Russia-Ukraine War: ইউক্রেনে হামলা চালাল রাশিয়া আর মাথাব্যথা হল ভারতের! কেন জানেন?
আমেরিকা (USA) স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, ইউক্রেনে (Ukraine) রাশিয়ার (Russia) হামলার নিন্দা যারা করবে না, তাদের মস্কোর সঙ্গে যুক্ত দেশ হিসেবেই বিবেচনা করবে ওয়াশিংটন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে 'প্রিয় বন্ধু' বলে সম্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সম্বোধনের ক্ষেত্রে চিনের প্রেসিডেন্ট আরও এক ধাপ এগিয়ে। তিনি সম্বোধন করেন 'সবচেয়ে ভালো ও অভিন্নহৃদয়ের বন্ধু' বলে। কিন্তু পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরুর পর এশিয়ার এই দুই শক্তিধর দেশের সঙ্গে মস্কোর সম্পর্ক কিঞ্চিৎ প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
চিন ও ভারত উভয়ই ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের সরাসরি নিন্দা জানাতে অস্বীকার করেছে। ইউক্রেন-ইস্যুতে জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদে ওঠা প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত ছিল উভয় দেশই।
এদিকে আমেরিকা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার নিন্দা যারা করবে না, তাদের মস্কোর সঙ্গে যুক্ত দেশ হিসেবেই বিবেচনা করবে ওয়াশিংটন। এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্বের সব চেয়ে জনবহুল দুই দেশ চিন ও ভারত স্বভাবতই চাপে পড়েছে। চাপটা হল, হয় বেজিং ও নয়াদিল্লিকে ইউক্রেনে রুশ হামলার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে, নয়তো তাদের বেআইনি কাজের সহযোগীর তকমা নিজেদের ঘাড়ে নেওয়ার ঝুঁকি নিতে হবে।
ফলে ভারতের সামনে এখন তীব্র দ্বন্দ্ব। তার এখন শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থা। তার এখন তীব্র মানসিক টানাপোড়েন। রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে ঠিক করেনি, এটা যদি মনেও করে ভারত, তা সত্ত্বেও সে তা জোরগলায় বলতে পারছে না। পারছে না, কারণ, রাশিয়ার সঙ্গে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।
রাশিয়ার অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের অন্যতম ক্রেতা এশিয়া তথা ভারত। ভারতের সঙ্গে শর্তহীন বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে রাশিয়ার। ফলে পশ্চিমি বিশ্ব রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপালেও চিন ও ভারত তা থেকে দূরেই থেকেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, চিন ও ভারত যে অবস্থান নিয়েছে, তাতে তাদের নিজেদের স্বার্থের দিকটাই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।
২০১৮ সালে রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনতে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি করে ভারত। এই চুক্তির আওতায় ভারতকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিচ্ছে রাশিয়া। এই ব্যবস্থা চিন ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত প্রতিরোধ গড়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। তাই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার হুমকি সত্ত্বেও রাশিয়ার কাছ থেকে এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পাওয়ার প্রক্রিয়া থেকে বিরত হয়নি ভারত।
ইউক্রেন ইস্যুতে এখন পর্যন্ত ভারতকে নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। ইউক্রেন-যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি-- উভয়ের সঙ্গেই কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ইউক্রেনে মানবিক সাহায্য পাঠানোর কথাও ঘোষণা করেন তিনি। তবে মোদী এখনও পর্যন্ত স্পষ্টভাবে ইউক্রেনে রুশ হামলার নিন্দা করেননি। বদলে দু'পক্ষকেই তিনি অবিলম্বে হিংসা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞেরা বলেন, চিনের বিপক্ষে দাঁড়ানোর জন্য রাশিয়াকে প্রয়োজন ভারতের।
আরও পড়ুন: Russia-Ukraine War: থেমে যাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ? এই প্রথম টেবিলের দু'পাশে দুই দেশ