বন্দর জটে এবার অপহরণ কাণ্ডের নয়া মোড়
হলদিয়া বন্দরে কর্মরত এবিজি সংস্থার তিন কর্তাকে অপহরণের অভিযোগ উঠল। এক কর্তার স্ত্রী ও শিশুসন্তানকেও অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের হুমকি উপেক্ষা করে কাজ চালুর চেষ্টা করেছিলেন ওই তিন কর্তা। এবিজি গ্রুপের তরফে প্রেস বিবৃতি দিয়ে অপহরণের অভিযোগ জানানো হয়েছে। অপহৃত পাঁচজনকেই ভয় দেখিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে এবিজি।
হলদিয়া বন্দরে কর্মরত এবিজি সংস্থার তিন কর্তাকে অপহরণের অভিযোগ উঠল। এক কর্তার স্ত্রী ও শিশুসন্তানকেও অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের হুমকি উপেক্ষা করে কাজ চালুর চেষ্টা করেছিলেন ওই তিন কর্তা। এবিজি গ্রুপের তরফে প্রেস বিবৃতি দিয়ে অপহরণের অভিযোগ জানানো হয়েছে। অপহৃত পাঁচজনকেই ভয় দেখিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে এবিজি।
রাজ্য সরকারের জমি নীতির গেরোয় শিল্পায়ন প্রশ্নের মুখে। এই পরিস্থিতিতে শিল্পবান্ধব ভাবমূর্তিতে আরও একটা ধাক্কা। এবার হলদিয়া বন্দরে কর্মরত এবিজি গ্রুপের তিন কর্তাকে অপহরণের অভিযোগ উঠল। সংস্থার দাবি, হুমকি, নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তাঁরা হলদিয়া বন্দরে কাজ চালুর চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। এবিজি সংস্থার তরফে প্রেস বিবৃতি দিয়ে যে অভিযোগ জানানো হয়েছে, তা হল এই রকম -
আমাদের তিনজন সিনিয়র অফিসার, ক্যাপ্টেন মনপ্রীত জলি, জগদীশ বেহরা এবং ভূষণ পাতিলকে রবিবার রাত একটা নাগাদ অপহরণ করে। ভূষণ পাতিলের স্ত্রী এবং এক বছরের শিশুকেও অপহরণ করা হয়। প্রায় পঞ্চাশজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি হনুমান টুপি ও মাফলার জড়িয়ে অফিসারদের ওপর চড়াও হয়। বন্দুক ঠেকিয়ে ভয় দেখানো হয়। বলা হয়, ভবিষ্যতে হলদিয়ায় পা রাখলে পরিণতি খুব খারাপ হবে। বাধ্য হয়ে ভয়ে হলদিয়া ছেড়েছেন ওই তিন কর্তা। আমরা জেনেছি, কলকাতায় তাঁরা সকলেই নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছেন। গোটা ঘটনায় হলদিয়া বন্দরের অরাজক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবিজি। বন্দরের দুষ্কৃতী তাণ্ডব একেবারে সংস্থার কর্তার ঘরে ঢুকে পড়ায়, পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হলদিয়াক দুনম্বর এবং আট নম্বর বার্থে মাল কালাসের দায়িত্বে থাকা এবিজি সংস্থা আদৌ এরাজ্যে আর কাজ করবে কিনা, তা নিয়েই সন্দেহ তৈরি হয়েছে। হলদিয়া বন্দরে এবিজি যাতে নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারে, তার জন্য গত ১৯ অক্টোবর রাজ্য সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির দাপট চলছিলই। এমনকি এবিজির কর্মরত শ্রমিকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও ওঠে আইএনটিটিইউসির বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত প্রায় আঠেরো লক্ষ টাকা খরচ করে পুলিসি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে এবিজি। সেইমতো শনিবার বন্দরের ভিতরে ও বাইরে পুলিস ক্যাম্প বসানো হয়। কিন্তু জুলুমবাজির ছবিটা তাতেও বদলায়নি।
এবিজি সংস্থার তরফে দেওয়া প্রেসবিবৃতিতে বলা হয়েছে, কাজ চালুর কয়েক ঘণ্টা আগে অপহরণ। কোনও সন্দেহ নেই পরিকল্পনা করেই এই কাজ করা হয়েছে। যেটা সবচেয়ে বিরক্তের, তা হল কিছু লোকের কায়েমি স্বার্থ পূরণের জন্যই বন্দরের কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে। রবিবারের ঘটনা থেকে পরিষ্কার, রাজ্য প্রশাসন ও পুলিস মাল খালাসকারী সংস্থাকে কোনও নিরাপত্তাই দিতে পারেনি। হলদিয়া বন্দরের কর্মকর্তাদের অপহরণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিরোধী দল সিপিআইএম।
আইএনটিটিইউসির সঙ্গে এবিজির সংঘাতের জেরে হলদিয়া বন্দরের দুটি বার্থে কাজ যখন বন্ধ সেই সময় পূর্ব মেদিনীপুর সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তখন তাঁর দাবি ছিল, হলদিয়া বন্দরে কাজকর্ম স্বাভাবিক রয়েছে। তা নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে অনেক। কিন্তু অপহরণের অভিযোগ সামনে আসার পর রাজ্য প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।