Jalpaiguri: হাত-পা ছাড়াই চলছে জীবন যুদ্ধের লড়াই!
Jalpaiguri: পা দিয়েই তিনি পুজো দেওয়া, খাওয়া দাওয়া এমনকি পুজোও দেন, সমস্ত কাজই করেন তিনি। সরকারি সাহায্যের আসায় সুভদ্রা।
প্রদ্যুৎ দাস: জীবনে বেঁচে থাকার আরো এক নাম হল চেষ্টা। তাই বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন জলপাইগুড়ির প্রতিবন্ধী মহিলা সুভদ্রা দেবি। দুই হাত নেই, পা থাকতেও নেই বললেই চলে। পা দিয়েই ধরালো বটি দিয়ে সুপারির খোল ছাড়িয়ে চলছেন কিছু উপার্জনের আসায়। পা দিয়েই তিনি পুজো দেওয়া, খাওয়া-দাওয়া সমস্ত কাজই করেন তিনি। কিন্তু এইভাবে কতদিন? অভাবের সংসারে সরকারি সাহায্যের আসায় সুভদ্রা। পালিয়ে যাওয়াটা জীবন নয়, জীবনের আরেক নাম হল চেষ্টা। এমনই এক উদাহরণ সেট করে দিলেন জলপাইগুড়ির সাধু পাড়ার সুভদ্রা।
আরও পড়ুন: Air India Pilot: মাত্র ২৫-এই শেষ মহিলা পাইলটের উড়ান, গ্রেফতার প্রেমিক...
জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের সাধু পাড়ার ৩৫ বছরের বাসিন্দা সুভদ্রা নন্দী। হাত দুটোই নেই। পা রয়েছে ঠিকি কিন্তু তাতে কোনো রকমে চলাফেরা। বাড়ি ছাড়া কোথাও বাইরে বের হওয়া তার কাছে বড়োই দুস্কর। জীবনের এমন পরিস্থিতিতে তবুও সে বসে থাকেননি। সেই দুটো পা কে কাজে লাগিয়ে স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করছে সাধু পাড়ার সুভদ্রা।
সুভদ্রার পরিবারে মা এবং দাদা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই অভাবের সংসার। কোনো রকমে দিন - যাপন করে চলছে তারা। সুযোগ-সুবিধা বলতে ওই প্রতিবন্ধকতার সরকারি ভাতা যা মাত্র এক হাজার টাকা। কিন্তু তাতে কি পেট আর চলে। তাই প্রতিবন্ধকতা থাকার সত্বেও তা দূর করে মা এবং দাদার সঙ্গে জীবন সংগ্রামে নেমে পরেছে সুভদ্রা। হাত নেই তো কি হয়েছে! পা দিয়ে রোজ সুপারির খোলসা ছাড়িয়ে দেয় সুভদ্রা। এক হাজারটা সুপারির খোলসা ছাড়িয়ে দেওয়ার জন্য পারিশ্রমিক বাবদ ৫০ টি টাকা পান। এছাড়াও বাড়ির ঘর ঝাড় দেওয়া থেকে শুরু করে অনান্যও কাজ সুভদ্রা নিজের ঘাড়েই নিয়েছে। সুভদ্রা কে এলাকার সকলেই ভালোবাসেন। এভাবে তিনি সকলের প্রিয় হয়ে উঠেছেন। প্রতিবেশীদের সাথে তিনি অনুষ্ঠান বিভিন্ন অনুষ্ঠান অন্যান্য যেকোনো কাজেই যাতায়াত রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে সুভদ্রা বলেন, 'চেষ্টা করলে সব হবে। অনান্যদের প্রসঙ্গেও তার বক্তব্য, যার ব্যাথা সেই বুঝে। কষ্ট করলেও তাকে চলতে হচ্ছে।' সুভদ্রার পরিবারের সদস্যরাও জানান, 'ঘর ঝাড় দেওয়া থেকে শুরু করে সুপারি ছোলা সব কিছুই পা দিয়ে কাজ করে সুভদ্রা।' সুভদ্রার কথায়, ভাতা ছাড়াও সরকারি অনান্য সুযোগ সুবিধার জন্য বলা হয়েছে কিন্তু তা মেলেনি। তারা প্রত্যেকেই সুভদ্রা দিকে সরকারি দৃষ্টি আকর্ষণের দাবি জানিয়েছে। .
আরও পড়ুন: Uttar Pradesh: 'মানসিক ভারসাম্যহীন' তো! পারভার্ট যুবকের লালসায় ফালাফালা একরত্তি...
এই প্রসঙ্গে অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের সাথে যোগাযোগ করা হলে রাজেশ মন্ডল জানান, 'বিষয়টি এভাবে জানা ছিল না। আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। খুব শীঘ্রই খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব।' সব মিলিয়ে, পরিস্থিতি তো অজুহাত মাত্র, ইচ্ছা থাকলে স্রোতের বিপরীতেও সাঁতার কাটা যে যায় তা ফের প্রমাণ করলেন জলপাইগুড়ির অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের মেয়ে সুভদ্রা নন্দী।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)