বাঁকুড়ার ভদ্র বাড়ির দুর্গা পুজো দেখতে বাঁকুড়া গিয়েছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ
এই বাংলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে বহু ঐতিহ্যের পুজো। বাঁকুড়ার প্রাচীন দুর্গা পুজো গুলোর মধ্যে অন্যতম কোতুলপুরের ভদ্র বাড়ির পুজো।
ওয়েব ডেস্ক: এই বাংলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে বহু ঐতিহ্যের পুজো। বাঁকুড়ার প্রাচীন দুর্গা পুজো গুলোর মধ্যে অন্যতম কোতুলপুরের ভদ্র বাড়ির পুজো।
জমিদারি গেছে অনেক দিন। বাড়ির গায়ে লেগেছে বয়সের ছাপ। পুজোর জৌলুসও আগের মতো নেই। তবু এবাড়ির পুজোকে ঘিরে এলাকাবাসীর মনে খেলা করে অদ্ভুত এক নস্ট্যালজিয়া।
বড় ভদ্র পরিবারের মূল ব্যবসা ছিল নুনের আমদানি-রফতানি। কথিত আছে, এই ভদ্ররা মনসামঙ্গল খ্যাত চাঁদ সদাগরের প্রকৃত উত্তর পুরুষ। মনসা মঙ্গলে বর্ণিত ব্যবসার মতো ভদ্ররাও নদীতে ডিঙা ভাসিয়ে ব্যবসা করতে যেত দূরদূরান্তের দেশে। নুনের ব্যবসায় ফুলে ফেঁপে ওঠার পর, ভদ্র পরিবার বর্ধমানের মহারাজা উদয় চাঁদ মহাতপের কাছ থেকে কোতুলপুর লাগোয়া সতেরোটি তালুকের জমিদারি স্বত্ত্ব কিনে নেয়। তৈরি হয় বিরাট এস্টেট। তার হাত ধরেই শুরু হয় দুর্গাপুজো।
সাতমহলা জমিদার বাড়ির উঠোনে তৈরি হয় দুর্গামণ্ডপ। পুজোর সময় পুতুলনাচ, রামলীলা, যাত্রাপালা, গমগম করত জমিদার বাড়ি। ১৮৮০ সালের ১০ অক্টোবর। কামারপুকুর থেকে বিষ্ণুপুর যাওয়ার সময় শ্রীরামকৃষ্ণ পুজো দেখার জন্য এই ভদ্র বাড়িতে এসেছিলেন। বহু পুরনো দুর্গাদালান এখনও গর্বের সঙ্গে আগলে রেখেছে সেই স্মৃতি।
সময়ের নিয়মে, সংস্কারের অভাবে পলেস্তরা খসে পড়ছে। বেরিয়ে পড়েছে সাতমহলা বাড়ির ইটের পাঁজর। সিংহদ্বার ফাটলে জরাজীর্ণ। তবু অতীত ঐশ্বর্যের অভিজ্ঞান হয়ে এখনও দাঁড়িয়ে আছে নহবতখানা, খাজাঞ্চিখানা, গোবর্ধন মন্দির, রাসমঞ্চ আর দুর্গামণ্ডপ। আশ্বিনের ঢাক বেজে উঠলে ভদ্র বাড়িতে ভিড় হবেই হবে।