Theatre Festival: শাসকের কোপে বাতিল চাকদহ নাট্য উৎসব? ‘ফ্যাসিজমের দৃষ্টান্ত’, সরব নাট্যব্যক্তিত্বরা...
Theatre Festival: ২৩-২৬ নভেম্বর মঞ্চস্থ হওয়ার কথা ছিল চাকদহ নাট্য উত্সবের। কিন্তু আচমকাই বাতিল করা হয় ঋত্বিক সদনের বুকিং। আয়োজকদের দাবি, সংগ্রামী মঞ্চের অবস্থানে নাটকের খেসারত দিতে হল তাঁদের। বৃহস্পতিবারই সংগ্রামী যৌথ মঞ্চে চাকদহ নাট্যজনের জগাখিচুড়ি নাটক প্রদর্শিত হয়। এদিকে বৃহস্পতিবারই কল্যাণী পুরসভার তরফে চিঠি দেওয়া হয় চাকদহ নাট্যজনকে।
সৌমিতা মুখোপাধ্যায়: ফের শাসকের কোপে সাংস্কৃতিক মঞ্চ? এবার সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অবস্থানে নাটক করার অপরাধে চাকদহ নাট্য উত্সবের(Chakdah Theatre Festival) বুক করা শো বাতিলের অভিযোগ। ২৩-২৬ নভেম্বর কল্যানীর ঋত্বিক সদনে বাতিল করা হয় বুকিং। কাঠগড়ায় কল্যাণী পুরসভা(Kalyani)। চাকদহ নাট্যজনের দাবি, সরকারের নির্দেশই এই সিদ্ধান্ত। ৪ দিনে দেবেশ চট্টোপাধ্যায় নির্দেশিত ৬টি নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার কথা ছিল। দলের তরফে জানানো হয়েছে টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। মনে করা হচ্ছে, সংগ্রামী মঞ্চের অবস্থানে নাটকের খেসারত দিতে হল তাঁদের। সরব আয়োজকরা। দেবেশ চট্টোপাধ্যায়(Debesh Chatterjee) নির্দেশিত নাট্য উৎসব বাতিলে শুরু বিতর্ক। বৃহস্পতিবারই সংগ্রামী যৌথ মঞ্চে চাকদহ নাট্যজনের জগাখিচুড়ি নাটক প্রদর্শিত হয়। এদিকে বৃহস্পতিবারই কল্যাণী পুরসভার তরফে চিঠি দেওয়া হয় চাকদহ নাট্যজনকে। এই বিতর্কে মুখ খুলেছেন নাট্যজগতের বিশিষ্টরা।
আরও পড়ুন- Vidya Balan on Gautam Halder: ‘সেদিনও আগামী ছবির গল্প নিয়ে কথা হল...’, গৌতম-প্রয়াণে চোখে জল বিদ্যার
দেবেশ চট্টোপাধ্যায়- ঘটনা পরম্পরায় যদি সত্যিই সংগ্রামী যৌথ মঞ্চে অভিনয়ের সঙ্গে হল বাতিলের সম্পর্ক থাকে তাহলে তা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। এটা সত্যিই লজ্জাজনক। শুধুমাত্র যে একটি দলের পারফরম্যান্স আটকে দিয়েছে তা নয়, এটা সামগ্রিকভাবেও একটি অন্য চিত্র তৈরি করতে পারে। ফিয়ার সাইকোসিস তৈরি করতে পারে। সেটা যদি না হয় তাহলেই মঙ্গল।
কৌশিক সেন- এসব ক্ষেত্রে আমি কোনও সরকারকে বিশ্বাস করি না, সেটা বামফ্রন্ট হোক বা তৃণমূল সরকার। এসব ক্ষেত্রে কখনই তাঁরা সত্যি কথা বলেন না। যেহেতু চাকদহ নাট্যজন যে দলটি নিয়ে কথা হচ্ছে যাঁরা সরকার বিরোধী একটি নাটক মঞ্চস্থ করেছিলেন ফলে এটা হতেই পারে যে সেই কারণে সরকার তাঁদের নাট্য উৎসব বাঞ্চাল করার চেষ্টা করছে। যাঁরা এই অভিযোগ করছেন, আমি তাঁদের পাশে আছি।
চন্দন সেন- দেবেশ ফ্যাসিজমের শিকার। সেটা আমাদের দেশে ও রাজ্যে পুরোমাত্রায় চলছে, সেটা যেন বাকিরাও বুঝতে পারেন। তথাকথিতভাবে যাঁরা প্রেসক্লাবে গিয়ে ঝান্ডা ধরেছিলেন, যদি তাঁরাও বুঝতে পারেন যে আদতে তাঁদের কথা বলার অধিকার নেই। যদিও অনেকে কথা না বলে অন্যদিকে লাভবান হতে চেয়েছেন। তবে দেবেশ বলেছেন, অনেকদিন ধরেই কথা বলতে চেয়েছেন। সেই কথা বলার ফলে একটা ফ্যাসিস্ট সরকার যেভাবে উত্তর দেওয়ার সেইভাবেই উত্তর দিয়েছে, ফ্যাসিজমের দৃষ্টান্ত।
আরও পড়ুন- Kalyani: ফের সাংস্কৃতিক মঞ্চে শাসকের কোপ? চাকদহ নাট্য উৎসব বাতিলে বিতর্ক
সুজন মুখোপাধ্যায়- এই ধরনের ঘটনা খুবই অনভিপ্রেত। আমাদের থিয়েটারের যে পরিবেশ বা পরিমন্ডল সেখানে যদি এই কারণ বলবৎ করা হয়, তাহলে মুশকিল। আমারও ২৫ তারিখ সেখানে একটা নাটক করার কথা ছিল। তবে আমার ছিল বলে বলছি না। এটা গ্রহণ যোগ্য নয়, এটা জবরদস্তি ও ক্ষমতার অপপ্রয়োগ।
কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়- যেকোনও শিল্প বন্ধ করাকে কখনই সমর্থন করি না। দেবেশের নাটক বন্ধ করাও সমর্থন করি না। নাটক সবসময়েই সমাজের নানা ঘটনা তুলে ধরে। এক্ষেত্রেও ঐ নাট্যদলের নাটকে চাকরিপ্রার্থীদের নিয়ে তাঁরা কাজ করেছিলেন, এটা যাঁরা ক্ষমতায় আছেন তাঁদের বোঝা উচিত।
সৌরভ পালোধি- এটা খুব পরিষ্কার বোঝাই যাচ্ছে যে ওখানে কাল জগাখিচুড়ি মঞ্চস্থ হয়েছে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ হয়েছে, তাই একটা ভীতি তো কাজ নিশ্চিতভাবে করেছে। সেই কারণেই হয়তো সেই দলের নাট্য উৎসব আটকে গেল, আমি জানি ওদের প্রচুর টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে, সেখানে হঠাৎ একটা সরকারি অনুষ্ঠান এসে গেল। হয়তো কোনও সরকারি অনুষ্ঠান করেও দেবে কারণ এই সরকারের তো অনুষ্ঠানের শেষ নেই। কিন্তু একটা নাট্য উৎসব বন্ধ করে সরকারি অনুষ্ঠান করা নোংরামি ছাড়া আর কিছু নয়। খুবই লজ্জাজনক।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)