Kallol Lahiri : 'ইন্দুবালা'র পোস্টারে নাম নেই কল্লোল লাহিড়ীর, বিতর্কে মুখ খুললেন পরিচালক দেবালয়

  'হইচই'-এর তরফে সম্প্রতি প্রকাশ্য়ে আনা হয়েছে ওয়েব সিরিজ 'ইন্দুবালা ভাতের হোটেল'-এর ফাস্ট লুক পোস্টার। আর সেই পোস্টারে নাম নেই সাহিত্যিক কল্লোল লাহিড়ীর। অথচ, কল্লোল লাহাড়ীর লেখা উপন্যাস অবলম্বনেই এই ওয়েবসিরিজটি বানিয়েছেন পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্য। ওয়েবসিরিজের পোস্টারে কল্লোল লাহিড়ীর নাম না থাকায় সাহিত্য অনুরাগীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এবার সেটা নিয়েই মুখ খুললেন পরিচালক। 

Edited By: রণিতা গোস্বামী | Updated By: Sep 22, 2022, 01:48 PM IST
Kallol Lahiri : 'ইন্দুবালা'র পোস্টারে নাম নেই কল্লোল লাহিড়ীর, বিতর্কে মুখ খুললেন পরিচালক দেবালয়

Kallol Lahiri , জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো:  'হইচই'-এর তরফে সম্প্রতি প্রকাশ্য়ে আনা হয়েছে ওয়েব সিরিজ 'ইন্দুবালা ভাতের হোটেল'-এর ফাস্ট লুক পোস্টার। আর সেই পোস্টারে নাম নেই সাহিত্যিক কল্লোল লাহিড়ীর। অথচ, কল্লোল লাহাড়ীর লেখা উপন্যাস অবলম্বনেই এই ওয়েবসিরিজটি বানিয়েছেন পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্য। ওয়েবসিরিজের পোস্টারে কল্লোল লাহিড়ীর নাম না থাকায় সাহিত্য অনুরাগীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এবার সেটা নিয়েই মুখ খুললেন পরিচালক। 

বৃহস্পতিবার, লম্বা ফেসবুকে পোস্টে কল্লোল লাহাড়ীর নাম না থাকার কারণ জানিয়েছেন দেবালয়। পরিচালক লিখেছেন, 'Hoichoi announcement এর motion poster-এ কল্লোল লাহিড়ীর নাম না থাকার জন্য তাকে যারা ভালোবাসেন ও শ্রদ্ধা করেন তাদের অনেকেরই খারাপ লেগেছে। তাদের মনে হয়েছে তাকে স্রষ্টার সন্মান থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে এর জন্য ক্ষমা চাইছি কল্লোল ও তার পাঠকদের কাছে। তবে এই সিদ্ধান্তের মুলে ছিল যারা পোস্টার করেছেন। তাদের ধারনা যে ইন্দুবালা ভাতের হোটেল কার লেখা সেটা এমনিতেই সবাই জানে। তাই a novel by kallol Lahiri টা মূল পোস্টার ও অন্যান্য প্রমোশনের জন্য রেখে দিয়েছিল কারণ এটা শুধুই announcement poster। ইন্দুবালা ভাতের হোটেল Adapted from the novel মানেই এটা কল্লোল লাহিড়ীর এটা ভেবে নেওয়ার জন্য তাদের তরফ থেকেও আমি ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। 
এর পিছনের লেখক বা  স্রষ্টা কে তার মহিমা থেকে বঞ্চিত করার কারুর কোন উদ্ধেশ্য বা ঔদ্ধত্য নেই। ইন্দুবালা তার স্রষ্টা আর তার পাঠকেরই থাকবে। আমি o hoichoi তাতে সামান্যই অংশীদার।'

আরও পড়ুন-৭৫-এর বৃদ্ধা শুভশ্রী, ইন্দুবালা ভাতের হোটেলে খাবেন?

দেবলয় ভট্টাচার্যের এই পোস্টে সাহাত্যিক কল্লোল লাহিড়ী নিজেও কমেন্ট করেছেন এবং এনিয়ে তিনি তাঁর নিজস্ব মতামত জানিয়েছেন। পরিচালক দেবালয়ের উদ্দেশ্যে তিনি লিখেছেন, 'আমি তাহলে কার কাছে ক্ষমা চাইবো? তিল তিল করে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়ে যাকে গড়ে তুলছিস। যেভাবে তোকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়েছে। আমি সকলের হয়ে ক্ষমা প্রার্থী। খুব কাছের বন্ধুকে আক্রমণ মানে অপর বন্ধুর রক্তক্ষরণ। ক্ষমা করে দিস ভাই এই কষ্ট পাওয়ার জন্য।' যদিও পোস্টারে কল্লোল লাহিড়ীর নাম উল্লেখ না থাকা নিয়ে দেবালয় ভট্টাচার্যের পোস্টের নিচে উঠে এসেছে আরও অনেক মন্তব্য। 

তবে শুধু কমেন্ট নয়, কল্লোল লাহিড়ী নিজেও দেবালয় ভট্টাচার্যের পোস্ট শেয়ার করে নিজের ফেসবুকে একটি লম্বা পোস্ট করেন। লেখেন, 'আমিও তোর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। যেভাবে তোকে গতকাল থেকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়েছে। যেভাবে কাজ নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছে । খারাপ কথা বলা হয়েছে । তারজন্য আমি কষ্ট পেয়েছি। কাছের লোকজনরা কষ্ট পেয়েছেন।  যারা আমাদের দুজনকে বহুদিন চেনেন। অনেক দিন থেকে  দুজনে একসাথে কাজ করি। কোনবার এমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হইনি আমরা। গোটা দিন ধরে তোর এই কষ্ট পাওয়ার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। অনেক কষ্ট করে অনেক প্রতিবন্ধকার মধ্যে ইন্দুবালাকে ফুটিয়ে তুলছিস। যাঁরা দেখছেন তাঁরা জানেন।  আমরা সবাই তোর পাশে আছি বন্ধু। শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা নিরন্তর।'

আরও পড়ুন-ভালোবাসার অর্থ বোঝাবেন ঋতুপর্ণা, আসছে 'লাভ ইজ অল'

প্রসঙ্গত, 'ইন্দুবালা ভাতের হোটেল' ওয়েব সিরিজের হাত ধরেই প্রথমবার OTT-র দুনিয়ায় পা রাখছেন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। পোস্টার মুক্তির পর এবিষয়ে Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালের সঙ্গে কথা বলার সময় দেবালয় ভট্টাচার্য কল্লোল লাহিড়ীর উপন্যান অবলম্বনে এই ওয়েবসিরিজ বানানোর কথা উল্লেখ করেন। দেবালয় ভট্টাচার্য বলেন 'কল্লোল লাহাড়ির উপন্যাস 'ইন্দুবালা ভাতের হোটেল' অবলম্বনেই এই ওয়েবসিরিজটি বানিয়েছি। এখানে ইন্দুবালা বলে একজন মহিলা, যার বয়স প্রায় ৭৫। তিনি একটা ছোট্ট হোটেল চালান। অনেকেই তাঁর খাবারের ভক্ত। মা, ঠাকুমা, শাশুড়ির কাছ থেকে শেখা একদম ট্রাডিশনাল বাঙালি কিছু রান্না-ই উনি করেন। যদিও এই গল্পে খাবারটা মূল বিষয় নয়, খাবারের মধ্যে দিয়ে উনি স্মৃতিগুলিকে বাঁচিয়ে রাখেন। এটা ওঁর বিস্মৃতির বিরুদ্ধে লড়াই। ৬-এর দশকে উনি বিয়ের পর এদেশে আসেন। তারপর আর বাংলাদেশে না ফিরে যেতে না পারা, অসুখী দাম্পত্য জীবন, স্বামী মারা যাওয়া, বাচ্চাদের নিয়ে স্ট্রাগল, ছোটবেলার প্রেম, প্রথম জীবন, পূর্ব বাংলার নানান স্মৃতি সবাই ওঁর রান্নায় ধরা থাকে। এখানে আসলে টেস্ট ইজ মেমরি। খাবারের মধ্যে দিয়ে উনি স্মৃতিগুলিকে বাঁচিয়ে রাখেন। এটা ওঁর বিস্মৃতির বিরুদ্ধে লড়াই। বর্তমানে উনি একজন সফল মহিলা, তারপরেও উনি সবার থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেন।'

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)  

.