প্রতিশোধ নিতেই কি গুলি তৃণমূল কাউন্সিলরকে? বজবজকাণ্ডে পুলিসের হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য
তদন্তে জানা গিয়েছে, ২০১৮-র দুর্গাপুজোয় প্রতিমা ভাসানের সময় গুলি চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয় মিঠুন টিকাদার। পরে জামিনে মুক্ত হন তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রতিহিংসা নাকি প্রতিশোধ? কেন বজবজের কাউন্সিলর মিঠুন টিকাদেরর ওপর হামলা হল? এই প্রশ্নের খোঁজে উঠে আসছে নানা তথ্য।
তদন্তে জানা গিয়েছে, ২০১৮-র দুর্গাপুজোয় প্রতিমা ভাসানের সময় গুলি চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয় মিঠুন টিকাদার। পরে জামিনে মুক্ত হন তিনি। সেই ঘটনার জেরেই হামলা কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ২০১৮র ২২ অক্টোবর বজবজের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিমা বিসর্জনের সময় মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করে সময় গুলিবিদ্ধ হয় রাজীব দাস নামে এক যুবক। আর তাতেই নাম জড়িয়েছিল মিঠুন টিকাদারের।
আরও পড়ুন: পরিকল্পনা করেই কি গুলি তৃণমূল কাউন্সিলরকে, তদন্তে পুলিস
নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিত্ বিশ্বাসের পর আবারও টার্গেট তৃণমূল নেতা। এবার দুষ্কৃতি নিশানায় বজবজের ২০ নম্বর ওর্য়াডের কাউন্সিলর মিঠুন টিকাদার। তাঁর বুকে ও পেটে গুলি লেগেছে। সোমবার সন্ধেয় বজবজের চিত্তগঞ্জ পার্টি অফিসে বসেছিলেন মিঠুন। আচমকাই তাঁর ওপর চড়াও হয়ে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় দুই দুষ্কৃতী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, একটি গুলি তাঁর বুকে লাগে, অপরটি পেটে। বোমাবাজিও চলে বলে অভিযোগ। সেই স্প্লিনটারেই জখম কাউন্সিলর। স্থানীয়রাই কাউন্সিলরকে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু, অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতায় আনা হয়।
পুলিস জানতে পেরেছে, মহম্মদ কায়েশ ও কমল খান নামে দুই দুষ্কৃতী ঘটনার সঙ্গে জড়িত । তবে গাঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত দুজনেই। অভিযুক্ত মহম্মদ কায়েশ স্থানীয় বাসিন্দা। কামাল খান টিটাগড়ের বাসিন্দা। প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিস জানতে পেরেছে, হেঁটেই পার্টি অফিসে ঢোকে ওই দু’জন। তারপর এলোপাথাড়ি গুলি চালায় তারা ।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, সোমবার বিকেলে বজবজের চড়িয়ালে একটি ফ্লাইওভারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে গিয়েছিলেন কাউন্সিলর মিঠুন ঠিকাদার। সেখান থেকে সন্ধে নাগাদ কালো গাড়িতে করে বজবজের চিত্রগঞ্জ হপ্তাবাজারের পার্টি অফিসে আসেন তিনি। ঘটনার পর থেকেই তাঁর চারচাকার গাড়িটি পার্টি অফিসের সামনে পরে রয়েছে।
কাউন্সিলরকে দেখতে রাতেই হাসপাতালে পৌছে যান পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বজবজকাণ্ডে নাম না করে বিজেপির বিরুদ্ধেই আঙুল তুলছে শাসকদল। ফিরহাদ হাকিমের অভিযোগ, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জেরেই হামলা। রাজনৈতিকভাবে পেরে না উঠে এই ধরনের জঘন্যকাণ্ড ঘটাচ্ছেন রাজ্যের বিরোধীরা।
আরও পড়ুন: কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিত্ বিশ্বাস খুনে গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত অভিজিত্ পুণ্ডারি
অবাধ দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যে এখনও থমথমে গোটা এলাকা। রাতের পর সকালেও বন্ধ দোকান-পাট। বোমা-গুলির শব্দে এখনও আতঙ্কে বাসিন্দারা। যদিও ক্যামেরার সামনে কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না।
তবে ভরসন্ধ্যায় ঘণ্টাখানেকের নিখুঁত অপারেশন কীভাবে? ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের। তবে কি চড়িয়ালে থেকে ফেরার পথেই কাউন্সিলরের গাড়ি ফলো করছিল দুষ্কৃতীরা? সন্দেহ উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিস। গোয়েন্দাদের অনুমান আগে থেকেই কাউন্সিলর কোন রুটে যাবেন, কখন যাবেন এবং কখন ফিরবেন পুরোটাই দুষ্কৃতীদের জানা ছিল। সেক্ষেত্রে কাউন্সিলরের ঘনিষ্ট কেউই পিছন থেকে অপারেশনের ঘুটি সাজিয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিস। । আরও ক্লু পেতে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিস। ঘটনার পরেই এলাকায় যান জেলার পুলিস সুপার সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। পার্টি অফিস ঘুরে দেখেন তাঁরা। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। রাতভর রুটমার্চ করছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।ও খতিয়ে দেখেন পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।