চুরুলিয়ার নজরুল অ্যাকাডেমি অধিগ্রহণ নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের

খুশি নজরুল প্রেমীরা। তাঁদের বক্তব্য, অধিগ্রহণ করার ফলে নজরুল অ্যাকাডেমির সম্পত্তি বাঁচানো সম্ভব হবে। 

Updated By: Dec 12, 2020, 06:47 PM IST
চুরুলিয়ার নজরুল অ্যাকাডেমি অধিগ্রহণ নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের

নিজস্ব প্রতিবেদন : নজরুল অ্য়াকাডেমি গঠিত হয়েছিল ১৯৫৮ সালের ১২ এপ্রিল। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সোসাইটি অ্যাক্টে তার রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল ১৯৬৬ সালের ৪ জুন। সেইসময় যাঁরা অ্য়াকাডেমিতে ছিলেন, তাঁদের বংশধর যাঁরা রয়েছেন, তাঁরাই নজরুল অ্য়াকাডেমির সমস্তরকম কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতেন। সারা বছর বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে কবি নজরুলকে স্মরণ করতেন এই অ্যাকাডেমির সদস্যরা। এর আগেও বহুবার সরকারের কাছে সাহায্য চেয়ে দ্বারস্থ হয়েছিল অ্য়াকাডেমি। এক-দুবার সাহায্য পাওয়াও গিয়েছিল। তবে সেভাবে আর অ্যাকাডেমি চালানো সম্ভব হচ্ছিল না। অ্যাকাডেমিতে একটি লাইব্রেরি, মিউজিয়াম, বেশকিছুটা জমি-জায়গা রয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম প্রকল্প সারা বছর ধরেই করে আসে অ্যাকাডেমি। কিন্তু সামগ্রিক কর্মকাণ্ডের খরচ আর বহন করতে পারছিল না নজরুল অ্যাকাডেমি। তাই দফায় দফায় রাজ্য সরকারকে চিঠি লিখে অধিগ্রহণের আর্জি জানায় অ্য়াকাডেমি। শেষমেশ চুরুলিয়ার নজরুল অ্যাকাডেমি অধিগ্রহণ করল নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়।

আসানসোলে অবস্থিত নজরুল ইউনিভার্সিটি। চুরুলিয়ায় এই ইউনিভার্সিটি করার জন্য আবেদন জানানো হলেও, সেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। পরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে নজরুল সরণীর উপর কাল্লা মোড়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় হয়। অ্য়াকাডেমির বারংবার আবেদনের প্রেক্ষিতে শেষপর্যন্ত রাজ্য সরকারের শিক্ষা দফতর নজরুল অ্যাকাডেমি অধিগ্রহণ করার কথা জানায় কাজী নজরুল ইউনিভার্সিটিকে। এরপরই চলতি মাসের ৮ ও ৯ তারিখে রেজিস্ট্রি করে নজরুল অ্য়াকাডেমিকে অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কাজী নজরুল ইউনিভার্সিটি।

রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে খুশি নজরুল প্রেমীরা। তাঁদের বক্তব্য, অধিগ্রহণ করার ফলে নজরুল অ্যাকাডেমির সম্পত্তি বাঁচানো সম্ভব হবে। কারণ মিউজিয়াম, লাইব্রেরিতে নজরুলের হাতে লেখা অসংখ্য চিঠি, তাঁর গান-বাজনার যন্ত্রাংশ, বই সহ প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে। পাশাপাশি জমি-জায়গাও রয়েছে। এখন জমি-জায়গা, সম্পত্তি সহ যাবতীয় যা কিছু আছে, সমস্ত কিছুই কাজী নজরুল ইউনিভার্সিটি দেখাশোনা করবে। ফলে আর কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অন্যদিকে কাজী নজরুল ইউনিভার্সিটির পক্ষে জানানো হয়েছে, তারা কবির ভিটে চুরুলিয়ায় বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম করতে পারবে। কারণ তাদের এখানে যে জায়গাটুকু রয়েছে, তাতে ইউনিভার্সিটির সমস্ত পরিকাঠামো করা অসম্ভব। তাই কবিতীর্থ  চুরুলিয়ায় তারা হোস্টেল করতে পারে। মিউজিয়াম ও লাইব্রেরি আরও ভাল করা সম্ভব হবে। এলাকায় উন্নয়ন করা হবে। আর জমি জায়গাতে ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন রকম দফতরের অফিস খোলা সম্ভব হবে।

স্থানীয় বাসিন্দারা চাইছেন সবার আগে লাইব্রেরি ও মিউজিয়ামে যে জিনিসপত্র রয়েছে, তার নিরাপত্তা বাড়ানো হোক। কারণ এতদিন গ্রামের মানুষ ও অ্যাকাডেমির সদস্যরা সকলে মিলে সেগুলো দেখাশোনা করতেন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল চুরির মত কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে অ্যাকাডেমিতে না ঘটে, কোনও জিনিস যাতে খোয়া না যায়, তাই নিরাপত্তা বাড়াক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এমনটাই জানিয়েছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন, পৌষ মেলা বন্ধে সিলমোহর, এবার শুধুই পৌষ উত্সব বিশ্বভারতীতে

.