Nadia Panchyat Pradhan Husband Shot Dead: ভরসন্ধেয় ঘিরে ধরে গুলি-বোমা, নওদায় নিহত তৃণমূল নেতা
বৃহস্পতিবার নওদায় একটি আবাসিক স্কুলের হোস্টেল ছেলের সঙ্গে দেখা করে ফেরার পথে তার উপরে হামলা চালায় দুস্কৃতীরা। নিহত তৃণমূল নেতার নাম মতিরুল ইসলাম
সোমা মাইতি ও অনুপ কুমার দাস: মুর্শিদাবাদের নওদায় এক তৃণমূল নেতাকে ঘিরে ধরে গুলি-বোমা হামলা। হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হল গুরুতর ওই নেতার। নিহত ওই তৃণমূল নেতা নদিয়ার করিমপুর ২ ব্লকের নারায়ণপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী ও তৃণমূলের মাইনোরিটি সেলের সভাপতি। বাড়ি করিমপুর ২ ব্লকের থানারপাড়া এলাকায়। বৃহস্পতিবার নওদায় একটি আবাসিক স্কুলের হোস্টেল ছেলের সঙ্গে দেখা করে ফেরার পথে তার উপরে হামলা চালায় দুস্কৃতীরা। নিহত তৃণমূল নেতার নাম মতিরুল ইসলাম(৪৫)।
বৃহস্পতিবার ছেলের সঙ্গে হোস্টেলে দেখা করে বাড়ি ফিরছিলেন মতিরুল। সেইসময় নওদার শিবতলা এলাকায় তার পথ আটকায় দুস্কৃতীরা। তাকে ঘিরে ধরে গুলি বোমা ছোড়া হয়। বোমার আঘাতে তাঁর দেহ ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। আহত মতিরুলকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে আনার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের তরফে এই খুনকে রাজনৈতিক বলেই দাবি করা হয়েছে। ঘটনার সময়ে মতিরুলের সঙ্গে ছিল তাঁর নিরাপত্তা রক্ষীরা। তাই এই খুনের পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করছে পরিবার। নিরাপত্তারক্ষী থাকার কারণে মনে করা হচ্ছে তাঁর প্রাণহানির একটা আশঙ্কা ছিল। পাশাপাশি, তাঁর গতিবিধির উপরে দুস্কৃতীরা নজর রাখছিল।
আরও পড়ুন-ঘানা বিরুদ্ধে খেলা ছিল অনিশ্চিত! কোন নতুন সমস্যায় জেরবার ছিলেন 'সি আর সেভেন'?
প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিসকে জানিয়েছে হামলাকারীদের সংখ্যা ছিল ৩-৪ জন। তারা সবাই বাইক নিয়ে এসেছিল। কোনওকিছু বুঝে ওঠার আগেই মতিরুলকে ঘিরে ধরে হামলা করা হয়। বোমাবাজির পরই এলাকা জনশূন্য হয়ে যায়। নিমেষের মধ্যেই কাজ সেরে এলাকা থেকে চম্পট দেয় দুস্কৃতীরা।
তৃণমূল নেতার মৃত্যুতে দলের বিধায়ক কল্লোল খাঁ বলেন, স্থানীয় বিধায়ক তাপস সাহা ফোন করে গোটা ঘটনা জানালেন। জানতে পারলাম ওষুধ কিনতে গিয়েছিল। ওই এলাকায় প্রত্যেকবারই ও ভালো কাজ করে দলকে জেতায়। পুলিসকে বলেছি, নিরপেক্ষ তদন্ত করে হামলাকারীদের গ্রেফতার করুন। এখন ওই হামলার পেছনে কোনও গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের বিষয় রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।
স্থানীয় বিধায়ক তাপস সাহা বলেন, ২০২১ সালে দিদি যখন আমাকে টিকিট দিলেন তেহট্ট বিধানসভায় তখন টিনা সাহা ভৌমিক নামে জেলা পরিষদের এক সদস্য সে বিজেপিকে ভোট দিতে বলে। মতি ছিল এলাকার জনপ্রিয় নেতা। রাতদিন পরিশ্রম করে। করিমপুর ২ নম্বর ব্লকের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতিও ছিল। আজ ও ছেলেকে দেখতে গিয়েছিল। ফেরার সময় চক্রান্ত করে ওকে মার্ডার করা হল। আগামী কিছু দিনের মধ্যে দেখবেন মিঠুও মার্ডার হচ্ছে। ওর স্ত্রীও প্রধান। অনেকদিন ধরে বলছি মতিরুলকে মার্ডার করা হবে। দলকে বারবার জানিয়েছি। কোনও ব্যবস্থা হয়নি। এরকম চললে এলাকার কেউ তৃণমূল কংগ্রেস করবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। দল কোনওরকম সাহায্য করছে না। আমাদের কথা কে শুনবে! দলের একাংশ টিনা সাহাকে মদত দেয়। আমার সন্দেহ বিজেপি, সিপিএম ও টিনা সাহার দিকে।
চুপ করে থাকেননি জেলা পরিষদ সদস্য টিনা সাহাও। তাঁর দাবি, 'আমি এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করি। কোন অধিকারে কোনও বিষয়ের উপর ভিত্তি করে এই মন্তব্য করতে পারেন? তাপস সাহা চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলেছিলেন। মতিরুল ইসলাম বিধায়কের কাছে ৫৬ লাখ টাকা পেতেন। দীর্ঘক্ষণ ধরেই টানাপোড়েন চলছিল। তারপর এই ঘটনা, প্রশাসন তদন্ত করুক। আসল দোষীদের সামনে আনুক'। কে 'আসল দোষী'? তৃণমূল জেলা পরিষদ সদস্যের মন্তব্য, 'সে বিধায়কও হতে পারে' !
ওই খুনের ঘটনা নিয়ে তৃণমূল সাংসদ আবু তাহের বলেন, খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। মতিরুলের বাড়ি নওদা সীমান্তে। ওর ছেলে মিশনে পড়ে। সেখানে ওকে খাবার দিতে এসেছিল। ফেরার পথে নদিয়া সীমান্তে জামালপুর নামে একটি গ্রাম রয়েছে। সেখানেই লুকিয়ে ছিল দুস্কৃতীরা। ওকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে, বোমা ছোড়া হয়। যারা এসে এলাকা অশান্ত করছে তাদের গ্রেফতার করতে বলেছি পুলিসকে। কে এর পেছনে রয়েছে তা এখন বুঝতে পারছি না। পুলিসকে বলেছি তদন্ত করতে। ঘটনার পেছনে আমাদের দলের নেতা হলেও ছাড়া পাবে না। কোনও দুস্কৃতীই এক পেছনে রয়েছে, কোনও দলীয় কোন্দল রয়েছে বলে মনে করছি না।