৩০ বছর ধরে শিকলে বন্দি! শেষমেশ মুক্তির স্বাদ পাচ্ছে চিড়িয়াখানার এই হাতি

৩০ বছরের বেশি সময় ধরে শিকলে বাঁধা থাকায় কাভানের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল।

Updated By: Aug 20, 2020, 07:33 PM IST
৩০ বছর ধরে শিকলে বন্দি! শেষমেশ মুক্তির স্বাদ পাচ্ছে চিড়িয়াখানার এই হাতি

নিজস্ব প্রতিবেদন- একটা-দুটো দিন নয়। ৩০ বছর ধরে বন্দি। খোলা হাওয়া কী! স্বাধীনতা কাকে বলে! এসব কিছুই জানে না সে। সারাদিন তার পায়ে লোহার শিকল বাঁধা থাকত। জীবনের তিরিশটা বছর কাভানের এভাবে শিকলে বাঁধা অবস্থাতেই কেটেছে। কাভান একটি হাতি। এতদিন তার ঠিকানা ছিল পাকিস্তানের ইসলামাবাদে চিড়িয়াখানা। সেথানেই জীবনের বেশিরভাগ সময়টা সে পরাধীন থেকে কাটিয়ে দিল। তবে দেরি করে হলেও জীবনে সুসময়ের মুখ দেখবে সে। এবার নতুন ঠিকানা হয়েছে তার।

৩০ বছরের বেশি সময় ধরে শিকলে বাঁধা থাকায় কাভানের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তার প্রতি এই অবিচার কেন, প্রশ্ন তুলেছিলেন বহু পশুপ্রেমী। বিনা দোষে কেন কাভানকে এমন শাস্তি দিচ্ছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ! তা নিয়ে একাধিক পশুপ্রেমী সংগঠন প্রশ্ন তুলেছিল। চিড়িয়াখানায় যাতে দর্শনার্থীদের ভিড় থাকে সেই জন্য হাতিটির উপর নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। হাতিটির খাবার-দাবারের উপরও ছিল কর্তৃপক্ষের চরম ঔদাসিন্য। ফলে দিনের পর এভাবে থাকতে থাকতে কাভান মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েছে। বছরের পর বছর ধরে শুধু অবহেলা আর অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে কাভানকে।

আরও পড়ুন- ১৩ বছর বয়সেই গর্ভবতী! সন্তানের জন্ম দিয়ে মায়ের দাবি, শিশুর বাবার বয়স ১০

কয়েক বছর আগে কাভানের সঙ্গীনি মারা যায়। তার পর থেকে তার অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে। কাভান শারীরিক ও মানসিকভাবে রুগ্ন হতে থাকে। তখন থেকেই তাকে মুক্তি করার দাবিতে পিটিশন দায়ের করতে থাকে পশুপ্রেমীরা। এর পর সেই সব পিটিশনের ভিত্তিতে মে মাসে আদালত ওই হাতিকে মুক্তির নির্দেশ দেয়। আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়, কাভানকে যেন কোনো অরণ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়। যাতে সে মুক্তির স্বাদ পায়। এমন জায়গায় তাকে ছাড়তে হবে যেখানে খাবার ও জলের সরবরাহ থাকবে। আর সেই নির্দেশ মেনে এবার কাভানকে কম্বোডিয়ার ২৫০০০ একর বিশাল পশু সংরক্ষণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে পাকিস্তানের শেষ এশিয়ান হাতি কাভান। আর তাই সে ছিল পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। তাই তাকে দেখতে ভিড় জমে থাকত। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের উপার্জন হত। আর মানুষের পকেট ভরানোর জন্য নিরীহ হাতিটির জীবনের এতগুলো মূল্যবান বছর কাটল নরকযন্ত্রণায়।  

.