Snake In Khichuri: অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের খিচুড়িতে মরা সাপ! তা-ই খেল শিশুরা, ভয়ঙ্কর ঘটনা জামালপুরে
বিডিও জানান,“অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সবাইকে শো-কজ নোটিস ধরানো হয়েছে। শো-কজের উত্তর সন্তোষজনক না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অরূপ লাহা: সাপ (Snake) সহ খিচুড়ি (Khichuri) রান্না হল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে (ICDS)! তা খেয়ে ফেলায় শিশুদের নিয়ে হাসপাতাল ছুটলেন মায়েরা। শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের পুষ্টির জন্য অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্র থেকে দেওয়া হয় রান্না করা খাবার। সেই খাবারের মধ্যে যে সাপ থাকবে! এমনটা ভাবা বোধহয় সকলের কল্পনারও অতীত। কিন্তু বাস্তবেই বুধবার সাপ সহ খিচুড়ি রান্না হয় পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) জামালপুর ব্লকের বাগকালাপাহাড় গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। আর ওই খিচুড়ি খায় শিশুরা।
তারপরই ভয়, আতঙ্ক ঘিরে ধরে। চিকিৎসার জন্য দুপুরেই ছয় শিশুকে নিয়ে যাওয়া হয় জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। এই ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়েই ব্লকের বিডিও ও সিডিপিও জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছুটে যান। শিশুদের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। এমন ঘটনা কীভাবে ঘটল ইতিমধ্যেই তার তদন্ত শুরু করেছে ব্লক প্রশাসন। জামালপুর ব্লকের পাড়াতল ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম বাগকালাপাহাড়। শিশু ও গর্ভবতী মিলিয়ে ওই গ্রামের ১৩৬ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে পুষ্টিদায়ক খাবার পাওয়ার জন্য ৫৪ জনের নাম নথিভুক্ত রয়েছে। তাঁরা মূলত খোরদোপলাশি, কাঠালডাঙা ও বাগকালাপাহাড় গ্রামের বাসিন্দা। অন্যান্য দিনের মতো বুধবারও ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খিচুড়ি রান্না হয়। বেলা ১০টার মধ্যে রান্না শেষ হলে শিশু ও গর্ভবতীরা সেই খিচুড়ি নিয়ে বাড়িতে চলে যান। ঘরে বসে খিচুড়ি খেতে গিয়ে এক শিশুর অভিভাবকের চোখ কপালে ওঠে।
দেখা যায়, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে দেওয়া গরম খিচুড়ির মধ্যে একটি মরা সাপের বাচ্চা! দেখেই ওই শিশু ও তার পরিবারের লোকজন আঁতকে ওঠেন। তাঁরাই ছুটে গিয়ে গ্রামের অন্য শিশুদের পরিবার ও গর্ভবতীদের বিষয়টি জানান। খিচুড়ি না খাওয়ার জন্য বলেন। ততক্ষণে যে শিশুরা খিচুড়ি খেয়ে ফেলেছিল, তাদের অভিভাবকরা ঘটনার কথা জেনে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। ভয়ে, আতঙ্কে শারীরিকভাবে অসুস্থ অনুভব করতে শুরু করে শিশুরা। তারপর দুপুরেই তাদের জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা শিশুদের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখেন। বেশ কিছু সময় তাদের পর্যবেক্ষণে রাখেন। তারপর তাদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দিদিমণি জ্যোৎস্না ঘোষ বলেন, খিচুড়ি রান্না করার সময়ে তাতে একটা সাপের বাচ্চা কখন পড়ে যায়? তা কারোর নজরে আসেনি। সাপ শুদ্ধু খিচুড়ি রান্না হয়ে যাওয়ার পর সেন্টারের শিশু ও প্রসূতিদের তা বিতরণও করে দেওয়া হয়। এক শিশু বাড়িতে গিয়ে খিচুড়ি খাওয়ায় সময় তাতে সাপ দেখতে পায়। ওই শিশু ও তার পরিবার থালা সমেত ওই খিচুড়ি সেন্টারে নিয়ে এসে দেখায়। তখন তিনিও দেখেন যে, খিচুড়িতে আস্ত একটা মরা সাপের বাচ্চা রয়েছে। আট জন শিশু ওই খিচুড়ি খেয়ে ফেলেছিল। তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকিদের খিচুড়ি খেতে বারণ করা হয়।
জামালপুরের বিএমওএইচ ঋত্বিক ঘোষ বলেন, শিশুদের তেমন কোনও অসুস্থতা দেখা যায়নি। তবুও ছয় শিশুকে বেশ কিছু পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। এদিকে এতবড় ঘটনা ঘটলেও জামালপুর ব্লকের সিডিপিও সুশোভন রায় মুখে কার্যত কুলুপ এঁটে রয়েছেন। বিডিও শুভঙ্কর মজুমদারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,“শিশুদের বড় কোনও বিপদ হয়নি এটাই রক্ষে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সবাইকে শো-কজ নোটিস ধরানো হয়েছে। শো-কজের উত্তর সন্তোষজনক না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও পড়ুন, Nadia: বাবার কাছে নতুন মোবাইলের আবদার, ১০ দিন অপেক্ষা করতে বলতেই আত্মঘাতী ছাত্রী