সন্ত্রাসবাদকে ‘উত্খাত’ করার দায়িত্ব নিল পাক আমজনতাই
ভোটে জয় কার্যত নিশ্চিত জেনে বুধবার রাতে সাংবাদিক বৈঠক করেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের সুপ্রিমো। তাঁর সরকার যে সংস্কারমূলক উন্নয়নে জোর দেবে, এ দিন তা স্পষ্ট করে দেন ভাবী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান
নিজস্ব প্রতিবেদন: সন্ত্রাসবাদের পাশে দাঁড়াল না পাক আম জনতা। এ বারের পাকিস্তানের নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্র ছায়ায় ভোটে দাঁড়িয়ে ছিল বিপুল সংখ্যক জঙ্গি। যার জেরে উদ্বেগের পারদ চড়েছিল খোদ দিল্লি থেকে হোয়াইট হাউজ। কিন্তু বুধবারের নির্বাচনী ফলে দেখা গিয়েছে, একটিও আসন দখল করতে পারেনি জঙ্গি মদতপুষ্ট প্রার্থীরা।
আরও পড়ুন- ভারত এক পা এগোলে, পাকিস্তান এগোবে দু’পা: ইমরান
পঞ্জাব, পাখতুনখোয়ায় গোহারা হেরেছে ভোটে দাঁড়ানো হাফিজের ৫০ জন প্রার্থী। এর মধ্যে রয়েছে মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী হাফিজ সইদের ছেলে এবং জামাই। সারগোধা থেকে দাঁড়িয়ে হাফিজের ছেলে তালহা ১১ হাজার ভোটে হেরেছে। এ বারে আল্লাহ-ও-আকবর তেহরিক নামে একটি রাজনৈতিক দলের ব্যানারে দাঁড়িয়েছিল লস্কর প্রধানের অনুগামীরা। অন্যদিকে জামাত-ই-ইসলামি, দ্য জামাত-উল-উলেমা-ই-পাকিস্তান, দ্য মিলি আওয়ামি লিগের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলি একত্র হয়ে পঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখোয়ায় প্রাদেশিক নির্বাচনে মুতাহিদা মজলিস-ই-আমল নামে রাজনৈতিক দল তৈরি করা হয়। কিন্তু এই দলটিকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে এই দুই প্রদেশের নাগরিকরা।
উল্লেখ্য, লস্কর ই তইবাকে আগেই আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন হিসাবে চিহ্নিত করে রাষ্ট্রসংঘ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এমনকী ট্রাম্প প্রশাসনের চাপে পড়েই জঙ্গিদের মদত দেওয়া ইস্যুতে কোণঠাসা হয়েছে পাকিস্তান। এ বারের নির্বাচনে হাফিজের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন মিল্লি মুসলিম লিগকে ভোটে লড়ার প্রস্তাব খারিজ করে দেয় পাক নির্বাচন কমিশন। দেড় হাজারের মতো জঙ্গি এ বারের নির্বাচনে লড়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- জনগণের করের টাকা বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর 'বিশাল' আবাসে থাকবেন না ইমরান খান
আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত নামে এই জঙ্গি সংগঠন আল কায়দার সঙ্গে যুক্ত থাকায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আমেরিকা। যদিও এই জঙ্গি সংগঠনের নেতারও ভোটে লড়ার সুযোগ পায়। তেহেরিক ই লাবাইক পাকিস্তানের মতো ছোটো ছোটো জঙ্গি সংগঠনও এবারে ভোটে লড়েছে। কিন্তু কোনও দলই আসন দখল করতে পারেনি।
ভোটে জয় কার্যত নিশ্চিত জেনে বুধবার রাতে সাংবাদিক বৈঠক করেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের সুপ্রিমো। তাঁর সরকার যে সংস্কারমূলক উন্নয়নে জোর দেবে, এ দিন তা স্পষ্ট করে দেন ভাবী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি জানান, অগ্রাধিকার দেওয়া হবে দেশের দারিদ্র, বেকারত্ব দূর করার বিষয়ে। তাঁর সরকার গরিবের পাশে থেকে কাজ করবে বলেও জানিয়েছেন ইমরান। দেশের আর্থিক সংস্কার করতে চিনা মডেলের পথেই এগোতে চেয়েছেন তিনি। ৬৫ বছর বয়সী রাজনীতিক এদিন বলেন, “২২ বছর আগে যে আদর্শ নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছিলাম, সেই আদর্শকেই কার্যকর করতে সুযোগ দিয়েছেন ঈশ্বর।”
আরও পড়ুন- দেশের ‘কাপ্তান’ ইমরান, কোচের ভূমিকায় সেনা