বেল আউট আর নয়, বলছে ওয়াল স্ট্রিট
দুহাজার সাতের মহামন্দার জন্য বিশ্বের প্রথম সারির কিছু ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থাকে দায়ী করা হয়। অতিরিক্ত মুনাফার লোভে এই সংস্থাগুলির ফাটকাবাজিই অর্থনীতিতে মহামন্দা ডেকে আনে। সেদিন টালমাটাল বিশ্ব অর্থনীতিকে বাঁচাতে ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থাগুলিকে দরাজ হাতে আর্থিক সাহায্য করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলির সরকার।
দুহাজার সাতের মহামন্দার জন্য বিশ্বের প্রথম সারির কিছু ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থাকে দায়ী করা হয়। অতিরিক্ত মুনাফার লোভে এই সংস্থাগুলির ফাটকাবাজিই অর্থনীতিতে
মহামন্দা ডেকে আনে। সেদিন টালমাটাল বিশ্ব অর্থনীতিকে বাঁচাতে ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থাগুলিকে দরাজ হাতে আর্থিক সাহায্য করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলির
সরকার। এখন বিশ্ব জু়ড়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ এই জন্যই যে, তাঁদের জন্য সরকার কিছু করছে না। একদিকে তাঁদের ভাতা কমানো হচ্ছে আর অন্য দিকে অতি বৃহত্
ব্যাঙ্ককে বাঁচাতে সরকার সাহায্য করছে।
দুহাজার সাত সাল। মহামন্দার কবলে বিশ্ব অর্থনীতি। মার্কিন গৃহঋণের বাজারে সঙ্কট প্রথমে ঘরোয়া অর্থনীতি, তারপর গ্রাস করে বিশ্ববাজারকে। একের পর এক ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক সংস্থা দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিল। বিশ্বজুড়ে এই মহামন্দার প্রভাব পড়লেও, সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের উন্নত দেশগুলি।
মন্দাক্রান্ত অর্থনীতিকে বৃদ্ধির পথে ফিরিয়ে আনতে শুরু হয় ড্যামেজ কন্ট্রোল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বেশিরভাগ দেশই বিপন্ন আর্থিক সংস্থাগুলিকে বাঁচাতে একের পর এক বিশেষ অনুদান দেয় সরকারি কোষাগার থেকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাড়তি অর্থ যোগাতে কোপ পড়েছিল সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প যেমন অবসর ভাতা, বেকারভাতা, বার্ধক্যভাতায়। অন্যদিকে যানশিল্পসহ বিভিন্ন বিপন্ন শিল্পক্ষেত্রে শুরু হয় কর্মী ছাঁটাই। গত দু-তিন বছরে অর্থনীতির বিশেষ উন্নতি হয়নি। কিন্তু আমজনতার ওপর বোঝা বেড়েই গিয়েছে। আয় কমার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হয়েছে মুল্যবৃদ্ধি। বেড়্ছে বেকার সমস্যা। আর্থিক সঙ্কটে জর্জরিত জনতার ক্ষোভ দানা বাঁধছিল। সেই ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেছে অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে। শুরুতে অবশ্য ছোট আকারেই আন্দোলন শুরু হয়েছিল। মার্কিন অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র ওয়াল স্ট্রিট থেকে সামান্য দুরত্বে জ্যাকুটা পার্কে জমায়েতের মধ্যে দিয়ে। বড় মুনাফার লোভে যেভাবে বড় আর্থিক ও ব্যাঙ্কিং সংস্থার শীর্ষকর্তারা সাধারণ মানুষকে সঙ্কটে ফেলেছেন তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। অভিযোগ ছিল আমজনতাকে বঞ্চিত করে আর্থিক সংস্থার কর্ণধাররা সমানে লাভ করে চলেছেন। অথচ এই সংস্থাগুলিকে বাঁচাতেই সরকারি নীতির জেরে নাভিশ্বাস সাধারণ মানুষের। একই ছবি ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। তাই অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট আন্দোলনে ঢেউ আছড়ে পড়েছে
ইউরোপ এবং লাতিন আমেরিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও। বিশ্বের আশীটিরও বেশি দেশে প্রায় দেড় হাজার শহরে মানুষ পথে নেমেছেন। মহামন্দার রেশ কাটিয়ে ওঠা
দুরে থাক, বিশ্ব অর্থনীতির সামনে এখন নিত্যনতুন সঙ্কট। তার মাঝে বিশ্বজুড়ে এই বিক্ষোভ আন্দোলন নতুন করে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে মার্কিন ও ইউরোপিয়
নেতৃত্বকে।