সৃজিতের সঙ্গে থাকতে ভারতীয় নাগরিকত্ব নেবেন? মিথিলা বললেন...
শুধু এটুকুই বলব, ধর্মের ভিত্তিতে কিছুই হওয়া ঠিক নয়...
রণিতা গোস্বামী: (শেষ পর্ব...)
আগে কখনও কলকাতায় আসেননি, তবুও ভাগ্য তাঁকে শেষপর্যন্ত কলকাতাতেই নিয়ে এসে ছাড়লো। নিজের মনের মানুষকেও খুঁজে পেলেন এই কলকাতাতেই। পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিয়েটাও সেরে ফেলেছেন। কিন্তু কীভাবে সবকিছু ঘটল? এদেশে এসে কি পাকাপাকি ভাবে থাকার কথা ভাবছেন? এই সমস্ত নানা কথা, নিজের ভাবনা Zee ২৪ ঘণ্টা ডট কমের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তথা গায়িকা রাফিয়াত রশিদ মিথিলা।
শুনেছি, আগে তোমার কখনও সেভাবে কলকাতায় আসা হয়নি, প্রথমবার কলকাতায় এসে নিজের মনের মানুষ খুঁজে পেলে। এই ব্যপারটা ঠিক কেমন?
মিথিলা- (হাসি) হ্যাঁ, এটা এক্কেবারেই দৈব ঘটনা বলতে পারো। এর আগে আমি কলকাতায় কেন, ভারতের কোথাও যায়নি। যদিও আমার পরিবারের লোকজনের এদেশে যাতায়াত ছিল। বেশকিছুদিন আগে প্রথমবার আমি এদেশে আসি। তখন রাজস্থান বেড়াতে গিয়েছিলাম, সেটা পরিবারের সঙ্গেই। কলকাতায় আসা অর্ণবের (সঙ্গীতশিল্পী শায়ান চৌধুরী অর্ণব) জন্যই। অর্ণব আমার ফুফাতো ভাই, তোমরা কী বলো বেশ? (প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে)
পিসতুতো ভাই।
মিথিলা- ও আচ্ছা (হাসি)। অর্ণব, সাহানা (সাহানা বাজপেয়ী) আমার আত্মীয়। তবে সৃজিতের সঙ্গে আমার আলাপ প্রথমে ফেসবুক, তারপর হোয়াটসঅ্যাপে। অর্ণবের সঙ্গে যে কাজটা করেছিলাম, সেটা সৃজিতের সঙ্গে আলাপ হওয়ার অনেক পরে।
কলকাতায় এসে থাকতে চাইবে না?
মিথিলা- হ্যাঁ, চাই তো (হাসি)। আমার আর সৃজিতের একসঙ্গে থাকার পরিকল্পনা রয়েছে। এবার দেখা যাক...
তুমি কি এদেশের নাগরিকত্ব নিতে চাইবে?
মিথিলা- এটা খুবই জটিল একটা বিষয়। তাই এখনই ভাবতে চাই না। ১১/১২ বছর সময় লেগে যাবে হয়ত। অনেক আইনি জটিলতা। ভবিষ্যতে দেখা যাবে। তাছাড়া নাগরিকত্ব আদৌ বদলাবো কিনা সিদ্ধান্তও নিইনি। আপাতত ঠিকভাবে ভিসা পেলেই হবে। (হাসি)
তোমার মেয়ে আইরাকে নিয়ে তোমার একটা বক্তব্য বেশকিছুদিন ধরে আলোচনায় উঠে আসছে। ও তোমার কাছেই থাকছে তো?
মিথিলা- হ্যাঁ, ও জন্মের পর থেকে আমার কাছেই বেশিরভাগ সময় থাকে। আমিই ওর প্রাইমারি অভিভাবক। ও এখন খুবই ছোট। তবে আইরার সঙ্গে ওর বাবারও (সঙ্গীতশিল্পী তাহসান রহমান খান) নিয়মিত যোগাযোগ আছে। ওকে ওর বাবা নিয়ে যায়। ওরা বেড়াতেও যায়। কিছুদিন আগেও আইরা ওর বাবার কাছে গিয়েছিল। তবে ভবিষ্যতে ও কী করবে, কার কাছে থাকবে, সেটা আইরা বড় হয়ে নিজে সিদ্ধান্ত নেবে। ভবিষ্যতে সেটা দেখা যাবে।
ছবি সৌজন্য: মিথিলার ফেসবুক
আইরাও কি তবে এদেশের (ভারতের) নাগরিকত্ব পাবে?
মিথিলা- সবকিছুই আইরা বড় হওয়ার পর ওর নেওয়া সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। এখন কিছুই জানি না। আমার নাগরিকত্ব আদৌ বদলাবো কিনা সেটাও ভেবে দেখবো। আমি তো নিজেকে গ্লোবাল নাগরিক বলে মনে করি। তবে আমি কলকাতায় এসে থাকা শুরু করলে আইরাও আমার সঙ্গে কলকাতায় থাকবে।
সম্প্রতি CAA (নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল) নিয়ে এদেশে একটা বিতর্ক চলছে। ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে একটা বিতর্ক রয়েছে। তা নিয়ে তোমার মত কী?
মিথিলা- আমি শুধু এটুকুই বলব, ধর্মের ভিত্তিতে কিছুই হওয়া ঠিক নয়।
আচ্ছা, এসবের বাইরে গিয়ে একটি প্রশ্ন করি, তুমি তো গান করো। গান নিয়ে কিছু ভাবছো?
মিথিলা- হ্যাঁ, ছোটবেলা থেকেই গান শিখেছি। সিনেমা, নাটকেও গান গেয়েছি। আমি তো লিরিকও লিখি। তবে এখন আর সেভাবে করে উঠতে পারি না। বহুদিন ঠিককরে গান করা হয় না। তাই নিজেকে এই মুহূর্তে ঠিক সঙ্গীতশিল্পী বলে ভাবতে পারছি না। মা হওয়ার পর মেয়েকে নিয়ে এতটা ব্যস্ত হয়ে পড়ি, যে ওইদিকটা ঠিক নজর দিতে পারি না। ভবিষ্যতে দেখা যাক, কী হয়...
আরো পড়ুন-'একাত্তর'এর প্রকৃত সত্য তুলে ধরতেই পাক সাংবাদিক আমি: রাফিয়াত রশিদ মিথিলা