Uttarpara: হাতে স্যালাইনের চ্যানেল নিয়ে নর্দমা থেকে রোগীর 'বাঁচাও বাঁচাও' চিৎকার!

ওই রোগীর দাবি, তাঁকে উপর থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

Updated By: Nov 11, 2021, 04:54 PM IST
Uttarpara: হাতে স্যালাইনের চ্যানেল নিয়ে নর্দমা থেকে রোগীর 'বাঁচাও বাঁচাও'  চিৎকার!
নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন : নর্দমায় পড়ে রোগী! হাতে স্যালাইনের চ্যানেল, চিত্কার করছেন, "বাঁচাও বাঁচাও করে!" এমনই আজব ঘটনা ঘটেছে হুগলির উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। রোগীর চিত্কারে ছুটে এসে তাঁকে নর্দমা থেকে উদ্ধার করেন অন্য রোগীর পরিবারের লোকজন।

কিন্তু কী করে ওই রোগী নর্দমায় পড়লেন? এ প্রশ্নের কোনও স্পষ্ট উত্তর নেই। সবটাই ধোঁয়াশা। ওই রোগীর দাবি, তাঁকে নাকি খুনের চক্রান্ত করা হচ্ছে! তাই তাঁকে উপর থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। যদিও এই দাবি অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের স্পষ্ট কথা, কেউ ফেলে দেয়নি ওই রোগীকে। কিন্তু কী করে সে হাসপাতালের বাইরে গেল? তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কী হয়েছে আসল ঘটনা? খোলসা করা যাক। জানা গিয়েছে, উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ছিলেন বালি নিমতলা এলাকার এক ব্যক্তি। তাঁর মৃত্যু হলে, এলাকাবাসী দেহ নিতে আসে। হাসপাতালে যখন তাঁরা ঢুকছেন, সেইসময়ই তাঁরা শুনতে পান, কেউ একজন 'বাঁচাও, বাঁচাও' করে চিত্কার করছে। ওই দলেরই এক যুবক প্রশান্ত মন্ডল জানিয়েছেন, "হাসপাতালের পাশে নর্দমা থেকে সেই চিৎকার আসছিল। চিৎকার শুনে সেখানে গিয়ে দেখি, একজন নর্দমায় পড়ে রয়েছেন। তাঁর হাতে স্যালাইনের চ্যানেল করা। তারপর ওই রোগীকে তুলে নিয়ে আসি আমরা। কর্তব্যরত নার্সকে ডেকে আনি। তাঁকে আবার হাসপাতালের মেল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।"

আরও পড়ুন, Daspur Antrik: পরীক্ষায় মিলল ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া, পানের অযোগ্য সজলধারার জল

জানা গিয়েছে, ওই রোগীর নাম যদু দাস। মাখলার বাসিন্দা। পেটে যন্ত্রণা নিয়ে রবিবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবার। ছেলে রোহিত জানিয়েছে, "৯টার সময় বাবাকে ভর্তি করি। গতকাল রাতে খাবার দিয়ে দেখা করে আসি। এরপর আজ সকালে শুনি এই ঘটনা। কী করে কী হল বুঝতে পারছি না। বাবার শরীর খারাপ। তাও নার্সরা বলল, বাড়ি নিয়ে যেতে। বন্ডে সই করিয়ে ছুটি দিয়ে দিল। এদিকে পড়ে গিয়ে বাবার বাঁ পা ফুলে গিয়েছে। কেটে-ছড়ে গিয়েছে শরীরের বিভিন্ন জায়গা।"

ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় রাজনৈতিক টানাপোড়েনও শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল বোস বলেন, "একজন পেটে ব্যথা নিয়ে ভর্তি হল, আর তাঁকে পাওয়া গেল ড্রেনে। এ থেকেই বোঝা যায় চিকিৎসা ব্যবস্থার কী হাল!" অন্যদিকে, উত্তরপাড়া পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর, পুর প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য খোকন মন্ডল এই ঘটনার খবর পাওয়ার পর আজ যদু দাসের বাড়িতে যান। তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, "ঘটনাটা শুনলাম। তাঁকে জোর করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। সেটা যদি হয়ে থাকে তবে হাসপাতাল ঠিক করেনি।"

অন্যদিকে, উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য ইন্দ্রজিৎ ঘোষ অবশ্য হাসপাতালের গাফিলতির কথা মেনে নেন। তবে তিনি এও বলেন যে, "রোগীর চিকিৎসা এবং নিরাপত্তা দেওয়া হাসপাতালের কাজ। কিন্তু পুলিস পাহারা দিয়ে চিকিৎসা হয় না। হাসপাতালের নিরাপত্তায় ২৪টি সিসিটিভি বসানো হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা রয়েছেন, তারপরেও কী করে এই ধরনের ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হবে।" ওদিকে হুগলি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. রমা ভুঁইঞা জানিয়েছেন, "ঘটনায় তদন্ত করবে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি দল। কাল-ই সেই তদন্ত হবে। কোনও গাফিলতি ছিল কিনা, তা দেখা হবে। কোনও রোগীর এভাবে বাইরে যাওয়ার কথা না।"

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)

.