পাগলা মায়ের আবার হিন্দু মুসলিম কি?
"আমি চাই হিন্দু নেতার সালমা খাতুন পুত্রবধু, আমি চাই ধর্ম বলতে মানুষ বুঝবে মানুষ শুধু..."। কুমারী রূপে মহাঅষ্টমীতে পুজিত হবেন মুসলিম ঘরের কন্যা বর্ষা।
ওয়েব ডেস্ক: "আমি চাই হিন্দু নেতার সালমা খাতুন পুত্রবধু, আমি চাই ধর্ম বলতে মানুষ বুঝবে মানুষ শুধু..."। কুমারী রূপে মহাঅষ্টমীতে পুজিত হবেন মুসলিম ঘরের কন্যা বর্ষা।
দেবীর আগমন ঘটে গিয়েছে। ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী এরপরই আবার কৈলাসে ফিরবেন দেবী মহামায়া। পুরাণে বর্ণিত আছে রাবণ বধের আগে রাজা রাম দেবী দুর্গার বন্দনা করেছিলেন। 'দশেরা'তেই রাম বধ করেছিলেন রাবণকে। মর্তের মানুষও সমস্ত দানবীয় শক্তির পরাজয় ঘটিয়ে নবদিগন্তের পথকে প্রশস্থ করবে বলেই দেবী বন্দনায় নিজেদের নিয়োজিত করেন। অনেক নিয়ম, আচার, অনুষ্ঠান, আড়ম্বরে পালিত হয় দুর্গা পুজো।
দেবী দুর্গার পূজা আর্চার মধ্যে কুমারী পুজো একটি বিশেষ অঙ্গ। অষ্টমীতে মা দুর্গাকে কুমারী রূপে পুজো করার রীতি আজকের নয়। বহু প্রাচীন এই প্রথা কালের নিয়মে আজও বহমান। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে মানুষের ধ্যান ধারণা। কেবল বদলায়নি পরম্পরা। এবার সেই পরম্পরাই একই ভাবে পালিত হবে কিন্তু এই রীতিতে মিলে যাবে হিন্দু এবং মুসলিম। হ্যাঁ এটাই সত্যি। কুমারী রূপে দেবী হবেন মুসলিম ঘরের কণ্যা। কালনাতে মহাষ্টমীতেই তৈরি হবে নতুন ইতিহাস। সাধারণত কুমারী পুজোতে ব্রাহ্মণ পরিবারের কন্যাকেই বেছে নেওয়া চিরাচিরিত রীতি। চিরাচরিতকে এবার ভাঙবে নতুন প্রজন্ম। একবিংশ শতাব্দীর সমাজে যেভাবে সমাজ ভাঙছে, সেখানে সমাজের চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে পুরাতনের সঙ্গে নতুনকে মিলিয়ে সূচিত হতে চলেছে নবদিগন্ত।
নাম বর্ষা খাতুন। মহাষ্টমীতে তিনিই দেবী দুর্গারূপী মহামায়া। পঞ্চম শ্রেণির বর্ষার এই দেবী রূপে পূজিত হওয়ার কথা শুনে স্তম্ভিত অনেকেই। কেউ কেউ 'সব গেল, সব গেল' বলে ধ্বনি তুললেও উন্নত ধ্যানধারণার মানুষের কাছে এই ঘটনা মানবাতার জয়। মুসলিম কিংবা হিন্দু মায়ের গর্ভের কোনও জাত হয় না, তেমনি মা কখনও হিন্দু অথবা মুসলিমেও বিভাজিত নয়।
বাংলা লালনের জন্মভূমি। লালন না ছিলেন মুসলিম, না হয়েছেন হিন্দু। লালনের যদি জাত না থাকে, তবে লালনের 'মা'য়ের জাত কীভাবে হয়? তাইতো লালনের সুরে সুর মিলিয়ে লালনের বংশধরেরা গাইছে,'লালন বলে, জাত কারে কয়? এই ভ্রম তো গেল না'।