Monetary Fraud: দলিলের আঙুলের ছাপ থেকে জালিয়াতি! পুলিসি তৎপরতায় পাকড়াও ৪
আগামি ৩ মাসে অন্তত দু'কোটি টাকা প্রতারণার ছক ছিল দলটির।
নিজস্ব প্রতিবেদন: চারজন লোক এলাকার একটি বাড়িতে নতুন ভাড়া এসেছে। সে তো আসতেই পারে। কিন্তু তাদের আচরণ বেশ সন্দেহজনক লাগছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। তারা সারাদিন ঘর থেকে বেরোত না। শুধু রাতেই তাদের দেখা যেত। তারা হিন্দিতে কথা বলত। ক্রমশ বোঝা যাচ্ছিল তারা ভিন রাজ্য থেকে এসেছে। এলাকাবাসী একটু চিন্তিতই হয়ে পড়ে। তাদের এই উৎকণ্ঠার খবর কানে যায় পুলিসের। শেষমেশ গোপনসূত্রে খবর নেয় পুলিসও। আর তারপরই জালে পড়ে অভিযুক্তেরা।
কী ঘটেছিল?
চুঁচুড়া থানার পুলিসসূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ ফেব্রুয়ারি ব্যান্ডেল ডন বসকো স্কুলের বিপরীতে ছয় হাজার টাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নেয় অভিযুক্তেরা। অনলাইন ব্যবসা করে বলে জানিয়েছিল তারা। কিন্তু তারা উত্তরপ্রদেশ সরকারের জমি-বাড়ি বিক্রির ওয়েবসাইট থেকে (নিজেদের প্রয়োজনীয়) তথ্য সংগ্রহ করত বলে জানতে পারে পুলিস। সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্যান, আধার নম্বর এবং আঙুলের ছাপ জোগাড় করত। ফোটোশপ ব্যবহার করে সেগুলির নকল বানিয়ে নিত। এরপর 'পে ওয়ার্ল্ড অ্যাপে' অ্যাকাউন্ট তৈরি করে গ্রাহকদের ব্যাঙ্কের 'ডিটেল' সেখানে সংযোগ করে দিত। একজন গ্রাহকের কতগুলি অ্যাকাউন্ট আছে, সেগুলিতে কত টাকা আছে-- তা জেনে নিয়ে শেষমেশ সেই টাকা নিজেদের অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নিত। পরে এটিএম থেকে সেই টাকা তুলে নিত। এমনকি মৃত ব্যক্তির নামেও এই ধরনের অ্যাকাউন্ট তৈরি করত এরা।
অভিনব কায়দায় সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের দলিলে থাকা আঙুলের ছাপ নকল করে উত্তর প্রদেশের এই গ্যাং এক বড় ধরনের আর্থিক প্রতারণাচক্র ফেঁদেছিল। অথচ, এই ভাবে যে নিজেদের টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে, গ্রাহকেরা তা জানতেই পারতেন না! সম্প্রতি চুঁচুড়া থানার পুলিস জানতে পারে, অভিযুক্তরা ব্যান্ডেল চার্চ-সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন এটিএম থেকে টাকা তুলছে। এর পরই রবিবার সকালে পুলিস সেই বাড়িতে তল্লাশি চালায়। সেখান থেকে টাকা, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন পায় পুলিস। সেগুলিতে বহু মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ডিটেলস, ব্যক্তিগত তথ্য এবং দলিলের তথ্য জমা থাকতে দেখে পুলিস। বেশ কিছু নকল পরিচয়পত্র, নকল আঙুলের ছাপের রাবার স্ট্যাম্প, এটিএম কার্ড, ব্যাঙ্কের পাশ বই উদ্ধার হয়।
পুলিস খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, গত কয়েকদিনে চার লাখ টাকা প্রতারণা করেছে অভিযুক্তরা। যা তথ্য উদ্ধার হয়েছে তা থেকে পুলিসের অনুমান, আগামি তিন মাসে অন্তত দু'কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা ছিল গ্যাংটির। উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং পশ্চিমবঙ্গে সক্রিয় রয়েছে গ্যাং-টি। এর পরই পুলিসের জালে ধরা পড়ে ৪ অভিযুক্ত-- প্রদীপ সাহানি, সদানন্দ শ্রীবাস্তব (মনু), মনোজ কুমার, শিবম গুপ্তা। জানা গিয়েছে, এরা উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর ও কুশীনগর জেলার বাসিন্দা। ধৃতদের রবিবার চুঁচুড়া আদালতে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: Foot Over Bridge: রাস্তা নেই, রেললাইনই যাতায়াতের পথ; ঝুঁকি নিয়েই নিত্য পারাপার!