করোনা আতঙ্কে মাছেই ভরসা বাঙালির! এই বিষয়গুলি দেখে না কিনলেই বাড়বে এই মারণ রোগের ঝুঁকি
আসুন এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ অরিত্র খাঁ-এর মতামত জেনে নেওয়া যাক...
সুদীপ দে: করোনা আতঙ্কের জেরে ব্রয়লারের চিকেন খাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। ফলে কিছুটা হলেও বিক্রি আর দাম বেড়েছে পাঁঠার মাংসের। পাঁঠার মাংসের দাম নাগাল ছাড়াতেই হুড়মুড়িয়ে মাছের দিকে ঝুঁকেছে আম জনতা। চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়ে চলেছে মাছের দামও। বাড়ন্ত চাহিদার সুযোগে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী রাসায়নিকে সংরক্ষণ করা মাছও বিক্রি করে দিচ্ছেন। রাসায়নিকের প্রভাবে ক্ষতির আশঙ্কাই বাড়ছে দিনের পর দিন। বিশেষজ্ঞদের দাবি, মাছ, মাংস দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার জন্য যে সব রাসায়নিকের ব্যবহার করা হয়, সেগুলির প্রভাবে ক্যান্সারের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।
পুষ্টিবিদ অরিত্র খাঁ জানান, বছরের এই সময়টা আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে ঘরে ঘরেই নানা অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকে। সর্দি-কাশি, জ্বর ঘরে ঘরে লেগেই থাকে। যেহেতু করোনাভাইরাসের উপসর্গগুলিও মোটামুটি একই রকম, তাই আতঙ্ক আর গুজব লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আর এই আতঙ্ককেই কাজে লাগাচ্ছেন একদল অসাধু ব্যবসায়ী। ফলে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ফেস মাস্ক আর মাছ, মাংসের দাম। দাম দিয়ে মাছ কিনেও রাসায়নিকে সংরক্ষণ করা মাছ থেকে ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই বাজার থেকে মাছ কেনার আগে কতগুলি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। আসুন এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ অরিত্র খাঁ-এর মতামত জেনে নেওয়া যাক...
১) মাছ কেনার আগে সেটিকে ধরে দেখুন। মাছ ধরে যদি শক্ত বলে মনে হয় তাহলে বুঝতে হবে সেটা বহুদিন রাসায়নিকে সংরক্ষণ করে রাখা ছিল। আর মাছের খুব শরীর নরম হলেও বুঝতে হবে যে, মাছটা মোটেই টাটকা নয়। তাই মাছ কেনার আগে ভাল করে দেখে কিনুন।
২) অনেককেই বাজারে মাছের কানকো দেখে তবেই মাছ কেনেন। এই কৌশলে মাছ কিনতে গেলেও এখন ঠকে যেতে পারেন। কারণ, মাছের কানকো টকটকে গাঢ় লাল মালেই সে মাছ টাটকা— এমনটাই ধরণা করা হয়। বর্তমানে অনেক মাছ বিক্রেতাই মাছের কানকোয় রং দিয়ে রাখেন টাটকা দেখানোর জন্য। তাহলে টাটকা মাছ চেনার উপায়? টাটকা মাছের কানকোতে স্লাইম বা পিচ্ছিল ভাব থাকে। মাছ কেনার আগে তাই সেটা অবশ্যই দেখে নেবেন।
৩) চিংড়ি মাছ কেনার ক্ষেত্রে যদি চিংড়ির খোসা শক্ত আর মুচমুচে (ক্রিসপি) থাকে তাহলে বুঝবেন মাছটি তাজা। যদি দেখেন চিংড়ির খোসা নরম, তাহলে বুঝতে হবে মাছটি একেবারেই টাটকা নয়।
৪) টাটকা মাছে একটা চকচকে ভাব থাকবে। মাছে ফরমালিন দেওয়া থাকলেও মাছ যতই বাসি হতে থাকে তার চকচকে ভাব ততই কমতে থাকে। তাছাড়া বাসি মাছের আঁশ অবিন্যস্ত হয়ে পড়ে। মাছ টাটকা হলে তার আঁশগুলিও সমান ভাবে বিন্যস্ত থাকে। তাই সব সময় ঝকঝকে দেখেই মাছ কিনুন।
আরও পড়ুন: আমিষ খাবার খেলে কি বেড়ে যায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি?
৫) মাছে গায়ে মাছি বসবে, বা মাছি ভনভন করবে— এটাই স্বাভাবিক। মাছে ফরমালিন দেওয়া থাকলে তার আশেপাশে মাছি থাকবে না বা খুবই কম থাকবে। মাছ কেনার আগে বিষয়টি লক্ষ্য রাখুন।
৬) এই সময় জিওল মাছ বা জ্যান্ত মাছ কেনাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। পাত্রের মধ্যে নড়াচড়া করছে, এমন মাছই কিনুন।
৭) মাছের গায়ে চড়া আঁশটে গন্ধ থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু রাসায়নিক ব্যবহার করে সংরক্ষিত মাছের ক্ষেত্রে এই স্বাভাবিক কটূ গন্ধটাই থাকে না। তাই কেনার আগে খেয়াল করবেন।