আগামিকাল থেকেও শহরে পুরোপুরি স্বাভাবিক হচ্ছে না বাস-মিনিবাস পরিষেবা

অর্থসঙ্কট, বিমাসঙ্কট ও কর্মীসঙ্কটে ধুঁকছে পরিষেবা

Updated By: Nov 10, 2020, 03:20 PM IST
আগামিকাল থেকেও শহরে পুরোপুরি স্বাভাবিক হচ্ছে না বাস-মিনিবাস পরিষেবা

নিজস্ব প্রতিবেদন: নিজেদের কিছু সমস্যার কারণে আগামী কাল থেকে ১০০ শতাংশ পরিষেবা দিতে পারছে না রাজ্যের বাস, মিনিবাস, অটো, ট্যাক্সি সংগঠন। বিষয়টি তারা জানিয়ে রেখেছে রাজ্য পরিবহণ দফতরকে।

সাধারণত রাজ্যে মোট বেসরকারি বাস চলে ৩৬ হাজার। এর মধ্যে কলকাতায় চলে ৬০০০, জেলায় ৩০০০০টি। কলকাতায় মিনিবাস চলে ৮৫০টি, জেলায় ২৫০০টি। কলকাতায় ট্যাক্সি চলে ১২০০০টি। শহরের মোট ১২৫টি রুটে অটো চলে ৩০০০০টি, জেলায় ৫০০০টি।

কিন্তু আগামী কাল থেকে এই পূর্ণশক্তি নিয়ে জেলা বা শহরের পথে নামছে না বাস-মিনিবাস-অটো-ট্যাক্সি। তবে চলতি সময়ের তুলনায় কিছুটা স্বাভাবিক হবে পরিষেবা। 

আগামী কাল থেকে শহরে বেসরকারি বাস চলবে মোট সাড়ে ৩-৪ হাজারটি, জেলায় ৫০০০টি। কলকাতায় মিনিবাস চলবে ৩৫০টি, জেলায় ৫০০টি। ৫০০০টি ট্যাক্সি চলবে কলকাতার রাস্তায়। অটো চলবে শহরে ১৫০০০টি, জেলায় ১২০০টি।

কিন্তু কেন কাল থেকেই সম্পূর্ণ পরিষেবা দিতে পূর্ণশক্তি দিয়ে রাস্তায় নেমে পড়তে পারছে না বেসরকারি পরিবহণ?

এর অনেক কারণ আছে। বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলি মোটামুটি যা জানাচ্ছে তা হল, বাস মিনিবাস মালিকেরা ২০১৯-এর লোকসভা এবং বিধানসভা উপনির্বাচন বাবদ টাকা এখনও পায়নি। টাকাটা মিটিয়ে দেওয়ার কথা রাজ্য সরকারের।

সংগঠনের তরফে আরও জানানো হচ্ছে, ২৫ শতাংশ বাস-মিনিবাসের বিমার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। লকডাউনে তা নবীকরণ করা যায়নি। এখন সেই বাস নিয়ে রাস্তায় বেরোলেই পুলিশ মোটা টাকা জরিমানা করবে। বাস সংগঠনের তরফে আর্জি জানানো হয়েছে, যদি রাজ্য পরিবহণ দফতর আরটিওগুলির মাধ্যমে পুলিশকে আপাতত কেস দেওয়া থেকে বিরত রাখতে পারে এবং বিমা নবীকরণের সময়সীমা বাড়িয়ে তা আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত করতে পারে, একমাত্র তা হলেই বেশি বাস রাস্তায় নামানো সম্ভব। 

করোনাকালে অন্য একটি সঙ্কটও ঘনিয়েছে। লকডাউন এবং ক্রমাগত লোকসানের জেরে পেশা বদলে ফেলেছেন অনেক বাস শ্রমিকই। বাসচালক, খালাসি ও কন্ডাক্টরেরা পেশা পাল্টে ফেলায় হঠাৎ করে এই ক্ষেত্রে কর্মীও অনেক কমে গিয়েছে। ওই সব কর্মীকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়ে আবার পুরনো পেশায় ফিরিয়ে আনতে হবে। তবে সেটা করতে কমপক্ষে ১ মাস সময় লাগবে বলেই মত সংশ্লিষ্ট মহলের। ঘাটতি থাকা ম্যানপাওয়ার স্বাভাবিক না হলে ১০০ শতাংশ পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে না। 

এই সব সমস্যা ছাড়া অন্য সমস্যাও আছে। তা গণসচেতনতার সঙ্গে জড়িত। যেমন, বাসের ভিতরে সঠিক সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। ট্রেনের মতো বাসের সিটে 'ক্রস মার্কিং' করা সম্ভব কিনা, সেটাও প্রশ্ন। ট্রেন সরকারি পরিবহণ। সেখানে কিছু কিছু সুরক্ষাবিধি প্রয়োগ করা তুলনায় সহজ। বাসে যাত্রীরা জোর খাটাবেনই। তাই আপাতত পুরোপুরি পরিষেবা দিতে পারছে না তারা। 

তবে যেটুকু ম্যানপাওয়ার হাতে আছে, তাই দিয়েই সর্বোচ্চ পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলে নিশ্চিন্ত করেছে সংগঠনগুলি। তারপর ধাপে ধাপে পূর্ণশক্তির পরিষেবা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলবে।

আরও পড়ুন:  লোকাল চালুর আগের দিন, ট্রেন 'না চালানো' নিয়ে রাজ্যকে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ হাইকোর্টের

.