জমা ক্ষোভ বুকে নিয়ে জামা প্রতিবাদ কলোম্বিয়ায়
সম্প্রতি বিদ্রোহী সংগঠন ফার্কের সঙ্গে শান্তি চুক্তি সই করেছে সরকার। অথচ কলম্বিয়াবাসীর একটা বড় অংশ এই চুক্তির বিরুদ্ধে। প্রেসিডেন্টের কাছে নিজেদের মত প্রকাশে তাই অভিনব উদ্যোগ নিলেন তাঁরা। কী সেই উদ্যোগ?
ওয়েব ডেস্ক: সম্প্রতি বিদ্রোহী সংগঠন ফার্কের সঙ্গে শান্তি চুক্তি সই করেছে সরকার। অথচ কলম্বিয়াবাসীর একটা বড় অংশ এই চুক্তির বিরুদ্ধে। প্রেসিডেন্টের কাছে নিজেদের মত প্রকাশে তাই অভিনব উদ্যোগ নিলেন তাঁরা। কী সেই উদ্যোগ?
রাজধানী বাগোটার সেন্ট্রাল প্লাজা। জড়ো হয়েছেন কয়েকশো মানুষ। সকলেই ব্যস্ত। নিজের হাতে সেলাই করে তৈরি করছেন একটা সাদা জামা।
গত সপ্তাহেই বামপন্থী বিদ্রোহী সংগঠন রিভলিউশনারি আরমর্ড ফোর্সেস অফ কলম্বিয়া বা FARC-র সঙ্গে ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে কলম্বিয়া সরকার। যদিও সেই চুক্তির বিপক্ষে দেশের অধিকাংশ মানুষ। তাঁরাই তৈরি করছেন এই বিশাল জামা। কেন?
আরও পড়ুন- আমেরিকায় বিধ্বংসী দাবানল
পাঁচ দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় দু হাজার মানুষ। সাদা জামায় ছাই রঙের সুতো দিয়ে তাঁদের নাম খোদাই করছেন প্রিয়জনেরা।
কিন্তু কেন সাদা রঙ? জমায়েতে অংশগ্রহণকারী এক মহিলা মারিয়া সেসিলিয়া জানাচ্ছেন, "সাদা রঙ হল শান্তির প্রতিক। পাঁচ দশকের হিংসার যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, আমারা তাঁদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।"
কলম্বিয়ার জনপ্রিয় চিত্রশিল্পী ডোরিস সালসিডোর উদ্যোগে একদিনের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি। তিনি ইন্টারনেটে নিজের ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে যাঁরা এসেছেন, তাঁদেরই একজন ফিলিপ গিমিনেজ। তিনি নিজেও এই শান্তি চুক্তির বিপক্ষে।
ফিলিপের মতে, "আমি পাঁচ দশকের গৃহযুদ্ধে অনেক কিছু হারিয়েছি। বিদ্রোহীরা আমার গোটা পরিবারকে শেষ করে দিয়েছে। আমি তাদের কোনও দিনও ক্ষমা করতে পারব না।"
আরও পড়ুন- মোদীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ডোনাল্ড ট্রাম্প
অনুষ্ঠানের আয়োজকরা অবশ্য মনে করেন, এ ধরনের উদ্যোগ দেশের ঐক্যের পক্ষে ভাল। ভবিষ্যতে মানুষ আরও সহজে নিজের মত প্রকাশ করতে পারবেন। প্রত্যয়ী মারিয়া বেলেনা অবারার কণ্ঠে যেন সেই সংকল্পই শোনা গেল, "আমরা প্রতি বছর এধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করব। এবছর যে সাড়া পেয়েছি, তাতে আমরা অভিভূত। আশাকরি মানুষের যন্ত্রণা কিছুটা কমবে।"
শান্তি চুক্তি নিয়ে দেশবাসীর মত জানতে এবার ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা করতে চলেছে কলম্বিয়া সরকার। তবে চুক্তি বিপক্ষে বেশী ভোট পড়লে তখব কী হবে, তা অবশ্য বলা হয়নি।