বুদ্ধিজীবীদের খোলা চিঠি ছত্রধরের

মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগ আগেই তুলেছে জঙ্গলমহল। এবার সরাসরি কলকাতা তথা এরাজ্যের বুদ্ধিজীবী, নাগরিক সমাজ এবং মানবাধিকার সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল। পাশে না থাকার এই অভিযোগ তুললেন একসময় এই মানুষগুলি যাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সেই ছত্রধর মাহাত।

Updated By: Mar 7, 2012, 11:13 AM IST

মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগ আগেই তুলেছে জঙ্গলমহল। এবার সরাসরি কলকাতা তথা এরাজ্যের বুদ্ধিজীবী, নাগরিক সমাজ এবং মানবাধিকার সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল। পাশে না থাকার এই অভিযোগ তুললেন একসময় এই মানুষগুলি যাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সেই ছত্রধর মাহাত।
লালগড় আন্দোলন। ২০০৯। সেই দিনগুলিতে জঙ্গলমহলের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন কলকাতা তথা এরাজ্যের বহু মানুষ। এমনকী সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে লালগড়ে যেতে পিছপা হননি বহু কবি, সাহিত্যিক,  নাট্যকর্মী, বুদ্ধিজীবী। এপপর রাজ্য রাজনীতির পালা বদলের সঙ্গে জঙ্গলমহলেরও অবস্থার বদল ঘটেছে। আরও আধিপত্য কায়েম করেছে যৌথবাহিনী।

আর এই অবস্থায় জেলবন্দি ছত্রধর মাহাত একটি খোলা চিঠি লিখলেন। বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়, নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক সংগঠন এবং প্রগতিশীল ব্যক্তিবর্গের প্রতি রাজনৈতিক বন্দিদের আবেদন বলে এই চিঠির শুরু। চিঠির প্রথমেই সরকারের প্রতি সন্দেহ প্রকাশ করে ছত্রধর মাহাতর বক্তব্য, সরকার গঠিত রিভিউ কমিটির কাজ ঠিক কি, সে সম্পর্কে তাঁরা সন্দিহান। তাঁর বলেছেন, "আমরা যারা জনগরণের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে বন্দি হয়েছি, তারা জেলের নরক যন্ত্রনা ভোগ করেই চলেছি। `বন্দি মুক্তি`, `মামলা প্রত্যাহার` শব্দগুলো আমাদের কাছে তামাশা মনে হয়।"
 
সবশেষে ছত্রধর মাহাত মারাত্মক অভিযোগে বলেছেন, "আমরা আশ্চর্য হয়ে দেখি কলকাতা শহরের বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়, নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার সংগঠনগুলি ও কর্মীরাও বন্দিমুক্তি ইস্যু নিয়ে বর্তমানে নিশ্চুপ। বন্দিরা বেঁচে আছে কিনা, তা জানার জন্যও অধিকাংশ মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক সংগঠন ও কর্মীরাও জেলখানার ধার মাড়ান না। এ হচ্ছে বাস্তব অবস্থা।"

ছত্রধর মাহাতর এই অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন মানবাধিকার আন্দোলনের কর্মীরাও। এপিডিআর সদস্য রঞ্জিত শূর বলেছেন "গত ৯ মাসে নতুন করে ৩০০-র ও বেশি রাজনৈতিক কর্মীকে জেলে পোরা হয়েছে। এটা ঠিক যে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার আগে বুদ্ধিজীবিরা, মানবাধিকার কর্মী বা বিভিন্ন গণআন্দোলনের কর্মীরা যেভাবে রাস্তায় নেমেছিল, আজকে সেই ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা রাস্তায় নামতে পারছিনা। তার কারন হচ্ছে, বুদ্ধিজীবী এবং নাগরিক সমাজের একটা অংশ এই সরকারের নানা কমিটি বা ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে।"
জেলবন্দি ছত্রধর মাহাতর এই চিঠি পরিবর্তনকামী বুদ্ধিজীবীদের যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলেছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
 
 

.