Sri Lanka: উঠে গেল জরুরি অবস্থা জারির নির্দেশ, কী অবস্থা দ্বীপরাষ্ট্রের?
দেশে ওষুধের তীব্র ঘাটতির কারণে সরকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) তার স্বাধীনতার পর থেকে এখনও অবধি সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে বিক্ষোভ তীব্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, দেশের মন্ত্রীরা একযোগে পদত্যাগ করেন। এর ফলে রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষে এবং তার ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে একটি অস্বস্তিকর অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়াও সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে তাদের নেতৃত্বে থাকা ক্ষমতাসীন দল।
সাধারণ নাগরিকদের বিক্ষোভ অব্যাহত থাকার কারণে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা জারি থাকার নির্দেশ প্রত্যাহার করেন। জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করার আদেশটি ৫ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে কার্যকর হবেবলে জানানো হয়েছে।
জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর প্রথমবার পার্লামেন্ট শুরু হওয়ার পরে, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের জোট সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। ৪১ জন সাংসদ জোট ভেঙে বেরিয়ে যান। মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন সব মন্ত্রী। এরপরেই সোমবার, শ্রীলঙ্কার বিরোধীরা ব্যাপক বিক্ষোভের পরে একটি ঐক্য সরকারে যোগ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি রাজাপক্ষের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন।
দেশের নতুন অর্থমন্ত্রী আলি সাবরি দায়িত্ব নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করেন। চারজন নতুন মন্ত্রী শপথ নেন বাকি মন্ত্রীরা পদত্যাগ করার ঠিক আগে। সাবরি তাদের মধ্যে একজন ছিলেন।
শাসক দলের সাংসদদের একটি দল অন্তর্বর্তী সরকার নিয়োগের আহ্বান জানান। তারা সতর্ক করে বলেন যে এটি করতে ব্যর্থ হলে দেশ হিংসা এবং নৈরাজ্যের দিকে এগিয়ে যাবে। বিক্ষোভকারীরা রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে অনড় রয়েছে। সাংসদরা সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়কের সমর্থনে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের দাবিতে সব দলের সঙ্গে আলোচনার নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য স্পিকারকে আহ্বান জানান। দেশের বৃহত্তম বিরোধী দল জানিয়েছে যে তারা কোনো অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করবে না।
খাদ্য ও জ্বালানি সংকট নিয়ে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতার মধ্যে শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি (এসএলএফপি) সরকার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরে সংসদের ডেপুটি স্পিকার রঞ্জিত সিয়ামবালাপিতিয়া পদত্যাগ করেছেন।
শ্রীলঙ্কা ঘোষণা করেছে যে তারা অস্থায়ীভাবে নরওয়ে এবং ইরাকে দুটি দূতাবাস এবং অস্ট্রেলিয়ায় তার কনস্যুলেট জেনারেল ৩০ এপ্রিল থেকে বন্ধ করে দিচ্ছে। সরকার জানিয়েছে যে এই পদক্ষেপ বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে 'বিদেশে শ্রীলঙ্কার কূটনৈতিক প্রতিনিধিত্বের পুনর্গঠনের' অংশ।
এছাড়াও দেশে ওষুধের তীব্র ঘাটতির কারণে সরকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২.৩১ বিলিয়ন ডলারে নেমে যায়। এরপরে তারা সবরকম আমদানি স্থগিত করে। এর ফলে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র ঘাটতি দেখা দেয়। কুমারা সাঙ্গাকারা এবং সনথ জয়সূর্য সহ বহু ক্রিকেটার শ্রীলঙ্কা সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। পুলিস বিক্ষোভকারীদের আইন হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এবং বলেছে যে সহিংস আন্দোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।