প্রথম দফার নির্বাচনে ৩৩৮৫ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় তৃণমূলের
পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী প্রার্থীর সংখ্যা পিছনে ফেলে দিল ২০০৮ পরিসংখ্যানকে। শুধুমাত্র প্রথম দফার নির্বাচনে নয় জেলায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখ শেষে দেখা যাচ্ছে ৩৩৮৫ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থীরা, যা মোট আসনের ৯.৩৬ শতাংশ। যেখানে, ২০০৮র পঞ্চায়েত ভোটে সবকটি জেলা মিলিয়ে দুহাজার ৮৪৫ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছিলেন, যা ছিল মোট আসনের ৫.৫৭ শতাংশ।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী প্রার্থীর সংখ্যা পিছনে ফেলে দিল ২০০৮ পরিসংখ্যানকে। শুধুমাত্র প্রথম দফার নির্বাচনে নয় জেলায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখ শেষে দেখা যাচ্ছে ৩৩৮৫ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থীরা, যা মোট আসনের ৯.৩৬ শতাংশ। যেখানে, ২০০৮র পঞ্চায়েত ভোটে সবকটি জেলা মিলিয়ে দুহাজার ৮৪৫ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছিলেন, যা ছিল মোট আসনের ৫.৫৭ শতাংশ।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা শুরু হতে না হতেই রাজ্যজুড়ে আরম্ভ হয়ে যায় হিংসা, যা এখনও অব্যাহত। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির শাসকদলের দিকে। যদিও, তৃণমূল নেতারা তা মানতে নারাজ। মুকুল রায়ের কথানুযায়ী রাজ্যে যখন সুষ্ঠু নির্বাচন হতো না, তখন, ২০০৮ সালে ত্রি-স্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে সবকটি জেলা মিলিয়ে ৫১০৫২টি আসনের মধ্যে ২৮৪৫টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিলেন প্রার্থীরা। যা মোট আসনের ৫.৫৭ শতাংশ।
২০১৩-এ প্রথম দফার নির্বাচনে মাত্র নটি জেলার মনোনয়নপত্র পরীক্ষার পর দেখা যাচ্ছে, ৩৬১৬০টি আসনের মধ্যে ৩৩৮৫টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। যা মোট আসনের ৯.৩৬ শতাংশ।
প্রথম দফার পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ মিলিয়ে মোট আসন সংখ্যা ৩৬১৬০। যার মধ্যে, ৩৬৯৮টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন প্রার্থীরা। এঁদের মধ্যে, তৃণমূল প্রার্থীর সংখ্যা ৩৩৮৫।
বাঁকুড়া জেলায় ২৫০৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ৩৬২ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। বর্ধমানে ৪০৭১টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ৩৯৭ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। হুগলির ৩২১৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৯৫৮টি গেছে তৃণমূলের দখলে। হাওড়ায় ২৪৩১টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ২৮৯ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। উত্তর ২৪ পরগনার ৩৫৭২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৪৮টি গেছে তৃণমূলের দখলে। পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩৮৪৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ৬০৮ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। পূর্ব মেদিনীপুরে ৩৩৭৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ২২৮ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। পুরুলিয়ার ১৯৪৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে অবশ্য কোনওটিতেই তৃণমূল প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হননি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৪৮৮৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৪৮টি গেছে তৃণমূলের দখলে।
অর্থাত, নয় জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ২৯৮৪৯টি আসনের মধ্যে ২৯৩৮ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। এ বার দেখে নেওয়া যাক পঞ্চায়েত সমিতির পরিসংখ্যান। বাঁকুড়া জেলায় পঞ্চায়েত সমিতির ৫৩৫টি আসনের মধ্যে ৬২ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। বর্ধমানে পঞ্চায়েত সমিতির ৭৭৯টি আসনের মধ্যে ৪৬ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। হুগলির ৬১১টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ১৬৮টি গেছে তৃণমূলের দখলে। হাওড়ায় পঞ্চায়েত সমিতির ৪৬২টি আসনের মধ্যে ৪৭ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। উত্তর ২৪ পরগনার ৫৯২টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ৫টি গেছে তৃণমূলের দখলে। পশ্চিম মেদিনীপুরে ৭৯৮টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ৭৪টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। পূর্ব মেদিনীপুরে পঞ্চায়েত সমিতির ৬৬১টি আসনের মধ্যে ৩৫ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। পুরুলিয়ার ৪৪৬টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে অবশ্য কোনওটিতেই কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হননি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৯১৩টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ৬টি গেছে তৃণমূলের দখলে। অর্থাত, নয় জেলায় পঞ্চায়েত সমিতির মোট ৫৭৯৭টি আসনের মধ্যে ৪৪৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল।
প্রথম দফার পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের আসনগুলিতে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র পরীক্ষার পর দেখা যাচ্ছে, নয় জেলায় ৫১৪টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে ৪টি আসনে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না। এই আসনগুলির সবকটিই হুগলি জেলায়। সবকটি আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূল প্রার্থীরা।
এরপরেও হয়ত রাজ্যের শাসকদলের তরফে ব্যাখ্যা দেওয়া হবে, সাংগঠনিক অবস্থা খারাপ হওয়ার জন্যই বিরোধীরা বহু আসনে প্রার্থী দিতে পারেননি। আর, তার ফলেই তৃণমূল প্রার্থীরা ওইসব আসনগুলিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন। যদিও, তা যে সত্যি নয়, মনোনয়ন পর্বে রাজ্যজুড়ে হিংসার ঘটনাই তার প্রমাণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।