Raina Murder : সব্যসাচী খুনে নয়া মোড়, ৭ কিমি দূরে মিলল 'রহস্যজনক' কালো ব্যাগ!
ব্যাগের মধ্যে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, একটি মোবাইল চার্জার, একটি প্যান্ট, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও একটি ধারালো ছুরি বা ভোজালি ছিল।
নিজস্ব প্রতিবেদন : রায়নায় হাওড়ার ব্যবসায়ী সব্যসাচী মন্ডল খুনে নয়া মোড়। মাঠ থেকে উদ্ধার হল 'রহস্যজনক' একটি কালো ব্যাগ। যে ব্যাগের মধ্যে থেকে পাওয়া গেল ২টি পিস্তল, ৫ রাউন্ড গুলি, একটি ভোজালি ও একটি প্যান্ট। ইতিমধ্যেই এই খুনের ঘটনায় পারিবারিক সম্পত্তিগত বিবাদের জন্য সুপারি কিলার দিয়ে খুনের তত্ত্বের উপরই জোর দিয়েছে পুলিস। অভিযোগের আঙুল সব্যসাচী মন্ডলের কাকা গৌরহরি মন্ডল ও তাঁর দুই খুড়তুতো ভাই দীনবন্ধু ও সোমনাথ মন্ডলের দিকে। প্রাথমিক তদন্তে আরও উঠে এসেছে যে, ঝাড়খন্ড থেকে ভাড়া করে আনা হয়েছিল সুপারি কিলার।
জানা গিয়েছে, রায়নার উচিতপুর গ্রামের বাসিন্দা বিজন ঢালি তাঁর ধানের জমিতে প্রথম একটি কালো রঙের ব্যাগ দেখতে পান। ব্যাগটি বর্ধমান কাড়লাঘাট রোডের ধারে সেচখালের জলে পড়েছিল। বিজন ঢালির কথায়, ব্যাগের চেন খোলা ছিল। তিনি ব্যাগটি ধরে দেখেন সেটি বেশ ভারী। ব্যাগের উপরে একটি প্যান্ট ছিল পলিথিনে মোড়া। প্যান্টটি ব্যাগ থেকে বের করতেই দেখতে পান যে ভিতরে পিস্তল ভরা আছে। এরপরই তিনি গ্রামে ফিরে গিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য উৎপল মালিককে বিষয়টি জানান। পঞ্চায়েত সদস্য উৎপল মালিক তারপর থানায় ও মুগরা পঞ্চায়েতে বিষয়টি জানান। এরপরই রায়না থানার পুলিস গিয়ে ব্যাগটি জল থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এপ্রসঙ্গে মুগরা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিক্রম গুহ ও পঞ্চায়েত সদস্য উৎপল মালিক জানিয়েছেন, ব্যাগের মধ্যে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, একটি মোবাইল চার্জার, একটি প্যান্ট, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও একটি ধারালো ছুরি বা ভোজালি ছিল। দুটি পিস্তলের মধ্যে একটি ওয়ান শর্টার ও একটি সেভেনএমএম। এখন দেরিয়াপুর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে সেচখালের জলে ভাসছিল ব্যাগটি। স্বাভাবিকভাবেই ব্য়বসায়ী সব্যসাচীর খুনের সঙ্গে 'রহস্যজনক' এই ব্য়াগটির কোনও যোগসূত্র রয়েছে কিনা, তা ভাবাচ্ছে তদন্তকারী অফিসারদের।
ইতিমধ্যেই সিআইডির ৪ সদস্যের টিম সব্যসাচী মণ্ডলের দেরিয়াপুরের বাড়িতে গিয়েছে। পরিবারের দুই মহিলা সদস্যাকে শুক্রবার রাতের ঘটনা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। গ্রামে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেনসিক টিমও। বাড়ির সিঁড়ি ও ছাদের বিভিন্ন জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেনসিক টিমের সদস্যরা। পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে রক্তের নমুনাও সংগ্রহ করেন। টিমের সঙ্গে ছিলেন এসডিপিও (দক্ষিণ) আমিরুল ইসলাম খান।
আরও পড়ুন, Kailash Vijayvargiya : গণধর্ষণ মামলায় 'আপাত স্বস্তি' বিজয়বর্গীয় সহ ৩ বিজেপি নেতার
বর্তমানে সব্যসাচী মন্ডলের পরিবার থাকেন হাওড়ার শিবপুরে। সেখানে তাঁর ত্রিপলের ব্যবসা আছে। শুক্রবার সব্যসাচী মন্ডল তাঁর বন্ধু রাজবীর সিংকে নিয়ে রায়নায় গ্রামের বাড়ি দেরিয়াপুরে যান। রাতে বাড়ির ছাদে রান্না হচ্ছিল। সেইসময় সব্যসাচী মন্ডলের গাড়িচালক আনন্দ সাউ তাঁকে ছাদ থেকে নীচে নিয়ে যায়, 'কেউ ডাকছে বলে'। তারপরই সব্যসাচীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন তাঁর বন্ধু রাজবীর সিং ও রাধুনি পার্থ সাঁতরা।
রক্তাক্ত অবস্থায় সব্যসাচী মন্ডলকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে জানান। প্রাথমিক তদন্তের পর মনে করা হচ্ছে যে সব্যসাচী মন্ডলকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। সেইসঙ্গে মৃত্যু নিশ্চিত করতে গুলিও করা হয়েছে। কারণ মৃতের শরীরে গুলির চিহ্ন দেখেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এই ঘটনায় গাড়িচালক ও রাঁধুনি, দু'জনকেই আটক করেছে পুলিস।