Duttapukur Blast: দত্তপুকুরে বিস্ফোরণের পিছনে ২ কারণ! কেন এত ব্যাপক অভিঘাত?
দত্তপুকুর বিস্ফোরণকাণ্ডে ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯। ২১ ঘণ্টা পরেও উদ্ধার ছিন্নভিন্ন হাত-মুণ্ডু! ইতিমধ্যেই বিস্ফোরণকাণ্ডে প্রথম গ্রেফতার করেছে পুলিস।
পিয়ালি মিত্র: রবিবারের দুপুর। আচমকা বিকট আওয়াজ। ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে দত্তপুকুরের মোচপোল গ্রাম। বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ! বিস্ফোরণের তীব্রতা এতই ছিল যে, গোটা একটা বাড়ি ধূলিসাৎ হয়ে যায়। উড়ে যায় আশপাশের একাধিক বাড়ির ছাদ। কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় গোটা এলাকা। ঝলসে যায় ওই বাজি কারখানার শ্রমিকরা। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে দেহ। এমনকি দেহাংশ ছিটকে কয়েকশো মিটার দূরে বাড়ির ছাদে-উঠোনে গিয়েও পড়েছে! কিন্তু কী কারণে এত ব্যাপক অভিঘাত?
তদন্তে নেমে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, একসঙ্গে বিপুল পরিমাণে শব্দবাজি মজুত করা ছিল। স্টোন চিপস, বারুদ ও রাসায়নিক দিয়ে তৈরি হত এই বাজি। সেই বাজি-ই বিপুল পরিমাণে একসঙ্গে মজুত করা ছিল। এখন কী কারণে বিস্ফোরণ ঘটে? এর পিছনে ২টি কারণ থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এক, চাপ থেকে বিস্ফোরণ। বিপুল পরিমাণ মজুত করা বাজি থেকে চাপে বিস্ফোরণ। দুই, ঘর্ষণ থেকে হয়ে থাকতে পারে বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে গতকালের পর আজ ফের ঘটনাস্থলে যাবে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দল।
দত্তপুকুর বিস্ফোরণকাণ্ডে ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯। ২১ ঘণ্টা পরেও দত্তপুকুরকাণ্ডে উদ্ধার ছিন্নভিন্ন হাত-মুণ্ডু! ঘটনাস্থল থেকে ৮০ মিটারের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে হাত। এক প্রতিবেশীর বাঁশ বাগানের পাশে পড়ে মুণ্ডু। পুকুরে ভাসছে দেহ। আহতের মধ্যে রয়েছে ৮ বছরের এক বালকও। ইতিমধ্যেই বিস্ফোরণকাণ্ডে প্রথম গ্রেফতার করেছে পুলিস। বিস্ফোরণের ঘটনায় নীলগঞ্জ থেকে সফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিস। ধৃত সফিকুল ইসলাম কেরামতের পার্টনার হিসেবেই পরিচিত। কেরামতের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ইনি। এর পাশাপাশি, মোট ৪ জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৮৬, ৩০৪, ৩০৮, ৩৪, ৯বি দ্য এক্সপ্লোসিভ অ্যাক্ট, ২৪/২৬ ফায়ার সার্ভিস অ্যাক্টে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
রবিবার দুপুরে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। তারপর থেকে রাতভরও তল্লাশি চলে দত্তপুকুরের মোচপোল গ্রামে। তল্লাশি উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণে বাজি তৈরির মশলা। একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে পাওয়া যায় বেশ কয়েকটি বস্তা। তাকে সাদা পাউডার পায় পুলিস। এরপর পুলিস শেখ শাহির হোসেন নামে আরেক ব্যক্তির গোডাউনে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ বাজি দেখতে পায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ৩ বছর ধরে ওই গোডাউনে বাজি মজুত করা হচ্ছে। রোজ-ই গাড়ি করে বাজি নিয়ে যাওয়া হয়।
ব্যবধান মাস তিনেক। রবির দুপুরে এগরার ভয়াবহ স্মৃতি ফিরে আসে দত্তপুকুরে! ফের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ! বিস্ফোরণের ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি তুলেছেন বিরোধীরা। ওদিকে মালদা থেকে ফিরে রাতেই ঘটনাস্থলে যান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ। বিস্ফোরণস্থল ঘুরে দেখে রাজ্যপাল জানান, 'কার্যকরী ব্য়বস্থা নেওয়া হবে।' ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাতেই চলছিল এই বাজির কারবার। চলতি বছর মে মাসে একবার গ্রেফতারও হয়েছিল কেরামত। কিন্তু জামিন পেয়ে ফিরে দত্তপুকুরের মোচাপোলে ফের বাজি কারখানা চালু করে বিস্ফোরণকাণ্ডে অভিযুক্ত কেরামত।
আরও পড়ুন, Duttapukur Blast: 'কারা বোমাবাজি করেছে, পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে'