Kolkata Doctor Rape And Murder Case: আন্দোলনকে গলা টিপে মারার চেষ্টা, মিথ্যে বলছেন মুখ্যমন্ত্রী : নির্যাতিতার পরিবার
R G Kar Incident: শুক্রবার নবান্ন থেকে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, 'অনেকে বলছেন আমি টাকার কথা বলেছি। আমি মোটেই বলিনি'। এই দাবির পরেই নির্যাতিতার মা-কাকিমা বলেন, 'আন্দোলনকে গলা টিপে মারার চেষ্টা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন মিথ্যে কথা বলেছেন। টাকার অফার দেওয়া হয়েছিল'।
বরুণ সেনগুপ্ত: '১ মাস তো হয়ে গেল। আজ ৯ তারিখ। এক মাস এক দিন। ৩১-এ মাস গিয়েছে। আমি অনুরোধ করব, পুজোতে ফিরে আসুন, উৎসবে ফিরে আসুন। আর সিবিআইকে বলব তাড়াতাড়ি বিচারের ব্যবস্থা করুন। এটা তো এখন আপনাদের হাতে আমাদের হাতে নেই।' শুক্রবার নবান্ন থেকে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফিরতে অনুরোধ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এখানেই শেষ নয়। এদিনই মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন যে তিনি যেদিন নির্যাতিতার বাড়িতে যান, সেখানে কোনও টাকার অফার করিনি।
আরও পড়ুন- Sandip Ghosh: আর কত? সম্পত্তির পর সম্পত্তি সন্দীপের, এবার বহরমপুরে...
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, 'অনেকে বলছেন আমি টাকার কথা বলেছি। আমি মোটেই বলিনি। আমাকে প্রমাণ দেখাক, কোথায় আমি টাকার কথা বলেছি। মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে। এগুলি অপপ্রচার, চক্রান্ত। মৃত্যুর বিকল্প টাকা নয়।'
মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পর নির্যাতিতার মা ও কাকিমা বলেন, 'আন্দোলনকে গলা টিপে মারার চেষ্টা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন মিথ্যে কথা বলেছেন। টাকার অফার দেওয়া হয়েছিল। কম্পেনসেশন ছাড়াও ডিসি নর্থ সেই টাকার অফার করেছিলেন। উনি প্রমাণ চাইছেন? সেই সময় আমাদের মেয়ে মারা গিয়েছে। আমরা মেয়ের শোকে বিহ্বল। সেই সময় মেয়ের শোক ছেড়ে টাকা অফার দেওয়ার ছবি তুলব? উনি বলছেন একমাস হয়ে গিয়েছে, এবার আন্দোলন বন্ধ করতে। মানুষকে পুজোয় ফিরতে বলছেন। মানুষ যদি উৎসবে ফিরতে চায়, ফিরবে এতে আমার কিছু বলার নেই। আমার বাড়িও দুর্গাপুজো হত। আর হবে না'
আরও পড়ুন- #MeToo: 'রাতে মদ পেটে পড়লেই শয়তান হয়ে যায়...', 'সংস্কারী' অলোকনাথের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিনেত্রী
আরজি কর হাসপাতালে খুন হওয়া তরুণী চিকিত্সকের মৃত্যুর ন্য়ায়বিচারের দাবিতে তোলপাড় কলকাতা। উত্তর থেকে দক্ষিণে শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে বের হওয়া মিছিলে দাবি উঠল বিচার চাই। রবিবার ধর্মতলায় ডাক্তারদের মিছিলে ও রাসবিহারীতে বিভিন্ন স্কুল কলেজের প্রাক্তনীদের মিছিলে, পাটুলিতে ও যাদবপুরে মেয়েদের রাতদখলের মিছিলে যোগ দিয়ে নির্যাতিতার বাবা-মা বললেন আর কোনও বাবা-মাকে যেন এভাবে সন্তানহারা না হতে হয়।
রবিবার এক মিছিলে নির্যাতিতার বাবা বলেন, 'গত ৮ অগাস্ট রাতে ওর সঙ্গে আমাদের কথা হয়। বলে বাইরে থেকে খাবার আনা হয়েছে। টানা ডিউটি করতে হচ্ছিল ওকে। পরদিন সকাল ১১টায় জানতে পারি আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। যেখানে ও মানুষকে বাঁচাতে গিয়েছিল সেখানেই তার জীবন চলে যায়। পরে আমরা জানতে পারি বিষয়টি তা নয়। ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটে আরজি কর হাসপাতালে। যে ১৫-২০ মিনিট বিশ্রাম পায় না তাকে ৭-৮ ঘণ্টা কোনও জুনিয়র, হাসপাতালের কোনও স্টাফ বা গ্রুপ ডি কর্মচারী কারও প্রয়োজন হল না? এই প্রশ্নের উত্তর চেয়ে গত ১ মাস ধরে ঘুরছি। কেউ আমাকে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছে না। আজ এত লোকের জমায়েত দেখে বুঝতে পারছি বিচার আমরা পাবই। এত লোকের চাওয়া কখনও মিথ্যে হবে না। যারা এই বিচারের জন্য রাস্তায় নেমেছেন তাদের আমি আমার পরিবারের সদস্য হিসবে মনে করছি। আশা করছি যতদিন আমার মেয়ে বিচার না পাবে ততদিন তারা তাদের এই উদ্যোগ চালিয়ে যাবেন। আমি আমার মেয়ের বিচার পাব'।
অন্যদিকে, নির্যাতিতার মা বলেন, 'আমি এক সন্তানহারা মা। একমাস হল আমার সন্তাকে হারিয়ে ফেলেছি। তার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। আর সেই স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়েই চরম লাঞ্চনার শিকার হয়ে তার মৃত্যু হল। আপনারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আপনাদের আমি আত্মীয় বলে মনে করি। আমার অনুরোধ যতদিন না আমার মেয়ে বিচার পায় ততদিন আপনারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে যান। আপনারা প্রতিবাদটা চালিয়ে যান। প্রশাসন আমার সঙ্গে কোনও রকম সাহায্য করেনি। এমন একটা ক্রাইম হয়েছে যা ঢাকা দেওয়ার জন্য ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য সব চেষ্টা হয়েছে। আমি চাই স্বাস্থ্য় দফতরে যে ঘুঘুর বাসা তৈরি হয়েছে তা ভাঙা হোক। যারা প্রমাণ লোপাটের সঙ্গে জড়িত তারা যেন সাজা পায়। আর যেন কোনও মাকে সন্তানহারা না হতে হয়'।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)