তথাগতর 'অপেক্ষা'য় রবীন্দ্র যুগের নায়িকা প্রিয়াঙ্কা
রণিতা গোস্বামী
রণিতা গোস্বামী
কখনও খোলা চুল, কখনও আবার ধরা দিয়েছেন আলতো খোপায়, কিংবা সদ্য স্নান সেরে বেরিয়ে ছাদে কাপড় মেলতে ব্যস্ত গল্পের নায়িকা। সকাল থেকে সন্ধে প্রতি কাজের মাঝেই তাঁর চোখে ধরা পড়ল এক অধীর 'অপেক্ষা'। কার জন্য অপেক্ষারত তিনি? ফ্যাশান ফটোগ্রাফার তথাগত ঘোষের ক্যামেরার লেন্সে এভাবেই ধরা পড়লেন অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা সরকার। যেখানে রাবীন্দ্রিক যুগের কোনও এক কাল্পনিক নায়িকার বেশে ধরা পড়লেন অভিনেত্রী। ছবিতে ফুটে উঠল কোনও এক নারীর সারাদিনের গল্প।
কলকাতার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ কালচারাল রিলেশনস সভাগৃহের নন্দলাল বসু গ্যালারিতে গত তিনদিন ধরে চলা চিত্র প্রদর্শনীতে এ যে এক অন্য প্রিয়াঙ্কা। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে আরও অনেক তারকাই হাজির ছিলেন তথাগত ঘোষের এই ফটোস্টোরি অ্যাওয়েটিং দেখতে।
তথাগতর এই ফটো স্টোরি 'অ্যাওয়েটিং' নিয়ে প্রিয়াঙ্কাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, '' এই পুরো কনসেপ্টটা তথাগতর। এর আগে ও (তথাগত) ফ্যাশান ফটোগ্রাফির উপর প্রদর্শনী করছে, তবে মাঝের দুবছর সেটা হয়নি। তবে এবছর অন্যরকম কিছু করতে চাইছিল। আমার সঙ্গে কথা বলে তথাগত ঠিক করলো ও একটা স্টোরির উপর প্রদর্শনী করবে। সেখান থেকেই এই স্টোরিটা উঠে আসে। এই কাজে আমাদের স্টাইলিশ ঐন্দ্রিলা বসু ও মেকআপে অভিজিৎ চন্দ, এছাড়া অনর্ঘ্য চৌধুরী সহ অনেকেরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই চরিত্রটা ফুটিয়ে তুলতে রবি ঠাকুরের গল্পের নায়িকাদের একটা এসেন্স আনা হয়েছে। যদিও এটা কোন চরিত্র, কোন গল্পের নায়িকা এসব কোনও কিছুই আমরা উল্লেখ করছি না। শুধু ওই টাইম পিরিয়ডটা রেখেছি। বনেদি বাড়ির সেই নারী চরিত্রটা ধরেই তাঁর সারাদিনের গল্পটা ফুটে উঠেছে। তবে সাধারণত ফ্যাশান ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে আমরা খুব পরিপাটি হয়ে সেজে উঠি। তবে এখানে খুব ক্যাজুয়াল লুকটা তুলে ধরা হয়েছে। যেমন কোথাও এলো চুল, অগোছালো বেশটাও ফুটে উঠেছে। সেভাবেই মেকআপ ও ড্রেস করা হয়েছে। গত এক দেড়মাস ধরে এই শ্যুটটার জন্য আমরা তৈরি হচ্ছিলাম, তাই খুব একটা সমস্যা হয়নি এটা করতে। আর তথাগতর ইচ্ছা ছিল পুরো সিরিজটাই মনোক্রমে করবে। তো সেভাবেই করা হয়েছে।''
তথা ফটোগ্রাফার ঘোষের কথায়, '' এই ফটোগ্রাফিটার মধ্যে একটা স্টোরি রয়েছে। তবে আমাদের কাছে এটা একটু কঠিন ছিল, কারণ এর আগে এধরনে কোনও কিছুর হওয়ার উদাহরণ ছিল না। তাই যেহেতু এটা ফার্স্ট টাইম হচ্ছে তাই যেমন এক্সাইটেড ছিলাম, তেমন টেনশনেও ছিলাম। কতটা মানুষ এটাকে পছন্দ করবে সেটা নিয়ে চিন্তা তো ছিলই। চলমান দৃশ্যে যেভাবে গল্প বলা যায়, স্টিলের ক্ষেত্রে এটা একটু কঠিন। আর যেহেতু আমরা এটা ফ্যাশানের উপর করছি, তাই প্রতিটি ফ্রেমে সেই ফ্যাশান এলিমেন্টটাও রাখতে হয়েছে। আর মনোক্রমে বিভিন্ন অভিব্যক্তিকে ফুটিয়ে তোলা চ্যালেঞ্জিং তো ছিলই। মেকআপ, স্টাইলিং, কনট্রাস্ট ও এক্সপ্রেশনে মাধ্যমেই পুরোটা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এখানে অভিজিৎ চন্দ্র, ঐন্দ্রিলা বসুর একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। প্রিয়াঙ্কাও প্রথম থেকে খুব সহযোগিতা করেছে। সকলের এটা ভীষণ ভালো লেগেছে এর জন্য খুব ভালো লাগছে। বেশকিছু সাবজেক্ট মাথায় রয়েছে। এর পরেও এধরনের কাজ করতে তাই। বুম্বা দার (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) খুব ভালো লেগেছে। ওনার সঙ্গেও এধরনের একটা কাজ করতে চাই বলে জানিয়েছি, উনি রাজি হয়েছেন। এটা আমাদের কাছে বিশাল বড় পাওনা।''
প্রসঙ্গত, খুব শীঘ্রই পরিচালক বিরসা দাশগুপ্তে 'বিবাহ অভিযান' ও মৈনার ভৌমিকের 'বর্ণপরিচয়' ছবিতে দেখা যাবে প্রিয়াঙ্কা সরকারকে।