Bangladesh: লিবিয়ায় গিয়ে ভয়ঙ্করকাণ্ড, মুক্তিপণ চেয়ে নির্মম অত্যাচার বাঙালি শ্রমিকের উপরে
অভিযোগ পেয়েই তত্পর হয়ে ওঠে পুলিস। পরদিনই ফেনি থেকে অপহরণ চক্রের মাথা মেহবুব ভুঁইয়া রাজীবকে গ্রেফতার করে পুলিস। এতে উল্টো ফল হয়। জনির উপরে অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায় অনেকগুন।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ছেলের উপরে নির্মম অত্যাচারের ভিডিয়ো দেখে চমকে উঠছিল গোটা পারিবার। বিদেশ বিভুঁয়ে পায়ে দড়ি বেঁধে ঝুলিয়ে বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে বাড়ির ছেলেকে। কখনও আবার খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্মম অত্যাচার। চার লাখ টাকা দিলেই তবে মিলবে মুক্তি। ইতিমধ্যেই মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা দেওয়া হয়ে গিয়েছে। তার পরেও কমছে না অত্যাচারের মাত্রা। শেষপর্য়ন্ত পুলিসের দ্বারস্থ পরিবার। তাতে মুক্তিপণ একলাফে বেড়ে হয়েছে ৬০ লাখ। সন্তানের প্রাণনাশের আশঙ্কার কাঁটা হয়ে রয়েছে বাংলাদেশের ফরিদপুরের চাঁদপুর গ্রামের জনি মোল্লার পরিবার। সংসারের হাল ফেরানোর আশায় আট মাস আগে দালাল ধরে লিবিয়ায় কাজ করতে যান জনি মোল্লা। ছেলে বিদেশ যাওয়ার আগে তার বিয়েও দিয়ে দেন কবির মোল্লা ও লাইলি মোল্লা। লিবিয়া যাওয়ার পর প্রথম দিকে ঠিকঠাকই ছিল। যাওয়ার তিন মাস পরে বাবার অ্যাকাউন্টে ৬৭ হাজার টাকা পাঠান জনি। কিন্তু তার পর থেকে কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না জনির। সম্প্রতি জনির বাড়িতে ভিডিয়ো কল করে তার উপরে নির্মম অত্যাচারের দৃশ্য দেখানো হয়।
আরও পড়ুন-Bankura: মায়ের কথা না শুনে সদ্যোজাতকে একই টিকার ডবল ডোজ, তুলকালাম হাসপাতাল
কেন ছেলের উপরে ওই অকথ্য অত্যাচার করা হচ্ছে তা প্রথম দিকে বুঝতেই পারছিলেন না কবির মোল্লা ও পরিবারের লোকজন। কিন্তু কিছু করারও ছিল না। শেষপর্যন্ত ফের ফোন করা বলা হয়, জনিকে বাঁচাতে গেলে ৪ লাখ টাকা দিতে হবে। কোনও উপায় না দেখে জমি বিক্রি করে ইতিমধ্যেই ৩ লাখ টাকা দিয়ে দিয়েছেন ইসলামিক ব্যাঙ্কে একজনের অ্য়াকাউন্টে। এদিকে বাকী ১ লাখ টাকা জোগাড় করতে দেরি হওয়ায় অত্যাচারের মাত্রা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় অপহরণকারীরা। কোনও উপায় না দেখে শেষপর্য়ন্ত ওই ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্টধারীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন কবির মোল্লা।
অভিযোগ পেয়েই তত্পর হয়ে ওঠে পুলিস। পরদিনই ফেনি থেকে অপহরণ চক্রের মাথা মেহবুব ভুঁইয়া রাজীবকে গ্রেফতার করে পুলিস। এতে উল্টো ফল হয়। জনির উপরে অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায় অনেকগুন। কবির মোল্লা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, অপহরণকারীরা মামলা তুলে নেওয়ার চাপ দিচ্ছে । মামলা না তুলে নিলে জনিকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বলা হচ্ছে মুক্তিপণ হিসেবে দিতে হবে ৬০ লাখ টাকা। ছেলের প্রাণ বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী দ্বারস্থ হয়েছেন কবির মোল্লা।
পুলিসের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে রাজীবকে হেফাজতে নিয়ে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার কাছ বেশ কয়েকজনের নাম ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে এসেছে। চক্রের অন্য়ান্য লোকজনকে ধরার জন্য সিআইডি ও ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।