হংসগেড়িয়া কালী মন্দিরেই পিশাচ সাধনার শিক্ষা লাভ হয় বামাক্ষ্যাপার

 প্রচলিত আছে এই মন্দিরে তপস্যা সাধনার পর  গুরু কৈলাস পণ্ডিতের সংস্পর্শে আসেন  সাধক বামাক্ষ্যাপা। তিনি প্রেতাত্মা পিশাচ সাধনার শিক্ষা লাভ করেন হংসগেড়িয়া কালীমন্দির থেকে। বেল,অশ্বথ্থ ও নিম গাছের তলায় থাকা পণ্ডিত কৈলাসের  পঞ্চমুণ্ডির আসনে সিদ্ধিলাভ করেন বামাক্ষ্যাপা।  

Updated By: Nov 6, 2018, 11:41 AM IST
হংসগেড়িয়া কালী মন্দিরেই পিশাচ সাধনার শিক্ষা লাভ হয় বামাক্ষ্যাপার

নিজস্ব প্রতিবেদন: হেতাল ভরা জঙ্গলে সাধকের সান্নিধ্যে পূজিত হন  হংসগেড়িয়া মহাশ্মশানের মা কালী। কথিত আছে জঙ্গলের মধ্য থেকে পাওয়া ২ ফুট পাথরের মা কালীর প্রথম পুজো করেন তান্ত্রিক কৈলাস পণ্ডিত। ভক্তের ভক্তি আর বিশ্বাস থেকে চলে আসছে হংসবেড়িয়া মহাশ্মশানের কালী আরাধনা। বছরের প্রতিদিনই কালী ভক্তের সমাগম থাকলেও,  হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে ভুতুরে অমাবস্যায়। প্রচলিত আছে এই মন্দিরে তপস্যা সাধনার পর  গুরু কৈলাস পণ্ডিতের সংস্পর্শে আসেন  সাধক বামাক্ষ্যাপা। তিনি প্রেতাত্মা পিশাচ সাধনার শিক্ষা লাভ করেন হংসগেড়িয়া কালীমন্দির থেকে। বেল,অশ্বথ্থ ও নিম গাছের তলায় থাকা পণ্ডিত কৈলাসের  পঞ্চমুণ্ডির আসনে সিদ্ধিলাভ করেন বামাক্ষ্যাপা।  পরে এখান থেকে চলে গিয়ে তারাপীঠে  মা তারার  প্রতিষ্ঠিত করেন । বামাক্ষ্যাপার পিশাচ সাধক গুরু কৈলাস পণ্ডিতের পঞ্চমুণ্ডি আসনে পুজোর পর হয় বুড়ো অমাবস্যায় হংসগেড়িয়ার দেবী চণ্ডীর  আরাধনা। 

আরও পড়ুন- বীরভূমের বামাকালী: পুজোর দিনই রং, চোখ আঁকা হয় পালা গানের পর

মগরাহাটের গোখুণ্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতে মধ্যে পড়ে হংসগেড়িয়া গ্রাম। দক্ষিণ সুন্দরবনের এই গ্রাম ছিল হেতাল, গড়ান, গেঁওয়া আর হিংস্র যত্তুভরা জঙ্গল। আদিগঙ্গা ভগীরথের তীরে বটগাছের কোঠরে বাস করতেন পণ্ডিত কৈলাস । জঙ্গল থেকে আবির্ভাব হয় পাথরের কালী মূর্তির। পরে ‘মা’ কৈলাস পণ্ডিতের হাত ধরেই প্রতিষ্ঠিত হন। এমনই মানুষের বিশ্বাস।

আরও পড়ুন- ল্যাঠা মাছ পোড়া আর মদ দিয়েই তৈরি হয় ডাকাত কালীর ভোগ

 বনসুন্দরী নিবাসি সনাম ধন্য ব্যক্তি সূর্যকুমার মণ্ডল ১৩৬৬ সালে নির্মাণ করেন ৬ ফুট উচ্চতার মা কালীর মূর্তি । নির্মিত হয় মন্দিরও। আজও নির্মিত মূর্তির পাশে বিরাজমান পাথরের ২ ফুট কালী। বর্তমানে তান্ত্রিক সেবায়েত উত্তম দাস দেখাশোনা করেন মন্দিরের।

শাস্ত্র মতে পুজো হয় না হংসগেড়িয়ার কালীর। ভুতুরে অমাবস্যায় প্রথমে পঞ্চমুণ্ডি আসনে পুজোর পর শুরু হয় দেবীর আরাধনা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভগীরথ গঙ্গা মজে গেলেও আজও আদি গঙ্গা থেকেই তোলা হয় জল ।

বেল গাছ, অশ্বথ্থ গাছ, নিম গাছ তিনটি গাছের নিচে থাকা পণ্ডিত কৈলাসের বেদিতে পুজোর পর শুরু হয় কালী আরাধনা। দৈনন্দিন পুজো হয় এখানে।  বলি প্রথা নেই এই মন্দিরে। পুজো ঘিরে উৎসব মুখর হয় গ্রামের মানুষ।  মনস্কামনা পূর্ণ করতে কেবল দক্ষিন সুন্দরবন নয়। হাজার হাজর ভক্তরা আসে হংসগেড়িয়া   মা  কালীর কাছে।

.