Panchayat Election 2023: তৃণমূলের সঙ্গে ২৫ বছরের সম্পর্ক ভেঙে বাম প্রার্থী মেদিনীপুরের চণ্ডী ঘোষ
ছিলেন ৯৮ সাল থেকে তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী। কিন্তু দলের টিকিট না পেয়ে এবারে তিনি মনোনয়ন জমা করলেন খোদ সিপিএম-এর প্রার্থী হয়ে। এই রকমই ঘটনা মেদিনীপুর সদরের কর্নগড় দশ নম্বর অঞ্চলের সুকুমার ঘোষ ওরফে চণ্ডী ঘোষের।
চম্পক দত্ত: দলের টিকিট না পেয়ে তৃণমূলের জেতা পঞ্চায়েত সদস্য এবার প্রার্থী CPIM- র। ‘এবারেও হান্ড্রেড পার্সেন্ট জিতবো’, জানালেন আশাবাদী চণ্ডী ঘোষ।
ছিলেন ৯৮ সাল থেকে তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী। কিন্তু দলের টিকিট না পেয়ে এবারে তিনি মনোনয়ন জমা করলেন খোদ সিপিএম-এর প্রার্থী হয়ে। এই রকমই ঘটনা মেদিনীপুর সদরের কর্নগড় দশ নম্বর অঞ্চলের সুকুমার ঘোষ ওরফে চণ্ডী ঘোষের।
ঘটনা প্রসঙ্গে বলা যায় ৯৮ সাল থেকে এই বছর পঞ্চাশের চণ্ডী ঘোষ থেকেছেন তৃণমূলে। থেকেছেন দিদির একনিষ্ঠ সাপোর্টার হিসেবে। মুখ্যমন্ত্রীর একাধিক কর্মকাণ্ডে তিনি যোগদান করেছেন।
আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023: ভাঙন অব্যাহত তৃণমূলে, বসিরহাটে কংগ্রেসে যোগ বহু মানুষের
কিন্তু ২০১৮ তে সেই চণ্ডী ঘোষকে কর্ণগড় ১০ নম্বর অঞ্চলের পঞ্চায়েত সদস্য হিসেবে মনোনীত করে দল। ভোটের নিরিখে জয়ী হন এবং তখন থেকেই তিনি পঞ্চায়েতের শাসক দলের সদস্য হিসেবেই কাজ করেন।
সম্প্রতি দিদির সুরক্ষা কবচ হিসেবে মেদিনীপুরের বিধায়ক অভিনেত্রী জুন মালিয়া তার ঘরে রাত্রিবাস করেছেন। খাওয়া-দাওয়া করেছেন এবং এক প্রস্থ আলোচনার পরে এলাকায় দলীয় সংগঠন বাড়াতে তার বাড়ি হাজির হয়েছেন।
কিন্তু তারপর পরেই ঘটে ব্যাঘাত। এবারে ২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের টিকিট না পেয়ে অবশেষে বামেদের হয়ে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন চণ্ডী ঘোষ। যিনি এক সময় স্বাস্থ্য সাথী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, যুবশ্রী এবং শিক্ষা বন্ধু সহ একাধিক প্রকল্প নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তেন তিনি এবার লাল ঝান্ডা নিয়ে প্রচার করছেন।
এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকায়। প্রশ্ন উঠছে রাতারাতি এই ভোল বদল কেন? কেনই বা এত ক্ষোভ দলের প্রতি। তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও এই বিষয়টিকে নিয়ে খুব গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসক শিবির।
আরও পড়ুন: Diamond Harbour: স্ত্রীকে উদ্ধার করতে গিয়ে ধুন্ধুমার, স্বামীকে কোপ প্রেমিকের
এদিন এক বক্তব্যে সুকুমার ঘোষ ওরফে চণ্ডী ঘোষ বলেন, ‘দীর্ঘদিন উন্নয়নের সঙ্গী হয়েছি। উন্নয়নের পাশে থেকেছি এবং নিজের টাকা খরচা করে এলাকার মানুষের বিপদে আপদে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারপরও এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে দল আমাকে সেই ভাবে সুযোগ দেয়নি। তাই উন্নয়নের নিরিখেই আমি বামেদের হয়ে মনোনয়ন জমা করলাম আজ। আমার দৃঢ় আশা আমি ১০০ শতাংশ ভোটে জয়ী হব। তবে যারা পুরনো সহকর্মী তাদের সঙ্গে অনেকদিন কাজ করেছি তাদের ছাড়তে একটু তো কষ্ট লাগছেই’।
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য শ্যাম পাত্র জানান, ‘নীতিগতভাবে বিরোধ থাকলেও চণ্ডী ঘোষের সঙ্গে আমাদের দলের ব্যক্তিগত সম্পর্ক কোনও দিনই খারাপ ছিল না। ও যখন এসে আমাদের বলে যে সে সিপিএমের হয়ে কাজ করতে চায় এবং প্রার্থী হতে চায় আমরা তাকে ওই এলাকায় প্রার্থী করি’।
যদিও এই বিষয়ে গুরুত্ব দিতে নারাজ মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া। তাকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা পুরনোদেরকে শ্রদ্ধা এবং প্রণাম জানাই। কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে এক ও একাধিক অভিযোগ রয়েছে এরই সঙ্গে যাদের সঙ্গে দলের কর্মীদের মনোমালিন্য রয়েছে তাদেরকে সরিয়ে আমরা নতুনদের জায়গা করে দিতে চেয়েছি। সেরকমই নির্দেশ রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে। তবে যিনি চলে গেছেন দলের থেকে তার জন্য দরজা বন্ধ এবং তাকে আমরা বাই বাই জানাই’।
শালবনী ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নেপাল সিংহ বলেন, ‘চণ্ডী ঘোষ সিপিএমের প্রার্থী হওয়াতে দলে কোনও প্রভাব পড়বে না। তবে ক্ষোভে আমাদের দল ছেড়েছে এটা আমি বিশ্বাস করি না। দল ছাড়ার পিছনে অন্য কোনও কারণ থাকতে পারে। তবে সবার গণতান্ত্রিক অধিকার আছে ভোটে দাঁড়ানোর’।