বিমল গুরং মামলায় 'সুপ্রিম' জয় রাজ্যের
"এক বিজেপি মন্ত্রী ও বিমল গুরুং" মিলে বাংলা ভাগের ষড়যন্ত্র করছিল, তোপ বিশিষ্ট আইনজীবী ও তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
নিজস্ব প্রতিবেদন : বিমল গুরুং ইস্যুতে বড় জয় রাজ্যের। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের 'যথাযথ তদন্ত' চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন বিমল গুরুং। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে গেল গুরংয়ের সেই আবেদন। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিল রাজ্যের তদন্তে এখনও পর্যন্ত কোনও ত্রুটি নেই।
২০১৭ সালের ৮ জুন দার্জিলিংয়ের রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক চলাকালীনই আগুন জ্বলে ওঠে পাহাড়ে। গা ঢাকা দেন গুরং। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এরপরই সিংলার জঙ্গলে গুরুংকে ধরতে অপারেশনে গিয়ে মোর্চা সমর্থকদের গুলিতে মৃত্যু হয় সাব ইন্সপেক্টর অমিতাভ মালিকের। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে মোর্চা কর্মী-সমর্থকদের একের পর এক জঙ্গি আন্দোলনে ৮ মাস ধরে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় পাহাড়ের জনজীবন।
আরও পড়ুন, চামড়ার বিরল জটিলতা নিয়ে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে জন্ম শিশুর, পরে মৃত্যু
পাহাড়ে অশান্তি ছড়ানোর একাধিক ঘটনায় বিমল গুরুংকে মূল অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করে মামলা শুরু করে রাজ্য সরকার। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান বিমল গুরুং। যাবতীয় মামলা সিবিআইকে দেওয়ার দাবি জানান তিনি। বিমল গুরুংয়ের যুক্তি ছিল, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাজ্যের হাতে থাকলে মামলার যথাযথ তদন্ত হবে না।
যার পাল্টা হিসেবে রাজ্য সরকার আদালতে জানায়, কোনও অভিযুক্ত কখনওই কে মামলার তদন্ত করবে তা স্থির করতে পারে না। একাধিক মামলায় অভিযুক্ত গুরুংকে কোনওভাবেই ক্লিনচিট দেওয়া সম্ভব নয়। পাশাপাশি রাজ্যের যুক্তি ছিল, সিবিআই কেন্দ্রীয় সংস্থা। অন্যদিকে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা কেন্দ্রে এনডিএ-র শরিক। ফলে মামলা প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।
আরও পড়ুন, নামেই জেলা সভাপতি শোভন? ভোটের দায়িত্ব সামলাবেন সুব্রত বক্সী
এদিন গুরুংয়ের দাবি খারিজ করে রাজ্যের হাতেই যাবতীয় মামলার দায়িত্বভার ন্যস্ত রাখল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত এদিন স্পষ্ট জানায়, এখনও পর্যন্ত রাজ্যের তদন্তে কোনও ত্রুটি নেই। তদন্ত প্রক্রিয়া যথাযথভাবেই এগোচ্ছে। আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বিশিষ্ট আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন, ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার কৌস্তুভ রায় ও শিবাজি পাঁজা
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "এটা রাজ্যের জয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নৈতিক অবস্থানের জয়।" বিমল গুরুংয়ের মত একজন 'অপরাধমনস্ক' ব্যক্তি কোনওভাবেই দেশের শীর্ষ আদালত থেকে 'রক্ষাকবচ' পেতে পারেন না বলে সাফ জানান তিনি। একইসঙ্গে তোপ দাগেন, "এক বিজেপি মন্ত্রী ও বিমল গুরুং" মিলে বাংলা ভাগের ষড়যন্ত্র করছিল, তা ব্যর্থ হয়েছে।