দেখেছি যে পাহাড়ে বার বার বিজেপি- সাংসদ হয়েছে আর সেই সময় যারা তাঁকে সমর্থন করেছে তাঁরা বার বারই আলাদা গোর্খাল্যান্ড চেয়েছে। সুতরাং দিলীপ বাবুর উচিত তাঁর দলের অবস্থান পরিষ্কার করা’।
অন্যদিকে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বিনিয় তামাং, অজয় এডওয়ার্ড সহ অন্যান্য নেতারা। তাঁরা জানিয়েছেন এই প্রস্তাব পাশ হলে এই বরিধিতা করবেন তাঁরা। যদিও এই হুমকিকে পাত্তা দিতে নারাজ শাসকদল।
সোমবার বঙ্গভঙ্গ বিরোধী বিল বিধানসভায়, আলোচনায় অংশ নিতে পারেন মমতা-শুভেন্দু