রোগীর কাটা হাত নিয়ে পালাল কুকুর! হাসপাতালে তুমুল বিক্ষোভ
রোগীর কাটা হাত জোড়া লাগানোর আগেই তা হাসপাতাল থেকে নিয়ে পালিয়ে গেল কুকুর। এমন ঘটনাকে অভূতপূর্ব বলছেন অনেকেই।
নারায়ণ সিংহ রায়: ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলেন এক রোগী এবং তার পরিবার। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর কাটা হাত খুবলে খেল কুকুর। রোগীর কাটা হাত জোড়া লাগানোর আগেই তা হাসপাতাল থেকে নিয়ে পালিয়ে গেল কুকুর। এমন ঘটনাকে অভূতপূর্ব বলছেন অনেকেই।
ঠিক কী ঘটেছে?
রবিবার রাতে একটি পার্কের সামনে বাইক দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন দুর্গাদাস কোলোনির বাসিন্দা সঞ্জয় সরকার(৩২)। তাঁকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই হাতে চলে অস্ত্রোপচার। বাদ যায় ডান হাতের কিছুটা অংশ। তবে ডাক্তারদের আশ্বাস ছিল দশ শতাংশ হলেও সেই হাত পুনরায় জোড়া লাগানোর সম্ভাবনা রয়েছে। বাদ দেওয়া সেই হাতের অংশ পরিবারের হাতে একটি প্লাস্টিকে মুড়ে তুলে দেওয়া হয় বলে দাবি হাসপাতালের।
পরিবারের তরফে বলা হয়েছে, সকালে রোগীর সিটি স্ক্যান করাতে নিয়ে যাওয়া হয়। ডান হাতটি একটি প্লাস্টিকের মধ্যে মুড়ে রাখা ছিল। পরিবারের লোকজন রোগীকে সিটি স্ক্যান করিয়ে ফেরার পর ওয়ার্ডে গেলে দেখতে পায় যে কাটা হাতটি নেই, এমনটাই অভিযোগ। সেই সময় ওই ওয়ার্ডে থাকা এক রোগী বলেন যে একটি কুকুর না কি সেই প্লাস্টিক দিয়ে মুড়ে রাখা হাতটি নিয়ে গেছে। এর পরেই রোগীর পরিবারের সদস্যরা ছাদের উপরে গিয়ে দেখেন যে কাটা হাতটি কুকুর খুবলে খাচ্ছে এবং অর্ধেকের বেশি অংশ খেয়ে ফেলেছে।
এরপরই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ায় মেডিকেল কলেজ চত্বরে। ওয়ার্ড থেকে বাদ যাওয়া হাতের অংশ কিভাবে কুকুর নিয়ে চলে যায় তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। জানা যায় আহত সঞ্জয় সরকার বাংলা পক্ষের সদস্য। বাংলা পক্ষের থেকে সুপার অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হয় সুপারকে। বিক্ষোভের জেরে গাফিলতিতে যে বা যারা জড়িত তাদের কঠোর শাস্তির আশ্বাস দেন মেডিকেল সুপার।
বাংলা পক্ষের থেকে আপ্পা দাস জানান , "মেডিকেল কলেজের চরম গাফিলতির ফলেই এই ধরনের ঘটনা। কি করে নীচ তলা থেকে একটি কুকুর ওয়ার্ডে ঢুকে হাতের একটি অংশ নিয়ে ছাদে চলে যায়। কোথায় সুরক্ষা ব্যবস্থা? বা সেই সময় যে নিরাপত্তারক্ষী ছিল তার ভুমিকা কি ছিল। সুষ্ঠ চিকিৎসা ব্যাবস্থার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের দাবি করছি কর্তৃপক্ষের কাছে৷ হাত চলে যাওযায় সে কর্ম ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। পরিবার চলবে কি প্রকারে।"
অন্যদিকে মেডিকেল কলেজ সুপার ডক্টর সঞ্জয় মল্লিক জানান , "ঘটনা যা ঘটেছে তার বিবরণ এই মুহূর্তেই দেওয়া সম্ভব নয়। রোগীটিকে রাতেই পুলিশ নিয়ে আসে। আমাদের ডাক্তাররা তার চিকিৎসা করে হাতটিকে সেই সময় বাদ দিয়ে রোগীর প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। তবে সেই হাতটি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তবে কিভাবে ওয়ার্ড থেকে সেই হাত কুকুর নিয়ে খুবকে খেল তা তদন্ত করে দেখা হবে৷ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তারাই যত দ্রুত সম্ভব রিপোর্ট পেশ করবে। সিসিটিভির সাহায্য নিয়ে তদন্ত করা হবে। যে বা যারা দোষী প্রমাণত হবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"