West Midnapore: সরকারি পরিষেবা পাইয়ে দলের কর্মীর কাছেই কাটমানির দাবি, অভিযুক্ত তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি

জেলা শাসকের কাছে তাঁর আর্জি এই ১৩০০০ টাকা নিয়ে তিনি কোনও পোল্ট্রি ফার্ম করতে পারবেন না তাই সেই টাকা ফেরত নেওয়া হোক। এই ঘটনার প্রতিবাদ করে ওই মহিলার পাশে দাঁড়ানোয় লক্ষ্মী শীটেরর কাছে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে দাবি করলেন নারায়ণগড় পঞ্চায়েত সমিতির ১ নম্বর অঞ্চলের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ সুকমলা বেরার। তিনি বলেন দলের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে এই ধরনের নেতাদের আচরণে। অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।

Updated By: Apr 26, 2023, 04:11 PM IST
West Midnapore: সরকারি পরিষেবা পাইয়ে দলের কর্মীর কাছেই কাটমানির দাবি, অভিযুক্ত তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি
নিজস্ব চিত্র

চম্পক দত্ত: এবার দলেরই কর্মীকে সরকারি পরিষেবা পাইয়ে দিয়ে অর্ধেক টাকা কাটমানি হিসেবে নেওয়ার অভিযোগ উঠল নারায়ণগড়ের মকরামপুরে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মী সিটের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি জোর করে বিলাসী সিং-এর কাছ থেকে পোলট্রি ফার্ম করার জন্য সরকারি সাহায্যে পাওয়া ২৮ হাজার টাকার মধ্যে ১৫ হাজার টাকা বুথ সভাপতি দীপক দে মারফত নিয়েছেন। এই বিষয়ে পুলিস, স্থানীয় বিধায়ক এবং দলের নেতৃত্বেকে জানিয়েও কোনও সুরাহা না মেলায় জেলা শাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই মহিলা।

জেলা শাসকের কাছে তাঁর আর্জি এই ১৩০০০ টাকা নিয়ে তিনি কোনও পোল্ট্রি ফার্ম করতে পারবেন না তাই সেই টাকা ফেরত নেওয়া হোক। এই ঘটনার প্রতিবাদ করে ওই মহিলার পাশে দাঁড়ানোয় লক্ষ্মী শীটেরর কাছে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে দাবি করলেন নারায়ণগড় পঞ্চায়েত সমিতির ১ নম্বর অঞ্চলের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ সুকমলা বেরার। তিনি বলেন দলের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে এই ধরনের নেতাদের আচরণে। অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।

জানা গিয়েছে নারায়ণগড় ব্লকের মকরামপুর পঞ্চায়েতের নয়াপুকুরের বাসিন্দা বিলাসী সিংহ গত ৬ ফেব্রুয়ারি ২৮ হাজার টাকা পেয়েছিলেন পোল্ট্রি ফার্ম করার জন্য সরকারি সাহায্য হিসেবে। অভিযোগ সেই টাকা থেকে ১৫০০০ টাকা কাটমানি হিসেবে দিতে হয়েছে স্থানীয় তৃণমূলের বুথ সভাপতি দীপক দের অ্যাকাউন্টে। বাকি ১৩ হাজার টাকা নিয়ে এসে ফেরত নেওয়ার আবেদন জানালেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাসককে।

আরও পড়ুন: Malda: মালদার স্কুলে বন্দুকবাজের হামলা, 'পণবন্দি' পড়ুয়ারা!

ওই মহিলা ও তার স্বামী বাদল পাল বলেন সরকারিভাবে পোল্ট্রি ফার্ম করার জন্য ২৮ হাজার টাকা অ্যাকাউন্টে ঢোকে তারপরেই নয়াপুকুরের তৃণমূলের বুথ সভাপতি দীপক দের একাউন্টে ১৫০০০ টাকা দিতে হয়েছে অঞ্চল সভাপতির কথামতো। তাদের আরও অভিযোগ অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত সিট ও দীপক দে তাদেরকে টাকা দিতে চাপ দেন। ডেকে পাঠিয়ে অর্ধেক টাকা দিতে হবে বলেন দুই দিনের মধ্যে। তারা বলেন দিতে রাজি না হওয়ায় হুমকিও দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য বিলাসী সিং এর স্বামী বাদল পাল নয়াপুকুর তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির সদস্য এবং মোহনভাঙ্গা গ্রাম কমিটির সভাপতি। বাদল পাল বলেন পুরোপুরি জঙ্গল রাজ চলছে। শুধু তার স্ত্রীকে নয় বাকি যারা উপভোক্তা তাদের সবাইকেই টাকা দিতে হয়েছে। এই লক্ষী সিট বালি-মোরাম  বিক্রি থেকেও টাকা তোলে।

তার আক্ষেপ তিনি তৃণমূল করেন দীর্ঘদিন থেকে। তৃণমূলকে তিনি ভালোবাসেন। অথচ তাকেও হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। ১৩০০০ টাকা নিয়ে বদনামের ভাগীদার না হতে চাওয়াতেই এই টাকা ফেরত দিতে এসেছি জেলা শাসককে।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মী সিট ফোনে জানান, আমি এই বিষয়ে কিছুই জানিনা। আমরা বিষয়টি জানতে পারার পরেই অ্যাকাউন্টে টাকা ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি এবং দল থেকে দীপক দে কে সাসপেন্ড করেছি। আমার সঙ্গে বিলাসী সিং অথবা তার স্বামীর আজ পর্যন্ত কোনও দিন দেখা হয়নি বা কথা হয়নি।

এই নিয়ে তৃণমূলের বুথ সভাপতি দীপক দে বলেন, আমার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে আমার বিরুদ্ধে দলেরই লোক চক্রান্ত করেছে।

আরও পড়ুন: ধৃত আলকায়দা জঙ্গির হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে মিলল স্কেচ! গোয়েন্দাদের হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য

গোটা বিষয় নিয়ে তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, নারায়ণগড় বিধানসভার এলাকার মকরামপুরে একটা ঘটনা ঘটেছে, এই খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওখানকার বিধায়ক এবং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সঙ্গে সঙ্গেই বুথের নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করে দিয়েছে। এবং ওখানকার অঞ্চল সভাপতিকেও ভৎসনা করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘এইসব মদত দেওয়া চলবে না। এইসব মদত দিলে দল কঠোরতম ব্যবস্থা নেবে। আমরা স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীদের কে বলে দিচ্ছি যে বা যারা কেউ যদি আপনার কাছে কোন স্কিম দেওয়ার নাম করে কোন অর্থ চায় তাহলে তাকে কেউ টাকা দেবেন না। দলের এটা নীতি নয় সরকারের এটা নীতি নয়। সরকার এবিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেবে। ওই অঞ্চলে এর আগেও বেশ কয়েকটা অভিযোগ এসেছিল সেগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আমাদের স্থানীয় বিধায়ক ও ব্লক তৃণমূল নেতৃবৃন্দ তারা এই তদন্ত করে দেখছে। তদন্ত করার পর যদি সেরকম কোনো গভীর অভিযোগ বা তার সত্যতা প্রমাণ হয় তাহলে কোন নেতা তার থেকে ছাড় পাবে না এটা নিশ্চিত জেনে রাখুন’।

এই ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক গৌরীশংকর অধিকারী বলেন, ‘এটা তৃণমূলের কালচার। এমন একটা পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে যে তারা নিজেদের দলের লোকের কাজ করে দিতে গেলেও কাটমানি চায়। জীবনকৃষ্ণ সাহার ক্ষেত্রে দেখেছেন বাবার কাছ থেকেও কাটমানি খেয়েছিল। নেতারা যদি নিজের বাবাকে না ছাড়ে এরা সাধারণ কর্মীর কাছ থেকে টাকা নেবে এটাই তো স্বাভাবিক বিষয়। কাটমানি মানে তৃণমূল, তৃণমূল মানে কাটমানি’।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

 

.