গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ, গ্রেফতার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজারসহ ২

এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখতে পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। ধৃতদের  আজ  বসিরহাটের মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিন পুলিসি হেফাজাতে রাখার  নির্দেশ দেন। 

Updated By: Dec 18, 2020, 04:33 PM IST
গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ, গ্রেফতার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজারসহ ২
নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন: জাল নথি দিয়ে গ্রাহকদের কোটির কোটি টাকা আত্মসাদের অভিযোগ। ঘটনায় একটি রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাঙ্কের ম্যানেজারসহ দু-জনকে গ্রেফতার করল বসিরহাট থানার পুলিস। এ বিষয়ে বসিরহাট থানার আই সি সুরিন্দার সিং বলেন, "এখনও পর্যন্ত গ্রাহকদের জমা রাখা প্রায় ৭০ লাখ টাকা প্রতারণার অভিযোগে পূর্বতন এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, বর্তমানে ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের ইটিন্ডা শাখার ম্যানেজার সাঁইপালার বাসিন্দা সাগ্নিক জোয়ারদার এবং ব্যাঙ্ক সংলগ্ন কিয়স্কের কর্মী মুকুন্দকাটি গ্রামে বাড়ি চুনিলাল সিংহকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখতে পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। ধৃতদের  আজ  বসিরহাটের মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিন পুলিসি হেফাজাতে রাখার  নির্দেশ দেন। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ওই ব্যাঙ্কে এককালিন জমা রাখা ৮ লাখ টাকার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয় ইটিন্ডার বাসিন্দা তথা ওই ব্যাঙ্কের গ্রাহক অনন্ত্ব পালের। তিনি ব্যাঙ্কে গেলে জানতে পারেন তাকে দেওয়া নথি জাল। ঘটনাটি জানাজানি হলে গ্রাহকেরা ওই ব্যাঙ্কের সামনে গিয়ে টাকা ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান।

আরও পড়ুন: নিজেরা বানাতে পারেননি, রাজ্যের থেকে নেতা ধার নিচ্ছে BJP: কাকলি ঘোষ দস্তিদার

খবর পেরে বসিরহাট থানার পুলিস ঘটনাস্থলে যায়। পুলিসের দাবি প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, এককালিন টাকা রাখা অর্থাৎ যাঁরা ফিকসড ডিপোজিট করেছেন মূলত তাঁদের জাল নথি দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, এই কাজ করেছে ব্যাঙ্কের ম্যানেজার সাগ্নিক জোয়ারদার এবং ব্যাঙ্ক সংলগ্ন কিয়স্কের দায়িত্বে থাকা চুনিলাল সিংহ। পুলিস তাঁদের আটক করে ব্যাঙ্ক এবং কিয়স্কের প্রযোজনীয় নথি সিল করে দেয়।

গ্রাহক আব্দুল রজ্জাক মণ্ডল বলেন,"মেয়ের বিয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা ফিক্সড করেছিলাম। এখন শুনছি আমাদের দেওয়া সাটিফিকেট সব জাল। আলেয়া বিবি লুথফর রহমানরা বলেন স্থানীয় ইটিন্ডা,গাছা, পানিতর, আখাড়পুর, মুকুন্দকাটি গ্রামের কয়েকশো মানুষ কেউ এক, কেউ দু-লক্ষ কেউ বা তার থেকে বেশি টাকা ওই ব্যাঙ্কে ফিক্সড করে রেখেছিলেন। এখন মেযাদ উত্তীর্ণ হওয়ায় টাকা তুলতে এসে দেখা যাচ্ছে সকলকে জাল নথি দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীতে BJPর পোস্টার ঘিরে 'নিন্দা'! 'তৃণমূলের পূর্বপরিকল্পিত কাজ' পাল্টা অনুপমের

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিসের দাবি,একটা বড় চক্র এই ঘটনার সাথে জড়িয়ে আছে বলে মনে করা হচ্ছে। কেউ ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট করতে আসলে ম্যানেজার ফ্রম ফিলাপের জন্য কিয়স্কে (ব্যাঙ্কের সেবা কেন্দ্রে) চুনিলালের কাছে পাঠিয়ে দিত। ফ্রম ফিলাপের নামে গ্রামের গরিব এবং কম শিক্ষিক মানুষের পাশ বইয়ে নিজের পাশবইয়ের নম্বর দিয়ে দেওয়া হত। জাল সাটিফিকেট দেওয়া হত। 

গ্রাহকদের ফিক্সড ডিপোজিটের টাকা ব্যাঙ্কে না রেখে বেশি সুধের বিনিময়ে বড় ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হত। সীমান্তবর্তী এলাকায় হাওলায় ১৫-২০ পারসেন্ট সুধে গ্রাহকদের টাকা খাটানো হত। এর মধ্যে কারও ফিক্সডের টাকা মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে তার কাছ থেকে সাটিফিকেট নিয়ে নগদে টাকা দিয়ে দেওয়া হত বলে ম্যানেজার এবং কিয়স্ক কর্মীর সড়যন্ত্র বোঝা যেত না।

.