সাপের সঙ্গে সেলফি? কেউটের ছোবলে মৃত হলদিবাড়ির যুবক

হলদিবাড়ি থেকে জলপাইগুড়ি নিয়ে যাবার পথেই মৃত্যু হয় অনিল রায়ের, এমনটাই জানিয়েছেন হলদিবাড়ি থানার আইসি প্রবীণ প্রধান। শুক্রবার দেহ ময়নাতদন্তর পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

Updated By: May 4, 2018, 05:58 PM IST
সাপের সঙ্গে সেলফি? কেউটের ছোবলে মৃত হলদিবাড়ির যুবক
তখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন অনিল রায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন: কাল কেউটে ছোবল দিতেই সাপটাকে বজ্রমুষ্ঠিতে পাকড়ে ধরেছিল ছেলেটি। তারপর ৪০ মিনিট নাগাড়ে লড়াই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেষরক্ষা হল না। এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পথে প্রাণ হারালেন হলদিবাড়ির যুবক অনিল রায়। তবে গোটা ঘটনাই না কি সেলফি তুলতে গিয়ে ঘটেছে বলে জানাচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশ।

প্রথমে জানা যায়, কাজ সেরে বৃহস্পতিবার পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন হলদিবাড়ি বটেরডাঙা এলাকার বাসিন্দা অনিল রায়। অন্ধকার রাস্তা ধরে ফেরার সময় তাঁর হাতে ছোবোল মারে বিশাল বড় কেউটে সাপ। সহ্গে সঙ্গে ক্ষত নিয়েই সাপটিকে চেপে ধরে চিত্কার করতে থাকেন অনিল। যুবকের চিত্কার শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এলাকাবাসী। প্রত্যক্ষদর্শী নরেশ রায় জানান, চিতকার শুনে এসে এই কান্ড দেখার পর খবর দেওয়া হয় পুলিসকে। এরপর থানা থেকে অ্যাম্বুলেন্স পাঠালে তাঁকে নিকটবর্তী হলদিবাড়ি হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন, সেলফির 'মারণ' নেশা! চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে পড়ল যুবক

কিন্তু, প্রতিবেশি রবি দাস জানাচ্ছেন, সাপ ধরে সেল্ফি তোলার পর সাপের মাথায় বাড়ি দেয় অনিল রায়। আর এরপরে কেউটে সাপ ছোবল দেয় তাকে। জানা যাচ্ছে, গত কয়েক বছর ধরে স্বঘোষিত সর্প বিশারদ হিসাবে দাবি করা অনিল রায় এলাকায় সাপ ধরতেন। গত পরশুদিনও সাপ ধরে জংগলে ছেড়ে দেন তিনি।

তাঁদের কথায়, বৃহস্পতিবার রাতে একটি কেউটে সাপকে টোটা রিক্সা চাপা দেয়। সেই খবর পেয়েই দোকান ফেলে হলদিবাড়ি বটেরডাঙা এলাকা থেকে বেলতলিতে  গিয়ে সাপটিকে ধরেন অনিল রায়।  এরপরে সাপ গলায় পেচিয়ে সেল্ফি তুলতে থাকেন তিনি। এই যুবক সেসময় অপ্রকৃতিস্থ ছিলেন বলেও মনে করা হচ্ছে। এলাকাবাসীরা তাঁকে সাপটি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি কোনো কথা না শুনে মোবাইল দিয়ে বিভিন্ন ভাবে বার বার ছবি তুলতে থাকেন এই স্বঘোষিত সর্প বিশারদ। ঐ সময় সাপটির মাথায় আঘাত লাগে এবং তারপরই না কি সাপটি ছোবোল মারে অনিলকে।

আরও পড়ুন, নতুন জটে পঞ্চায়েত; দিতে হবে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, একজনকে সরকারি চাকরি

হলদিবাড়ি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরও অনিলের অবস্থা আশংকাজনক থাকায় রাতেই তাঁকে জলপাইগুড়ি সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তির জন্য সুপারিশ করা হয়। কিন্তু হলদিবাড়ি থেকে জলপাইগুড়ি নিয়ে যাবার পথেই মৃত্যু হয় অনিল রায়ের, এমনটাই জানিয়েছেন হলদিবাড়ি থানার আইসি প্রবীণ প্রধান। শুক্রবার দেহ ময়নাতদন্তর পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। আরও পড়ুন- গোটা পরিবারকে গিলে খেয়েছে বিষাক্ত মাশরুম, একা বাড়ি ফিরলেন চেতন রাই

.