রাষ্ট্রসঙ্ঘে কাশ্মীর নিয়ে রাহুলের মন্তব্যকে হাতিয়ার করল পাকিস্তান
পাকিস্তানের ১১৫ পাতার রিপোর্ট ফাঁস হয়ে যায় সংবাদমাধ্যমে। ওই ফাঁস হওয়া রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, কাশ্মীর নিয়ে রাহুল গান্ধী ও ওমর আবদুল্লার মন্তব্যকে ব্যবহার করেছে ইসলামাবাদ।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ১১৫ পাতার রিপোর্টের ছত্রে ছত্রে মিথ্যা। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার পরিষদে জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ১৫ মিনিট ৪৯ সেকেন্ড ধরে খালি মিথ্যাই বলে গিয়েছেন পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেসি। ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ নিয়ে রাহুল গান্ধী ও ওমর আবদুল্লার মন্তব্যকে উদ্ধৃত করেছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের ১১৫ পাতার রিপোর্ট ফাঁস হয়ে যায় সংবাদমাধ্যমে। কাশ্মীর নিয়ে রাহুল গান্ধী ও ওমর আবদুল্লার মন্তব্যকে ব্যবহার করেছে ইসলামাবাদ। ফাঁস হওয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরে দমনপীড়ন চালাচ্ছে ভারত। কাশ্মীর হত্যা ও কথায় কথায় তল্লাশি সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত মাসে শ্রীনগরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে বিরোধীদের প্রতিনিধি দল। কিন্তু শ্রীনগর বিমানবন্দরে বাধা দেওয়া হয় বিরোধীরা। দিল্লি বিমানবন্দরে ফিরে আসতে বাধ্য হন রাহুলরা। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি টুইট করেছিলেন, 'গত ২০ দিন ধরে জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে যে নির্মম প্রশাসন ও পাশবিক শক্তির প্রয়োগ করা হয়েছে, গতকাল তাঁর স্বাদ পেলেন বিরোধী নেতা ও সাংবাদিকরা, যখন আমরা শ্রীনগরে ঢোকার চেষ্টা করেছিলাম।'
It's been 20 days since the people of Jammu & Kashmir had their freedom & civil liberties curtailed. Leaders of the Opposition & the Press got a taste of the draconian administration & brute force unleashed on the people of J&K when we tried to visit Srinagar yesterday. pic.twitter.com/PLwakJM5W5
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) August 25, 2019
একইভাবে ওমর আবদুল্লা বলেছিলেন,''ভারত সরকারের এক তরফা সিদ্ধান্তের সুদূরপ্রসারী ও বিপজ্জনক প্রভাব পড়তে চলেছে। এটা কাশ্মীরিদের বিরুদ্ধে আগ্রাসন। সরকারের সিদ্ধান্ত এক তরফা, বেআইনি ও অসাংবিধানিক। সামনে রয়েছে দীর্ঘ ও শক্ত লড়াই। আমরা তৈরি।'' রাহুল ও ওমরের মন্তব্যকে উদ্ধৃত করে কাশ্মীর নিয়ে নিজেদের মিথ্যা দাবিকে পোক্ত করতে চাইছে পাকিস্তান।
ভারতও পাল্টা রণকৌশল সাজিয়েছে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে মানবাধিকার নিয়ে সুর চড়াবে নয়াদিল্লি। পাকিস্তানের সিন্ধ ও বালুচিস্তানে পাক সেনার উত্পীড়নের প্রসঙ্গও উঠবে। এর পাশাপাশি সে দেশে হিন্দু ও শিখদের উপরে অত্যাচারের কথাও তুলে ধরবে ভারত।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার পরিষদে কাশ্মীর নিয়ে বিতর্ক অথবা প্রস্তাবের দাবি করতে পারে পাকিস্তান। তবে পাকিস্তানের কৌশল বুঝে ইতিমধ্যেই সদস্য দেশগুলির সঙ্গে লাগাতার বৈঠক করেছেন ভারতের প্রতিনিধি অজয় বিসোরিয়া। ভারতের কূটনৈতিক কৌশলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও রাশিয়ার সমর্থন কোনওভাবেই পাবে না ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের বন্ধু চিনের পক্ষেও সুর চড়ানো মুশকিল। হংকং নিয়ে ইতিমধ্যেই তারা চাপে। হংকংয়ে বেজিংয়ের বিরুদ্ধেই উঠেছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ। বিষয়টি ভোটিং পর্যন্ত পৌঁছে যাক, সেটা চাইবে না বেজিং।
এদিন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার পরিষদে শুরুতেই কাশ্মীর নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করে ভারত। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, ১০০ শতাংশ টেলিফোন পরিষেবা চালু হয়ে গিয়েছে। বেশিরভাগ এলাকাতেই বহাল তবিয়তে চলছে মোবাইল পরিষেবা। দশম শ্রেণি পর্যন্ত খোলা সমস্ত স্কুল। শুরু হয়ে গিয়েছে পরীক্ষার প্রস্তুতিও। জারি রয়েছে হজযাত্রা। দশ হাজারের বেশি যাত্রী শীঘ্রই ফিরে আসবেন। জম্মু-কাশ্মীরে ব্যাঙ্কিং ও এটিএম পরিষেবাও স্বাভাবিক। সরকারি অফিসেও কর্মীরা নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন। নির্বিঘ্নে চলছে সরকারি কাজকর্ম।
আরও পড়ুন- ভিডিয়ো: কাশ্মীর ভারতের রাজ্য, ৭২ বছর পরে রাষ্ট্রসঙ্ঘে স্বীকার করে নিল পাকিস্তান