যুদ্ধবিধ্বস্ত অ্যালেপ্পোতে এখন শুধুই শান্তির খোঁজ!

শেষ হয়েও শেষ হচ্ছে না অ্যালেপ্পোর যুদ্ধ। যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা থেকে লোক সরানো সম্পর্কে নতুন করে শর্ত দিয়েছে ইরান। শর্ত মানতে নারাজ আসাদ-বিরোধী বিদ্রোহীরা। আবার তুরস্কের অভিযোগ, শর্ত ভাঙছে আসাদের বাহিনী। ফলে নতুন করে বিমান হানা শুরু অ্যালেপ্পোয়। চলছে মর্টার হানাও।

Updated By: Dec 14, 2016, 09:53 PM IST
যুদ্ধবিধ্বস্ত  অ্যালেপ্পোতে এখন শুধুই শান্তির খোঁজ!

ওয়েব ডেস্ক : শেষ হয়েও শেষ হচ্ছে না অ্যালেপ্পোর যুদ্ধ। যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা থেকে লোক সরানো সম্পর্কে নতুন করে শর্ত দিয়েছে ইরান। শর্ত মানতে নারাজ আসাদ-বিরোধী বিদ্রোহীরা। আবার তুরস্কের অভিযোগ, শর্ত ভাঙছে আসাদের বাহিনী। ফলে নতুন করে বিমান হানা শুরু অ্যালেপ্পোয়। চলছে মর্টার হানাও।

বাতাসে বারুদের গন্ধ। গোলাগুলির শব্দে কেঁপে উঠছে চারপাশ। বিপদ আকাশ পথেও। ঝাঁকে ঝাঁকে যুদ্ধবিমান থেকে ধেয়ে আসছে বোমা। এটাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার ছোট্ট শহর অ্যালেপ্পোর রোজনামচা। কার্যত বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে অ্যালেপ্পো।

দুঃস্বপ্নের শুরু সেই ২০১২ থেকে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার অল আসাদের অপসারণের দাবিতে শুরু হয় বিদ্রোহী অভিযান। অ্যালেপ্পোর দখল নেয় বিদ্রোহীরা। সরকার বনাম বিদ্রোহীদের লড়াইয়ের জাঁতাকলে দমবন্ধ অবস্থা অ্যালেপ্পোর। মাসখানেকের যুদ্ধে অ্যালেপ্পোর অনেকটাই দখলে নিয়েছে সিরিয়ার সেনা। কিন্তু পূর্ব অ্যালেপ্পোয় জমি আঁকড়ে পড়েছিল বিদ্রোহীরা। বিদ্রোহীদের অত্যাচার ছিলই। সেনা অভিযানে দুর্দশা আরও বেড়েছে। পদে পদে বিপদ। মাথার ওপর ছাদ নেই। নিজের শহরেই শরণার্থী। খাবার নেই, জল নেই। ডাক্তার-ওষুধ তো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবুও প্রাণভয়ে কুঁকড়ে থাকা মানুষগুলি মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিলেন। বিদ্রোহী ঘাঁটিতে চূড়ান্ত আঘাত হানার প্রস্তুতি শেষ। ঠিক হয়েছিল তার আগে পূর্ব অ্যালেপ্পোর সাধারণ মানুষ এবং আহত বিদ্রোহীদের  উদ্ধার করা হবে। রাশিয়া এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় এই শর্তে রাজিও হয় সিরিয়া সরকার। মুক্তির আশায় আশপাশের এলাকা থেকে পিলপিল করে মানুষ জড়ো হয়েছিলেন অ্যালেপ্পোয়। শহরের বাইরে তৈরি ছিল বাস। ফেরিঘাটে তৈরি ছিল বোট। অপেক্ষা বুধবার ভোরের আলো ফোটার।

বুধবারের ভোর কিন্তু অ্যালেপ্পোর অন্ধকার দুর করতে পারেনি। সূর্যোদয়ের কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হল শেলিং। আকাশপথে ধেয়ে আসে যুদ্ধবিমান। ফের লড়াই শুরু। অ্যালেপ্পোর পাশাপাশি কয়েকটি গ্রাম থেকে আহতদের উদ্ধারের দাবি তোলে ইরান। বন্ধু দেশের সেই শর্ত ঠেলতে পারেনি সিরিয়া। ফলে ভেস্তে যায় সংঘর্ষবিরতি। ফলে অ্যালেপ্পোয় আটকে পড়েন দেড় লক্ষ নিরীহ মানুষ। উদ্ধার কাজ ভেস্তে যাওয়ায় সিরিয়াকেই দায়ী করেছে তুরস্ক। নতুন করে শান্তি আলোচনার দাবি তুলেছে চিন। শুরু হয়েছে কূটনৈতিক চাপানউতোর। কিন্তু তাতে কিছু যায় আসে না অ্যালেপ্পোর। উদ্ধার দুরস্ত। অসহায় মানুষগুলি এখন বৃষ্টির প্রার্থনা করছেন। বৃষ্টি নামলে যুদ্ধবিমান উড়বে না। বৃষ্টি নামলে শেলিং-ও হবে। মুক্তি না হোক, কিছুক্ষণের জন্য রেহাই তো মিলবে।

.