"এই দল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৈরি করতে চাননি"

বুধবার শারীরিক কারণ দেখিয়ে রাজগঞ্জের বিডিও-র কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেন শিখা। তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় দলকে এলাকায় পরিচিতি করিয়ে ছিলেন তিনি।

Updated By: Dec 28, 2017, 01:45 PM IST
"এই দল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৈরি করতে চাননি"

নিজস্ব প্রতিনিধি: দিদি যে আদর্শ নিয়ে দল তৈরী করেছিলেন, সেই দলকে নোংরা করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে আসা কর্মীরা। টাকার নেশায় তারা দলে নাম মাত্র থেকে কলুষিত করছে তৃণমূলকে। আর তাদের মদত দিচ্ছে দলের নেতা ও মন্ত্রীরা। দল ও পঞ্চায়েত সমিতি থেকে পদত্যাগ করে এমনটাই জানালেন ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির দাপুটে তৃণমূল নেত্রী তথা রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিখা চ্যাটার্জি। প্রত্যক্ষভাবে না হলেও এদিন পরোক্ষে দলবল নিয়ে বিজেপিতে যোগদানের ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি, এমনটাই খবর।

সদলবল শিখা চ্যাটার্জি।

বুধবার শারীরিক কারণ দেখিয়ে রাজগঞ্জের বিডিও-র কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেন শিখা। সেই চিঠির কপি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও তৃণমূলের জেলা সভাপতির কাছেও পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু, পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের বিধানসভা কেন্দ্র ডাবগ্রাম ও ফুলবাড়ি এলাকার এই দাপুটে তৃণমূল নেত্রী কেন দল ছাড়লেন?

দল থেকে স্বেচ্ছাবসর ও দলছেড়ে বেড়িয়ে যাওয়া প্রবীণ নেতাদের পক্ষে এদিন সাওয়াল করেছেন শিখা চ্যাটার্জি। অনেকের মতেই, এই এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে মূল কাণ্ডারি এই নেত্রী। তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় দলকে এলাকায় পরিচিতি করিয়ে ছিলেন তিনি। তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন দল থেকেই তৃণমূলে যোগদান করে অনেকেই। আর এদের মধ্যে বেশীর ভাগই রয়েছে জমি মাফিয়া বা জমি দালালরা, এমনটাই অভিযোগ তাঁর। নতুনরা দলের প্রবীণ নেতৃত্বের কোন কথাতেই কর্নপাত করে না বলেও অভিযোগ। সম্প্রতি নদীর গতিপথ আটকে একটি বাড়ী নির্মাণকে কেন্দ্র করে এলাকায় বিতর্ক তৈরি হয়। বিতর্কিত প্রকল্প এলাকা দেখতে ঘটনা স্থলে পৌছান পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিখা দেবী। এরপরই নির্মান কার্যের বিরোধিতা করায় তাঁকে বেধরক মারধর করে স্থানীয় কিছু জমির দালাল। এই ঘটনায় ভক্তিনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিস। কিন্তু, শিখা চ্যাটার্জির অভিযোগ, দল ওই দালালদের বহিষ্কার না করে জামিনের ব্যবস্থা করে দেয়। এর ফলেই তিনি অত্যন্ত অপমানিত বোধ করেন এবং দল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন বলে জানা যাচ্ছে।

নেত্রীর আরও অভিযোগ, বিভিন্ন দলকে ডুবিয়ে যারা তৃণমূলে এসেছেন তাঁদেরকেই প্রাধান্য দিচ্ছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রবীণ ও দলের কাজ থেকে যারা বসে গিয়েছেন তাঁদের কোনও গুরুত্বই দিচ্ছে না নেতৃত্ব। শুধু টাকাকেই প্রাধান্য দিচ্ছে তাঁরা। এই দল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৈরি করতে চাননি। আর তাই মনোকষ্ট হলেও দলের মধ্যে এই নোংরামি সহ্য করতে পারছেন না তিনি এবং সেজন্যই পদত্যাগ করলেন বলে জানিয়েছেন শিখা চ্যাটার্জি।

.