Panchayat Election 2023: পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ, তৃণমূল ছেড়ে সিপিএমে ৭০ পরিবার
Panchayat Election 2023: প্রার্থী দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরী। উনি দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। মানুষের জন্য অনেক কিছুই করেছেন। কিন্তু ওঁর দলের নেতারা পার্টিটা শেষ করে দিয়েছে। পার্টির বদনাম হয়ে গিয়েছে
অরূপ বসাক: মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষ হয়েছে। প্রাণ গিয়েছে বেশ কয়েকজনের। পাশাপাশি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নবজোয়ার কর্মসূচিতে যাই বলুন না কেন প্রার্থী দেওয়া নিয়ে দলের মধ্যে বহু জায়গায় অসন্তোষ চরমে। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারি, ইসলামপুরের বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী ও মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সেই ক্ষোভ যে ফাঁপা নয়ে তার দেধা মিলল জলপাইগুড়ির মাল ব্লকেও।
আরও পডুন-দুর্নীতি আর দুর্নীতি; মমতাদি আপনি নিজেকে সামলান, বোমা ফাটালেন ইসলামপুরের বিধায়ক
পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রার্থী দেওয়াকে কেন্দ্র করে মালবাজার মহকুমার মেটেলি ব্লকের মুন্সি ধুরা এলাকায় দলীয় কলহ চরমে উঠল। তারই জেরে বিধাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭০টি পরিবার যোগদান করল সিপিএমে। আজ ওইসব পরিবার লালঝান্ডা হতে তুলে নেন।
কী থেকে বিবাদ? মুন্সি ধুরা এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল নেতা মোসতু রহমান। তাঁর স্ত্রী মৌসুমী পারভিনকে এবার পঞ্চায়েত সমিতিতে টিকিট দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দল শেষ মুহূর্তে সেই টিকিট অন্য এক মহিলাকে দিয়ে দেয়। তারই জেরে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ফেটে পড়েন এলাকার মানুষজন। বৃহস্পতিবার এলাকার মোট ৭০টি পারিবার সিপিএমে যোগ দেন। ওইসব পরিবারে ভোটার সংখ্যা ৪০০ জন।
এদিন যোগদানকারীর হাতে দেলর পতাকা তুলে দেন সিপিএমের মেটেলির এরিয়া কমিটির সম্পাদক শফিউদ্দিন আহমেদ, সারা ভারত কৃষক সভার মেটেলি থানার সম্পাদক তথা জেলা পরিষদের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান, রবীন্দ্রনমাথ রায়, রুনু ওঁরাও, আশীষ রায়-সহ অন্যান্য নেত্রীবৃন্দ।
উল্লেখ্য, প্রার্থী দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরী। গতাকাল তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস থেকে আমাকে টেনে এনেছিলেন। আমি প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সির হাত ছেড়েছিলাম। উনি বলেছিলেন, করিমদা আপনি আসুন। আমার পার্টির সম্মান বাড়বে। উনি দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। মানুষের জন্য অনেক কিছুই করেছেন। কিন্তু ওঁর দলের নেতারা পার্টিটা শেষ করে দিয়েছে। পার্টির বদনাম হয়ে গিয়েছে। শুধু দুর্নীতি আর দুর্নীতি। লজ্জায় পড়ে যাচ্ছি। মমতা এর মধ্যে নেই। এখনও তিনি ক্লিন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তার আসপাশের লোকজন অনেক গোলমাল করে দিয়েছে। অনেক নেতা আমার কথা শুনে খেপে যাবেন। কিন্তু আপনারা মমতাকে বাঁচাতে পারলেন না। ইসলামপুর বিধানসভার যেসব পঞ্চায়েতগুলো রয়েছে তার জন্য নমিনেশন দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হল না। কানহাইয়ালাল সব নিয়ে নিয়েছে। ওদের অনেক টাকা। আমরা তো টাকা নেই।
নির্দল প্রার্থী দাঁড় করানো নিয়ে আব্দুল করিম চৌধুরী বলেন, এই লোকগুলো আমার জন্য অনেক কিছুই করেছে। এদের জন্য আমি ঘরে ঘরে যাব। বলব, এদের আপনারা জেতান। এরা জিতে এলে বোর্ড গড়বে। তৃণমূল গোটা জোলায় ঘোড়া কেনাবেচা করছে। এটা ঠিক নয়। আমাকে কেউ কিনতে পারেব না। কেউ ভয় দেখাতে পারবে না। পুলিসকেও বলেছি পক্ষপাতিত্ব করবেন না। বন্দুকবাজদের থামান। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়য়াকে বলব, আপনি শুধু দলের জন্য নন। আপনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। আমি চাইব ইসলামপুরে যেন কোনও গোলমাল না হয়।
টাকা দিয়ে টিকিট কেনার কথা গতকাল বলেছেন বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। করিম চৌধুরীর মুখেও সেই একই কথা। গতাকল তিনি বলেন, টিকিট পেতে দলকে টাকা দিতে হচ্ছে। মমতার হুইপ আগের মতো নেই। মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় করিম চৌধুরীকে জলে ফেলে দিয়েছেন। কিন্তু মমতাদি আপনি নিজেকে সামলান। বাংলার শুধু নয়, দেশের নাম করা নেত্রী আপনি। সারা বিশ্ব আপনার নাম জানে। আপনার জন্য পশ্চিমবাংলার কত মানুষ কাঁদছে। ইসলামপুরে ৪ লাখ, ৫লাখ করে টাকা দিতে হচ্ছে টিকিটের জন্য। মমতা জানেনও সব। কিন্তু অন্য লোকেদের হাতে ক্ষমতা চলে গেছে। আগের হুইপটা সামলান মমতা।