রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ১ টাকা অনুদানে শুরু হয়েছিল নবদ্বীপের রাস

কৃষ্ণচন্দ্র সবধর্মের প্রতি সমান মনোভাব পোষণ করলেও শক্তি আরাধনার পক্ষপাতী ছিলেন।

Updated By: Nov 19, 2021, 04:40 PM IST
রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ১ টাকা অনুদানে শুরু হয়েছিল নবদ্বীপের রাস

অনুপ দাস

আজ রাসপূর্ণিমা। শুরু হয়ে গেল নবদ্বীপের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব। সেজে উঠেছে মহাপ্রভু চৈতন্যদেবের শহর। নবদ্বীপে রণকালী, বামাকালী, মহানিশা-সহ বেশ কিছু শাক্তপ্রতিমার পুজো হয় রাসে। নবদ্বীপে রাস উৎসব বৈষ্ণব, শাক্ত ও শৈবমতে হয়। এ সময় এখানে বিভিন্ন দেব-দেবীর পুজো হয়।

স্থানীয় ভাষায় যাকে 'আড়ং' রাস কার্নিভাল বলে কোভিডের কারণে তা অনুষ্ঠিত হবে না এবার। অধিকাংশ পুজামণ্ডপে প্রতিমা ও আলোকসজ্জার প্রস্তুতি শেষ। উৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন মঠ-মন্দিরগুলি আলোকসজ্জায় সেজে উঠেছে। দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেছেন শহরে। বৈষ্ণব, শাক্ত এবং শৈব মতে নবদ্বীপে মোট ৩৬৮টি পুজো হচ্ছে এবার।

পুরাতত্ত্ব পরিষদের তরফে শান্তিরঞ্জন দেব এখানকার রাস-তত্ত্ব ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, নবদ্বীপ যেমন বৈষ্ণবতীর্থ, তেমন প্রাচীনকাল থেকে নবদ্বীপ শাক্ততীর্থও। এখানকার তন্ত্রচর্চা এবং শাক্তচর্চা পাওয়া গেছে বৌদ্ধদের কাছ থেকে। ১৬০৫ সালে নবদ্বীপে জন্মালেন আগমবাগীশ। তিনিই বাংলায় শক্তির আরাধনা প্রচলন করেছিলেন। 

নবদ্বীপের পুরোহিতরা বিভিন্ন পুজো করতে চলে যেতেন অন্যত্র। দুর্গা,লক্ষ্মী, দীপান্বিতা পুজো করে নবদ্বীপে ফিরতেন তাঁরা। এবার তাঁদের নিজেদের বাড়িতেও পুজো করা দরকার চিন্তা করে তাঁরা তাঁদের ইষ্টদেবীর পুজো বাড়িতে শুরু করলেন ঘটেযন্ত্রে। মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় ১৭২৮ সালে রাজা হলেন। কৃষ্ণচন্দ্র সবধর্মের প্রতি সমান মনোভাব পোষণ করতেন। যদিও তিনি শক্তি আরাধনার পক্ষপাতী ছিলেন। নবদ্বীপের পুরোহিতেরা যজমানি করে বাড়ি ফিরে কার্তিক পূর্ণিমার দিনে যখন পুজো শুরু করলেন, পুজো দেখে খুশি হলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। তিনি বলেন, এবার মূর্তি তৈরি করে পুজো করলে তিনি অনুদান দেবেন। তিনি ১ টাকা করে অনুদান দিলেন। সেই অনুদান পেয়ে সোৎসাহে পুজো শুরু করলেন পুরোহিতেরা। এইভাবেই ১৭৫২ সালে রাসপূর্ণিমায় বাড়িতে মূর্তি তুলে পুজো শুরু হল নবদ্বীপে।

একবার, সময়টা ১৭৫৬ সাল, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ঘোষণা করলেন, সব মূর্তি নবদ্বীপে পোড়ামাতলায় জড়ো করতে। তিনি পুরস্কার দেবেন। সেই মতো সেখানে জড়ো হল সবাই। প্রতিমাশিল্পী, মৃৎশিল্পী, সাজশিল্পী-সহ সকলকে পুরস্কার দিলেন। বিকেলে শোভাযাত্রা করে গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়া হল সেইসব প্রতিমা। ১৮০০ সালের পর থেকে নবদ্বীপের এই রাসপুজোর চরিত্রে বদল ঘটল।

(Zee 24 Ghanta App: দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)

আরও পড়ুন: Bankura: বাড়িতে কেন মনসা পুজো? 'একঘরে' গোটা পরিবার! রেহাই পেলেন না আত্মীয়রাও

.